(বিশেষ প্রতিনিধি)
চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের পদুয়া রেঞ্জের আওতাধীন ডলু বিটের সংরক্ষিত (রিজার্ভ) জায়গা থেকে গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে। বিগত কয়েকদিন ধরে এসব গাছ কাটার ঘটনা ঘটলেও চলছে এই নিধনযজ্ঞ। এই (ডলু বন বিটের) জায়গা থেকে নানা প্রজাতির গাছ কাটা হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এই গাছ নিধনযজ্ঞে অবগত রয়েছেন ডলু বনবিটের দায়িত্বরত কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম। তারা জানা সত্বেও এই জায়গা থেকে কয়েকদিন ধরে গাছ গুলো কেটে বন উজাড় করে যাচ্ছে। এই পাহাড় থেকে আরও এক সপ্তাহে পর্যন্ত গাছ কাটবে বলেও জানান তারা।
জানা গেছে, এই গাছগুলো ক্রয় করেছেন চুনতী ইউনিয়নের ফারাঙ্গা এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা সাবেক শওকত আলী মেম্বারের ছেলে মোঃ নাজিম উদ্দিন। আর এসব গাছগুলো কেটে বিক্রি করার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সুমেলসহ বিভিন্ন জায়গায়। বিষয়টি ডলু বিট বন কর্মকর্তাকে অবহিত করলেও রহস্যজনক কারণে তারা এ বিষয়ে কোন কর্ণপাত করেননি। এছাড়াও বিষয়টি আমলে না নিয়ে উল্টো গাছ কাটার বিষয়টি বিভিন্ন ধরনের অযুহাত দেখানো হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ডলু বনবিটের দক্ষিণে চুনতী ইউনিয়ন ৯নং ওয়ার্ডের কিল্লাখোলা নামক এলাকায় একটি পাহাড়ের (রিজার্ভ) জায়গা থেকে নানা প্রজাতির মূল্যবান গাছ অবাধে কাটা হচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে এই গাছ গুলো কেটে তা গাড়ি দিয়ে অন্যত্র বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এসময় দেখা যায় ওই পাহাড়ের প্রায় শতাধিক গাছ কেটে তা স্তূপ করে রাখা হয়েছে এবং আরও শতাধিক গাছ কাটা অবস্থায় পড়ে আছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, বন বিভাগের কর্মকর্তাদের ‘ম্যানেজ’ করে দীর্ঘদিন যাবৎ ওই বনবিভাগের জায়গা ভোগদখল দিয়েছে। এখন ওই বনের জায়গা থেকে গাছ কাটার অনুমতি দিয়েছে। এভাবে দিনের পর দিন বনভূমি উজাড় এবং বেদখল হলে বনের উদ্ভিদ ও জীববৈচিত্র্য এবং পরিবেশের চরম ক্ষতির সম্মুখীন হতে থাকবে।
রিজার্ভ জায়গা থেকে গাছ কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে কাঠ ব্যবসায়ী নাজিম উদ্দিন জানান, গাছ যে জায়গা থেকে কাটা হচ্ছে সে জায়গা রিজার্ভ নই। তিনি সরকারি খাস জায়গা থেকে গাছগুলো কাটছে বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে ডলু বিটের বন কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম অভিযোগের কথা স্বীকার করে বলেন, গাছ কাটার বিষয়ে তিনি অবগত রয়েছেন। উল্লেখিত বনবিভাগের জায়গাটা দীর্ঘদিন জবরদখলে ছিলো। এই বছর নতুন ভাবে সুফলের বাগান করা হবে। তাই তাদেরকে গাছগুলো কেটে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে পদুয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মনজুর মোর্শেদ বলেন,
তিনি চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় অফিসে গেছেন। খোঁজ নিয়ে দেখতেছে বলেও জানান তিনি।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, রিজার্ভ জায়গা থেকে গাছ কাটার কোন সুযোগ নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে বলেও জানান তিনি।