কোমরের জোর না থাকলে শত তাবিজ-কবজ দিয়ে কিচ্ছুই হবে না!

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: এপ্রিল ৫, ২০২৪

(প্লিজ, বেয়াদবি মাফ করবেন) চট্টগ্রামের একটি ওয়াজ মাহফিলে হুজুরের মুখে শুনেছিলাম ” কোমরের জোর না থাকলে শত তাবিজ-কবজ দিয়ে কিচ্ছুই হবে না!”

আমরা সবাই পল্লীবিদ্যুতের চৌদ্দগোষ্টী উদ্ধারের তালে আছি কিন্তু ভেবে দেখি না, পল্লীবিদ্যুতের চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ কী? এই গ্রীস্ম মৌসুমে উখিয়া উপজেলা জনপদের চাহিদা হচ্ছে প্রায় ৩২ মেগা ওয়াট তার বিপরীতে সরবরাহ হচ্ছে ১০ থেকে ১২ মেগাওয়াট!! চাহিদার তিন ভাগের ১ ভাগ বরাদ্দ নিয়ে উখিয়া পল্লী বিদ্যুতের শ্যাম রাখি না কুল রাখি অবস্থ”!!
মোট বরাদ্দের একটি অংশ ভিআইপি লাইন হয়ে প্রশাসনিক দফতর, হাসপাতাল, বড় বড় হোটেল-মোটেল-রিসোর্ট, রাজনীতিবিদ ও জনপ্রতিনিধিদের প্রাসাদ, কটেজ, বাড়িতে সরবরাহ করতে গলাধঘর্ম হয়ে যায়, অন্যদিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প, চোরাই সাপ্লাই, সিস্টেম লজসহ নানাবিধ চোরাকারবারে অনেকাংশ বিলীন হয়ে যায়! তাই উখিয়া অঞ্চলে পল্লীবিদ্যুতের নজিরবিহীন লোডশেডিং নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনার একটা অংশ হয়েই আছে।!
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, সারাদেশের চিত্র প্রায়ই তথৈবচ! এর মুল কারন হচ্ছে, দেশের বিদ্যুতের মোট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহের স্বল্পতা। তা কেন হচ্ছে সেই এক বিরাট ইতিহাস!

অনুন্নত দেশের তকমা থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে দেশের সার্বিক অবস্থা। জাতিসংঘে ঘোষিত ‘মিলিনিয়াম লক্ষ্যমাত্রা অর্জন’ করে বাংলাদেশ -একটি অনন্য নিদর্শন স্থাপন করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় যুগসই উন্নয়ন ধারণা বা ‘সাস্টেইন্যাবল ডেভেলপমেন্ট গোল’র সূচকগুলো অর্জনে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের বিদ্যুৎ খাতের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের পরিবর্তে কুইক রেন্টাল পদ্ধতির মাধ্যমে জোড়াতালি দিয়ে দেশের বাইর ও ভিতর থেকে বিদ্যুৎ এনে দেশের চাহিদা ও যোগানকে ইতিবাচক রুপে রুপলাভ করতে গিয়ে ‘বেইসিক’ কাজ তথা কাজের কাজ তেমন কিছু হয়নি- সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না!!

স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে, কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট জিনিসটা কী?

কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট মূলত ভাড়ায় নেওয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এগুলো মূলত ডিজেল ভিত্তিক হয়ে থাকে যার জন্য অনেক ব্যয়বহুল হয় এগুলো।

বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে যখন প্রথম ক্ষমতায় আসে, সে সময় তাদের অন্যতম প্রধান এজেন্ডা ছিল বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো এবং লোডশেডিং থেকে মানুষকে মুক্তি দেয়া। সেসময় এটি ছিল অন্যতম রাজনৈতিক ইস্যুও।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত ১৫ বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদনে এই সফলতার বড় অংশটি এসেছে আমদানিকৃত তরল জ্বালানি নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা থেকে, যেগুলো বিদ্যুতের সঙ্কট মোকাবেলায় কুইক-রেন্টাল নামে বিশেষ ব্যবস্থায় স্থাপন করা হয়েছিল।

কিন্তু বিদ্যুৎ উৎপাদনের এই ব্যবস্থাকে দীর্ঘ মেয়াদে টেকসই বলে মনে করেন না বিশেষজ্ঞদের অনেকেই। এটাই আজকে হাড়ে হাড়ে প্রমাণিত হতে চলছে। শীতের শেষে গরমকাল শুরুর প্রারম্ভে দেশব্যাপী চলছে ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের একটি পবিত্র সিয়াম সাধনার মাস। সারা বছরে এ মাসটি মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ মাস। কারণ এ মাসেই পবিত্র কোরআন নাযিল হয়েছে, রহমত, বরকত ও নাযাতের মাস এটি। এ মাসেই আছে ফযিলতপূর্ণ ‘লাইলাতুল কদর’ বা কদরের রাত যেটাকে বলা হয় ‘ লাইলাতুল কাদরু হাইরুম মিন আল ফেসার’ অর্থাৎ হাজার বছরের চেয়ে উত্তম মাস। তাই এ মাসে সেহেরি, ইফতার ও তারাবি নামাযে ধর্মপ্রাণ মুসলমান মশগুল থাকেন। কিন্তু অত্যন্ত দু:খের ব্যাপার হচ্ছে এই রমাদান মাসের প্রায় পুরো সময়ই বিদ্যুতের ভেল্কিবাজিতে সাধারণ মানুষ চরম অস্বস্তিতে! অন্তত সেহরি, ইফতার ও তারাবি নামাযের সময় ধর্মপ্রাণ মুসলমান নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পেলে সারাদিনের বিদ্যুৎবিহীন অবস্থাকে মানুষ কিছুটা ইজিভাবে নিত।কিন্তু বিদ্যুতের চরম অরাজকতায় মানুষ চরম ক্ষুব্ধ। কিন্তু বিদ্যুৎ ব্যবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তন মানুষ কোনভাবেই দেখছে না বলেই সাধারণ মানুষের মনে চরম হতাশা, পুঞ্জীভূত ক্ষোভ ও সরকারের ব্যর্থতার আঙ্গুল উঠিয়ে রীতিমতো জিগীর তুলছে!

বিদ্যুৎখাতে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে রেন্টাল-কুইক রেন্টালের মাধ্যমে। রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালাতে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, অধিকাংশ কেন্দ্রের মালিকানার সঙ্গে সরকারি দলের প্রভাবশালী নেতা আর মন্ত্রী-এমপি জড়িত থাকায় সরকার তাদের কাছে একদিকে বেশি দামে তেল কিনে কম দামে বিক্রি করে টাকা গচ্চা দিচ্ছে। অপরদিকে, রেন্টালদের কাছ থেকে বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনে তা গ্রাহকের কাছে কম দামে বিক্রি করে রাজস্ব হারাচ্ছে। এ ছাড়া ভর্তুকির নামে ছাড় করা অর্থ পিডিবির নামে ঋণ হিসাবে দেখিয়েও প্রতি বছর শ’ শ’ কোটি টাকার বেশি গচ্চা দিচ্ছে সরকার। বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের সঙ্গে জড়িত বিশেষ ব্যক্তিবর্গকে সুবিধা দিতে গিয়ে, তাদের লাভের ব্যবস্থা করতে গিয়ে বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় এত বেশি বেড়ে গেছে। যার দায় বইতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। বিদ্যুৎখাতে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে রেন্টাল-কুইক রেন্টালের মাধ্যমে। বাতিল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বসিয়ে তার মাধ্যমে শ’ শ’ কোটি টাকা হাতানো হয়েছে রেন্টালে। বিদেশের ব্যবহৃত, অতি পুরনো বিদ্যুৎ কেন্দ্র এনে বসিয়ে দেয়া হয়েছে। পুরনো বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সমস্যা হচ্ছে এগুলো তেল খরচ করে বেশি, সেই তুলনায় বিদ্যুৎ দেয় অনেক কম। খুবই খরুচে এবং এ কারণেই ক্ষতিকর। রেন্টালে যে পুরনো যন্ত্রপাতি আসছে এটা সরকারের কর্তাব্যক্তিরা স্বীকারও করেছেন বেশ কয়েকবার।

বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে যখন প্রথম ক্ষমতায় আসে, সে সময় তাদের অন্যতম প্রধান এজেন্ডা ছিল বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো এবং লোডশেডিং থেকে মানুষকে মুক্তি দেয়া। সেসময় এটি অন্যতম রাজনৈতিক ইস্যুও ছিলো। ফলে বিদ্যুৎ সংকট মোকাবিলায় বিশেষ ব্যবস্থায় আমদানিকৃত তরল জ্বালানি নির্ভর রেন্টাল-কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করে সরকার। বিদ্যুৎ উৎপাদনের এই ব্যবস্থা দীর্ঘ মেয়াদে টেকসই না হওয়া ও ব্যাপক ব্যয়বহুল হওয়ায় বিশেষজ্ঞরা এর বিরোধিতা করেন। তবে সরকার সাময়িক সমাধান হিসেবে রেন্টাল- কুইক রেন্টাল চালু করেছিলো। অন্যদিকে একটি টেকসই ও নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিলো- নিজস্ব সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে অন্তত বছর তিনেক সময় লাগবে, সংকট উত্তরণে সেই মেয়াদের জন্য ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। তবে সরকারের ১৫ বছর পেরিয়ে গেলেও ভাড়াভিত্তিক ব্যবস্থা থেকে সরকার সরে তো যায়ইনি বরং দফায় দফায় এসব রেন্টাল-কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। বেড়েছে এ ধরনের ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংখ্যাও। ফলে বিদ্যুতের দামও গত ১৫ বছরে কয়েকগুণ বেড়েছে। সরকার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের মালিকানায় থাকা এসব কেন্দ্র থেকে চড়া দামে বিদ্যুৎ কিনে বিপুল অংকের টাকা লোকসান দিচ্ছে পিডিবি। প্রতিবছরই এই প্রতিষ্ঠান ৪ থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা লোকসান দিচ্ছে। ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির লোকসানের মোট পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫৫ হাজার কোটি টাকা।

১৫ বছরে বিদ্যুৎ খাতে সরকার কতটা ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ খরচ করল। পিডিবির হিসাব বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০০৮-০৯ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত ১৫ বছরে রেন্টাল-কুইক রেন্টাল ও আইপিপিগুলোর জন্য ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করা হয় প্রায় ৮৯ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা। অর্থাৎ অলমোস্ট তিনটি পদ্মা সেতুর নির্মাণব্যয়ের সমান অর্থ গেছে এ খাতে। যদিও এ সময় কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্রেরই সক্ষমতার পূর্ণ ব্যবহার হয়নি। এমনকি কোনো কোনো বছর সক্ষমতার অর্ধেকও ব্যবহার হয়নি। অথচ বসিয়ে রেখেই প্রতি বছরই ক্যাপাসিটি চার্জের পুরোটা পরিশোধ করা হয়।

দফায় দফায় বিদ্যুৎ বিল বাড়িয়ে জনগণের কাছ থেকেই এই লোকসান উসুল করা হচ্ছে বলে বিশ্লেষকরা অভিযোগ করেছেন। নভেম্বরে আবারও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে বিতরণ কোম্পানিগুলো। সর্বশেষ গত ৩০ ডিসেম্বর মন্ত্রিপরিষদের সভায় এই মর্মে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, বছরে যতবার ইচ্ছা বিদ্যুতের দাম পরিবর্তন করা যাবে। এব্যাপারে আইনও সংশোধন করা হয়েছে।
তবে রেন্টাল, কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো টিকিয়ে রেখে দাম বাড়ানের প্রস্তাবকে অযৌক্তিক বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, এসব কেন্দ্র বন্ধ হলে নতুন করে আর বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না। মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাবের পর ২২ ডিসেম্বর কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ক্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সরকারি বিদ্যুৎ সেবার বিভিন্ন পর্যায়ে বছরে অন্তত ১০ হাজার ৫৪৯ কোটি টাকা অযৌক্তিকভাবে ব্যয় হচ্ছে। ওই ব্যয় সমন্বয় না করে মূল্য পরিবর্তনের যে কোনো উদ্যোগে তাদের আপত্তি রয়েছে। ক্যাব নেতারা বলেছেন, ইতোমধ্যেই তারা উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণ পর্যায়ে বিভিন্ন ‘অযৌক্তিক ব্যয়ের’ একটি তালিকা নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের কাছে দিয়েছেন। বিদ্যুতের দাম বাড়াতে উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণ কোম্পানিগুলোর আবেদনের ওপর ইতোমধ্যে গণশুনানিও শেষ করেছে বিইআরসি। গত ৩ ডিসেম্বর শুনানি শেষ হওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী আগামী তিন মাসের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। তবে পিডিবিসহ সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলো জানুয়ারি থেকেই বর্ধিত মূল্য কার্যকরের কথা বলেছে। গত ২৮ নভেম্বর গণশুনানি শুরুর প্রথম দিন থেকেই সেখানে অংশ নিয়ে বিদ্যুৎখাতে নানা অনিয়ম, অপচয়, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তোলেন ক্যাবসহ বিভিন্ন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। ওই শুনানিতে রেন্টাল-কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিষয়ে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা এসেছে। চাহিদার চেয়ে উৎপাদন সক্ষমতা বেশি হওয়ায় রেন্টাল, কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো টিকিয়ে রাখার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শুনানিতে অংশগ্রহণকারীরা। তারা বলেছেন, রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বন্ধ হলে বিদ্যুতের দাম আর বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না। রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি দিয়ে সরকার বছরে হাজার হাজার কোটি টাকার ক্যাপাসিটি চার্জ দিচ্ছে। অবিলম্বে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দেয়ার দাবি জানিয়ে তারা বলেছেন, বেশি দামের তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো এখন আর দরকার নেই। এগুলো বন্ধ হলে বিদ্যুতের দাম আর বাড়ানোর দরকার পড়বে না।
বিশ্লেষকরা বলেন, ২০০৯-১০ সালে আপাত-সংকট কাটাতেই সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে কুইক রেন্টাল কেন্দ্রগুলো চালু করেছিল। উৎপাদন ব্যয়ের চেয়ে অনেক বেশি দাম দিয়ে সরকার তাদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনেছে। কিন্তু বর্তমানে যেখানে চাহিদার চেয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন সক্ষমতা বেশি, সেখানে কুইক রেন্টাল কেন্দ্রগুলো টিকিয়ে রাখার কোনো যুক্তি নেই।

শিরোনামে যে কথাটার প্রতি ঈঙ্গিত দেবার চেষ্টা করছিলাম-হুজুরের সেই বিখ্যাত উক্তির মতো, দেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার সামগ্রিক উন্নতি না করে, বিদ্যুৎ উৎপাদনের অবকাঠামোর উন্নতি না করে, শুধুমাত্র কুইক রেন্টালের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মৌলিক অবকাঠামো ধ্বংস করে দেশের চাহিদার বিপরীতে বিদ্যুৎ সরবরাহের চিন্তা করা, হুজুরের সেই উক্তির মতো ‘কোমরের জোর না থাকলে তাবিজ কবজে কী কোন লাভ হবে” কথাটির প্রতিধ্বনি বলে মনে হচ্ছে!! ধন্যবাদ সবাইকে।
( লেখক: কলামিষ্ট, পরিবেশ ও মানবাধিকার কর্মী)