শব্দদূষণ আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন না হওয়ায়, পরিবেশ রক্ষায় নেতিবাচক প্রভাব

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৪

 

।। এম আর‍ আয়াজ রবি ।।

আমরা জানি শব্দ এক ধরনের শক্তি, যা বাতাসের তরঙ্গের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। মনের ভাব প্রকাশের আদি মাধ্যম এই শব্দ। এই শব্দ সহ্য সীমা অতিক্রম করে যখন অতিরিক্ত হয়ে মানুষের কর্ণকোঠরে অযাচিত দৈহিক ও মানসিক যন্ত্রণার সৃষ্টি করে তখন তাকে শব্দ দূষণ বলে।
অন্যভাবে বলা যায়, মানুষের শ্রবণ সক্ষমতার অতিরিক্ত, তীব্র, তীক্ষ্ম, অবাঞ্ছিত, কর্কশ বা অস্বস্তিকর শব্দ যা মানুষের শারীরবৃত্তীয় স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা দেয় এবং শরীর ও মনের উপর নানাবিধ বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে তাকে শব্দ দূষণ বলে বিবেচনা করা হয়। মানুষ সাধারণত ২০-২০,০০০ হার্টজ সীমার মধ্যে শব্দ শুনতে পায়। এই সীমার বাইরে অতিরিক্ত জোরে শব্দ হলেই তা শব্দ দূষণ হিসেবে পরিগনিত হয়।
শব্দ দূষণ এক ধরনের মারাত্মক পরিবেশ দূষণ। আমাদের সঠিক ধারণার অভাবে এই দূষণের মাত্রা দিন দিন বাড়ছে। অনেক পরিবেশবিদ বাংলাদেশে শব্দ দূষণের বর্তমান পর্যায়কে ‘শব্দ সন্ত্রাস’ বলে অভিহিত করেছেন।

যা দেখতে চাই না, তা না দেখার জন্য চাইলেই চোখ বন্ধ করে রাখা যায়। যা বলতে চাই না, তা না বলার জন্য চাইলে মুখও বন্ধ করে রাখা যায়। কিন্তু যা শুনতে চাই না, ইয়ারফোন গুঁজে বা কানে তুলো দিয়েও তা শোনা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া অতটা সহজ নয়। তাই অযাচিত শব্দ দুষণের ফলে মানুষ যাত্রাপথে শারীরবৃত্তীয় নানারুপ মারাত্মক হুমকীর সম্মুখীন হচ্ছে। অনেকক্ষেত্রে আমরা তা বুঝতেই পারি না। শব্দ দুষণ রোধে দেশে প্রচলিত আইন যেমন রয়েছে, তেমনি পরিবেশ রক্ষার জন্য নানাবিধ আইন রয়েছে। কিন্তু আইন থাকলেও বাস্তবে তার প্রয়োগ হয় না বললেই চলে।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দূষণ ও পরিবেশগত মৃত্যুর ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বাংলাদেশে পরিবেশ দূষণজনিত অসুস্থতার কারণে প্রতি বছর প্রায় ২৬ শতাংশ মানুষের মৃত্যু হয়, যেখানে বিশ্বব্যাপী এই হার ১৬ শতাংশ। আমেরিকান হার্ট এসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, শব্দের মাত্রা প্রতি ১০ ডেসিবেল বৃদ্ধিতে যেকোনো বয়সের মানুষের স্ট্রোকের ঝুঁকি ১৪ ভাগ করে বৃদ্ধি পায়। তবে তা ৬৫ বছরের বেশি বয়সের মানুষের ক্ষেত্রে ২৭ ভাগ পর্যন্ত হতে পারে।

হু (বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা)’র মতে, ৬০ ডেসিবেলের অধিক শব্দ যদি দীর্ঘসময় ধরে থাকে তাহলে সাময়িক বধিরতা আর ১০০ ডেসিবেলের বেশি হলে স্থায়ী বধিরতা হতে পারে। একটি ব্যস্ত সড়কে সাধারণত ৭০ কিংবা ৮০ ডেসিবেল মাত্রার শব্দ তৈরি হয়। বিধিমালা অনুযায়ী আবাসিক এলাকায় রাত নটা থেকে ভোর ছটা পর্যন্ত শব্দের মাত্রা ৪৫ ডেসিবেল এবং দিনের অন্য সময়ে ৫৫ ডেসিবেল অতিক্রম করতে পারবে না। বাণিজ্যিক এলাকায় তা যথাক্রমে ৬০ ও ৭০ ডেসিবেল। সেখানে রাতে ৪০ ও দিনে ৫০ ডেসিবেল শব্দ মাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া আছে। যা সহনীয় মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি ফলে শব্দ দূষণ এখন শব্দ সন্ত্রাসে পরিণত হয়েছে। এ দূষণের প্রধান উৎস বাস, ট্রাক, প্রাইভেট কার, টেম্পো, অটো রিক্সা, মোটরসাইকেল সহ বিভিন্ন যানবাহনের হাইড্রলিক হর্ন। ইদানীং কিছু মোটরসাইকেল চালক আইনের তোয়াক্কা না করে ক্রমাগত হর্ণ বাজিয়ে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালিয়ে পথ চলে। এতে শব্দ দূষণ তো বটেই পথচারীরা বিভ্রান্ত, আতঙ্কিত হন এবং দুর্ঘটনা ঘটে। এমনকি এক শ্রেণির প্রাইভেট কার চালকদের অহেতুক, অকারণ বিরামহীন হর্ণ বাজানো একটি নেশা কিংবা চালকদের হাম্বড়া ভাবের অনাকাংখিত ঔদ্ধত্য প্রকাশ! যা ছোট শিশু, বয়স্ক, অসুস্থ ব্যক্তিবর্গ সহ বসবাসযোগ্য নগরী ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বজুড়ে শুধু বিনোদনের জন্য যে মাত্রার শব্দদূষণের মধ্যে ১২-৩৫ বছর বয়সী কিশোর-তরুণেরা থাকেন, তাতে ১১০ কোটি তরুণ বধির হওয়ার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছেন। আর ২০১৮ সালে বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশের পরিবেশ অধিদপ্তরের এক জরিপ অনুযায়ী, মাত্রাতিরিক্ত শব্দ দেশের প্রায় ১২ শতাংশ মানুষের শ্রবণশক্তি কমিয়ে দিয়েছে।

অথচ, দেশে একটি শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধি (২০০৬) রয়েছে। কিন্তু সেই বিধিমালায় এলাকাভিত্তিক শব্দের মানমাত্রা কত, তা না মানলে শাস্তির বিধান কী, তা কয়জন নাগরিক জানেন, সেটি একটি বিরাট প্রশ্ন। কোনো গবেষণা ছাড়াই বলা যায়, সাধারণ নাগরিক এসব জানেন না। না জানার অন্যতম কারণ হলো, আইনটির কাগুজে রূপ আছে, বাস্তবায়নের দৃষ্টান্ত নেই।

বহু বছর আগে কার্ল মার্ক্স বলেছিলেন, আইন প্রণীত হয় শাসকের স্বার্থে শোষিতের ওপর তা প্রয়োগের জন্য। এ ক্ষেত্রে মার্ক্সের কথা শতভাগ প্রাসঙ্গিক। শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধির (২০০৬) ২ (ঘ)-তে বলা হচ্ছে, প্রতিরক্ষা, পুলিশ বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষের দাপ্তরিক কাজ সম্পাদনকালে এই বিধিমালা প্রযোজ্য হবে না। অর্থাৎ ভিআইপি বহনকারী গাড়ির সামনে পেছনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পিলে চমকানো শব্দে চলা গাড়িগুলোকে শব্দদূষণের দায় থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বলা বাহুল্য, শব্দদূষণের ক্ষেত্রে সরকারি যানই আমাদের দেশে এগিয়ে।
আমরা এখনো ভাবতে পারি না, হর্ন না দিয়েও গাড়ি চালানো যায়। পৃথিবীর অনেক দেশে প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে জোরে গান বাজানোর শব্দ এলে, যাঁরা তা শুনতে পান এবং বিরক্ত হন, তাঁরা পুলিশে খবর দেন। আমরা এখনো লাউড স্পিকারে পাড়া কাঁপিয়ে ‘মিউজিক’ না বাজালে গায়েহলুদই হয় না বলে মনে করি। তাতে অন্যের ঘুমের বারোটা বাজুক।

অন্যদিকে গ্রামে গঞ্জে ইসলামীক জলসা, সভা সমাবেশ, বিনোদনের নামে বিভিন্ন সংস্কৃতিক চর্চা মানুষের প্রাত্যহিক জীবন যাত্রাকে দারুণভাবে বাধাগ্রস্থ করছে। অনেকক্ষেত্রে মহাসড়কের মোড়ে মোড়ে মাইক বাজিয়ে উচ্চস্বরে গভীর রাত অবধি মসজিদের নামে টাকা তোলার প্রতিযোগিতা আমরা দেখতে পেলেও, যতটুকু জানি- ইসলাম এভাবে মসজিদের নামে চাদা উঠানোর উপর কড়া বিধি নিষেধ রয়েছে। তা সত্ত্বেও মানুষ ধর্মীয় কাজ মনে করে দেদারসে তা করে যাচ্ছে।
টিভি, রেডিও, টেপ রেকর্ডার, মিউজিক সিস্টেম (ডিজে) এর মতো সরঞ্জাম থেকে উৎপন্ন তীব্র শব্দ ও চিৎকারের কারণে শব্দ দূষণ হচ্ছে। এ ছাড়াও বিবাহ, মেলা, পার্টিতে ব্যবহৃত লাউড স্পিকার এবং আতশবাজির ব্যবহারও শব্দ দূষণ করে থাকে। পশুপাখির শব্দ, রাজনৈতিক সভা, সমাবেশ, মিছিল-মিটিং, হাটবাজারসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান হতে শব্দ দূষণ ঘটে। এ ছাড়াও ভিআইপি গাড়ির অপ্রয়োজনীয় হর্নের ব্যবহার শব্দ দূষণের কারণ হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে ব্যক্তিগত গাড়িতেও ইমার্জেন্সি সাইরেন বাজানোর প্রবণতা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

শহর ও গ্রামাঞ্চলে সংস্কৃতি চর্চার নামে অপসংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে গভীর রাত অবধি উচ্চস্বরে গান, বাজনা, নাচের ব্যবস্থা করে শিশু, বৃদ্ধ, রোগী ও পরীক্ষার্থীদের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে।
তা ছাড়া আবাসিক-অনাবাসিক এলাকানির্বিশেষে জেনারেটর চালানোকেও শব্দদূষণের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। উপরন্তু, এলাকাভিত্তিক শব্দের মানমাত্রার তালিকাজুড়ে কোন এলাকায় রাতে ও দিনে কত ডেসিবেল পর্যন্ত শব্দ অনুমোদিত, তার কিছুই যে বাস্তবে অনুসরণ করা হয় না, তা পরিবেশ অধিদপ্তরের অজানা নয়।
শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধির (২০০৬) ১৮ (২)-এর মতে, শব্দদূষণ সৃষ্টিকারী ব্যক্তিকে এক মাসের কারাদণ্ড কিংবা পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদানের যে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে, তা কতটুকু বাস্তবসম্মত বা শব্দদূষণ রোধে কার্যকর? হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহারকারী পরিবহনগুলোর মালিক-চালক উভয়ের কাছেই এসব জরিমানা নিছক ছেলেমানুষী ব্যাপার মাত্র। শব্দদূষণ মায়ের গর্ভস্থ সন্তানের শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধিকেও যেখানে ব্যাহত করতে পারে, সেখানে আমরা একে ‘এ আর এমন কী’ বা ‘অতি সাধারণ’ একটি ব্যাপার হিসেবে ধরে নিয়েছি।
বাংলাদেশের সংবিধানের ৩২নং অনুচ্ছেদ জীবনের অধিকারকে মৌলিক অধিকার হিসেবে নিশ্চিত করেছে। এ অনুচ্ছেদে জীবনের অধিকার শুধু টিকে থাকাকে বোঝায় না, বরং মানসম্মত জীবনের নিশ্চয়তা দেয়। এ থেকে বলা যায়, যদি কোনো ব্যক্তি শব্দ দূষণের প্রভাবে তৎক্ষণাৎ বা দীর্ঘ মেয়াদি ক্ষতিগ্রস্ত হন বা তার স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হয়, তাহলে সংবিধানের আলোকে উচ্চ শব্দের বিরুদ্ধে প্রতিকার পাওয়া সম্ভব।
পরিবেশ রক্ষা আইন-১৯৯৫ এর ২০ ধারায় শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা মোতাবেক এলাকাভেদে শব্দের মাত্রা নির্দিষ্ট করে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ মালা-২০০৬ প্রণয়ন করা হয়। এই বিধিমালায় দিন ও রাতকে বিবেচনা করে আবাসিক এলাকা, নীরব এলাকা, মিশ্র এলাকা, বাণিজ্যিক এলাকা এবং শিল্প এলাকায় শব্দের মাত্রা নির্ধারণ করা হয়। একই বিধান দ্য এনভায়রনমেন্টাল কনজারভেশন-১৯৯৭ এর ৪ শিডিউলে বলা হয়েছে। শিডিউল ৫ অনুযায়ী যানবাহনের শব্দের মাত্রাও সুনির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর ৪৬ ধারার ৩-এ বলা হয়েছে, পরিবেশ দূষণকারী এমন কোনো যন্ত্র বা যন্ত্রাংশ মোটরযানে ব্যবহার করা যাবে না, যেমন হর্ন বা উচ্চ শব্দের ইঞ্জিন। ধারা ৪৬ এর ৪-এ আরও বলা হয়েছে, কোনো ত্রুটিপূর্ণ, ঝুঁকিপূর্ণ, নিষিদ্ধ বা বিধিনিষেধ আরোপকৃত কোনো মোটরযান সড়ক বা মহাসড়কে চালানোর অনুমতি দেয়া যাবে না।

অতিরিক্ত শব্দযুক্ত পরিবেশ (সেটি হতে পারে যানবাহনের, পটকা ও আতশবাজির, জোরে গান বাজানোর, নির্মাণস্থলের মিক্সচার মেশিন, এমনকি জোরে শব্দ করে কথা বলা, ইত্যাদি) একটি শিশুকে বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বধির হওয়ার পথে নিয়ে যায়। শিশুরা হয়ে উঠে অমনোযোগী ও বিকারগ্রস্ত। এর প্রভাবে দুশ্চিন্তা, নিদ্রাহীনতা, উচ্চ রক্তচাপ, ফুসফুসজনিত জটিলতা, হৃদ্‌রোগ, মস্তিষ্ক বিকৃতি, স্মরণশক্তি কমে যাওয়া, এমনকি হার্ট অ্যাটাক পর্যন্ত হতে পারে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ প্রকাশিত জরিপের তথ্যে দেখা যায়, দেশের মোট জনসংখ্যার ২ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ মানুষ কানে কম শোনার সমস্যায় ভুগছে।
শব্দ দূষণের বর্তমান মাত্রা খুবই উদ্বেগজনক। এটি একটি জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। কিন্তু আমাদের অসচেতনতার কারণে, আমরা প্রায়ই বলি যে এটি সমাধান করা সম্ভব নয়। কিন্তু এই সমস্যাগুলো মানবসৃষ্ট। একটু সচেতন হলেই এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এ জন্য আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও মানুষের প্রতি সহনশীল হতে হবে। অযথা হর্ন বাজানোর দরকার নেই, হাইড্রোলিক হর্ন এড়িয়ে চলুন, ধর্মীয় জলসা, সভা ও মাহফিলে গভীর রাত অবধি উচ্চস্বরে মাইক বাজানো, সামাজিক অনুষ্ঠানে উচ্চস্বরে গান বা যন্ত্র বাজানো থেকে বিরত থাকুন। নির্মাণ কাজে শব্দের সীমা বজায় রাখুন। আমাদের সচেতনতা ও আচরণগত পরিবর্তন শব্দ দূষণ কমাতে সহযোগিতা করতে পারে।

[লেখক: কলামিস্ট, সভাপতি-বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) উখিয়া উপজেলা শাখা।]