বঙ্গবন্দ্বুর ভাষ্কর্য্যের বিরোধীতাকারী মামুনুল হককে প্রতিরোধে চট্রগ্রামের পথে পথে অবস্থান নিয়েছিলো ছাত্রলীগ যুবলীগ

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৭, ২০২০

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ বন্ধের দাবি তুলে বির্তকের জন্ম দেওয়া হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে ‌‍চট্টগ্রামের মাঠিতে ‘ঠেকানোর’ ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল আগেই। ঘোষণা মতে ‘প্রতিরোধ’ করতে নগরীর অক্সিজেন, বিমান বন্দর সড়ক ও হাটহাজারী সড়কে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে ছাত্রলীগ যুবলীগের নেতাকর্মীরা। যদিও বা শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে সড়কপথে মামুনুল হক হাটহাজারী মাদ্রাসায় এসে পৌঁছান।

শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) দুপুর ২টা থেকে অক্সিজেন মোড় চত্বরে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আরশেদুল আলম বাচ্চুর নেতৃত্বে শতাধিক ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী সড়কে অবস্থান নেন। এসময় তারা বিক্ষোভ মিছিল করে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।

পরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আরশেদুল আলম বাচ্চু বলেন, ‘‌সকাল থেকে জিইসি মোড়, দুই নম্বর গেট ও দুপর থেকে অক্সিজেন মোড় চত্বরে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন। এই ধর্ম ব্যবসায়ী মামুনুল হক চিহ্নিত জামায়াত-শিবিরের কর্মী। তিনি উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে জাতির দুশমন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন। আমরা জানতে পেরেছি, জঙ্গি কায়দায় ফেনী হয়ে গোপনে হাটহাজারীতে এসেছেন কুলাঙ্গার মামুনুল হক। প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই, এ জামায়াত কর্মীকে গ্রেপ্তার করুন।

এদিকে সকাল ১০ টার দিকে বিমানবন্দরের প্রবেশমুখে দুই ঘণ্টা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা। চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দীন বাচ্চু এতে নেতৃত্ব দেন। বিমানবন্দরের প্রবেশমুখে অবস্থান নেন কয়েকশ নেতাকর্মী। এসময় তারা মামুনুলের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। পাশেই মহানগর ছাত্রলীগের নির্দেশে পতেঙ্গা থানা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

শুক্রবার (২৭ নভেম্বর ) বেলা পৌঁনে ১২টার দিকে চবি এক নম্বর গেটে চট্টগ্রাম-হাটহাজারী সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের নেতৃত্বে মামুনুল হকের হাটহাজারীতে আগমন রুখতে সড়কে অবস্থান নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তারা। তবে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধের চেষ্টা করা হলেও হাটহাজারী থানা পুলিশ সড়ক থেকে তাদেরকে সরিয়ে দিলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত জঙ্গিবাদবিরোধী সমাবেশে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা চট্টগ্রামে হেফাজত নেতা মামুনুল হককে ‘প্রতিহতের’ ঘোষণা দেন। ‘প্রতিরোধ’ হুঙ্কার ছড়ালেও বৃহস্পতিবার মধ্যরাত ও শুক্রবার সকালে পরপর দু’দফা ঢাকার নির্দেশনা পেয়ে ‘ঘরে ঢুকে’ যেতে বাধ্য হয়েছে চট্টগ্রামের ছাত্রলীগের নেতারা। তবে মামুনুল হক সকালে চট্টগ্রামে আসার খবর পেয়েও মুখ রক্ষার আন্দোলন করেছিল ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা।

রাতভর ফেসবুকে উত্তেজনা ছড়ালেও ভোর হতেই তা নিমিষেই শেষ হয়ে গেছে। কেননা সংগঠনটির সভাপতির কড়া নির্দেশনার পর মামুনুল হক ‘বিরোধী’ কর্মসূচি থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছে তা নয়, যাকে নিয়ে এতো আলোচনা-উত্তেজনা সেই মামুনুল হক সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সড়কপথে চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় এসে পৌঁছেছেন। মূলত কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতেই সরকারের প্রভাবশালী একটি গোয়েন্দা সংস্থার পরামর্শে হেফাজত নেতারা মামুনুল হককে সড়কপথে হাটহাজারী নিয়ে আসেন। তিনি বর্তমানে হাটহাজারী মাদ্রাসায় বিশ্রামে রয়েছেন।

( সীমান্তবাংলা/ শা ম/ ২৭ নভেম্বর ২০২০)