বর্ধিত সভা পন্ড হট্টগোলে “ইসলামপুরে সেই বিএনপি নেতা আ.লীগ সভাপতি হতে মরিয়া”

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২২

 

এন আলম আজাদ

নবগঠিত ঈদগাঁও ইসলামপুরের ঘোষণা দিয়ে আওয়ামীলীগ অফিস ও শেখ হাসিনা এবং বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করা সেই আরিফুল ইসলাম বিএনপি নেতা এবার ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

তিনি ইতিমধ্যে নিজেকে সভাপতি প্রার্থী হিসেবে প্রচারনা করে যাচ্ছেন।অভিযোগ আছে লোভি কয়েকজন আওয়ামীলীগ নেতা টাকার বিনিমিয় তাকে দলে নিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের এই দলকে বির্তকিত করতে চেষ্টা চাচ্ছে।

এর সূত্রে ধরে বৃহস্পতিবার ২৫আগস্ট ইসলামপুর ইউনিয়ন আওয়ামীগের সম্মেলন প্রস্তুুতি কমিটি গঠনে আহুত বর্ধিত সভায় লন্কাকান্ড ঘটে গেছে।একপক্ষের বিরুধীতায় সভার মাঝখানে তা পন্ড হয়।

কমিটি গঠনের এ সভা পন্ড হওয়ার জন্য অধিকাংশ নেতাকর্মীরা ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে দায়ী করেছেন।তারা বলেছেন, তার প্রত্যক্ষ নির্দেশ ও উসকানিতে গুটিকয়েক পেশি শক্তি নির্ভর নেতা দলের অনুপ্রবেশের চেষ্টা কারী হাইব্রিডদের দিয়ে পূর্ব পরিকল্পনায় সভায় বিশৃঙ্খল অবস্থা সৃষ্টি করলে তা ভন্ডুল হয়ে যায়।

, ২৫ আগষ্ট বিকেল ৩ টায় স্হানীয় নতূন অফিসস্হ আইডিয়াল স্কুলের ঐ বর্ধিত সভাটি উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহবায়ক মুহিদুল্লাহ মুহিদের পরিচালনায় প্রায় সব বক্তাই তাদের বক্তব্য দেন।এর পরে যথারীতি সম্মেলন প্রস্তুতি গঠনে ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডের কমিটির তালিকা আহবান করা হলে ৫ নং ওয়ার্ড কমিটি জমা হওয়ার পরপরই ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সভার সভাপতি মনজুর আলম(দাদা) জমাকৃত কমিটিতে আরিফুল ইসলাম নামের একজনের বিরুদ্ধে আপত্তি তুলেন।

তার সোজাসাপটা যুক্তি এই আরিফ ও তার পুরো পরিবার আওয়ামী বিরুধী।এমনকি বিএনপির ইউনিয়ন কমিটিতেও রয়েছে আরিফের নাম।তার এ কথায় দ্বিমত দেখান ও এর তীব্র প্রতিবাদ করেন চেয়ারম্যান ইমরুল রাশেদ।এমনকি দাদা মনজুর কে উল্টো বিএনপি অনুরাগী বলে চিহ্নিত করেন তিনি।

দলের ক্রান্তিকালে ও জাতীয় নির্বাচনের প্রয়োজনীয় মুহুর্তে আরিফ ও তার ভাই শরিফ ছাড়া আর কারো দলের জন্য ত্যাগ স্বীকারের ভূমিকা নেই এমন সাফাই মন্তব্যও করেন তিনি।

তার এই মন্তব্যের ঘুর বিরুধীতা করে বসেন উপস্হিত নেতাকর্মীরা। রাশেদের এমন মন্তব্যের পরপর উপজেলা কমিটির সদস্য ফরিদুল ইসলাম খাঁন উপস্থিত উপজেলার আহবায়ক আবু তালেব সহ সকল নেতা কর্মীদের কাছথেকে অনুমতি সাপেক্ষে বক্তব্য দেয়া শুরু করলে ছাত্রলীগ নামধারী ও অনুপ্রবেশকারীদের দলে স্হান করে দিতে উঠে পড়ে লাগা জসিম মাঝখানে ফরিদুল ইসলামের বক্তব্য পন্ড করার অপচেষ্টা করলে উপজেলা আহবায়ক কমিটির অপর সদস্য তৌহিদুল ইসলাম বক্তব্যের মাঝখানে তাকে কথা না বলার জন্য বারণ করলে তার প্রতি তেড়ে আসেন জসিম।

ফরিদুল ইসলাম জানান,হাইব্রিড আরিফ ও তার পুরো পরিবার এলাকায় বিএনপি পরিবার হিসাবে চিহ্নিত।কয়েকজন জামাত শিবিরের রাজনীতিতেও সক্রিয়। তার বড় ভাই আবুল কালাম ঈদগাঁও উপজেলা বিএনপির আহবায়ক এবং বিগত নির্বাচনে ধানেরশীষ প্রতীকের নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান।

তিনি আরও জানান,মরহুম গণি পরিবার ভুক্তরা ইতিপূর্বে ট্রান্সপোট ভিত্তিক লবন ব্যবসাকে পুঁজি করে মাদক পাচার, অবৈধ কাঠ ব্যবসা,সরকারী ও অপরের জমি দখল,চাঁদাবাজি হয়রানি সহ নানা অপকর্মের মাধ্যমে অর্জিত অবৈধ সম্পদ হালাল করতেই বোল পাল্টিয়ে এখন আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন সভাপতির পদ ভাগিয়ে নিতে অপচেষ্টা করছেন।

অথচ এই গণি পরিবার ২০১১,১৩ ও ১৪ সালে কয়েক বার স্হানীয় আওয়ামীলীগ অফিস ভংচুর ও পুঁড়িয়েছে।এমনকি তারা পদদলিত করেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিও।

২০১৪ সালে নাপিতখালীস্হ আওয়ামী লীগ অফিস ভাংচুরের দায়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহাজান বাদী হয়ে আরিফ ও তার দুই সহোদর সহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করলেও শেষাবধি মামলাটি তদন্তে আলোর মুখ দেখেনি।

তার অভিযোগ মামলার বাদি নিজেই অভিযুক্তদের সাথে ১০ লক্ষ টাকায় দফারফা করে স্পর্শ কাতর মামলাটির ভাগ্য ছিনিয়ে নিয়েছেন।
দ্রত বিচার আইনে দায়েরকৃত মামলা থেকে টাকা বিলিয়ে পার পেয়ে গণি পরিবারের আরিফ সহ অন্যরা এখন আওয়ামী লীগের পরিক্ষিত নেতা কর্মীদের উপর ছড়ি ঘুরাচ্ছেন ও অপদস্ত করছেন। মামলার বাদী শাহাজান বিবাদীদের সাথে আপোষ না করলে আজকে এই গণি পরিবারের আরিফরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে প্রার্থী হওয়ার দুঃসাহস পেত না।

ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনজুর আলম জানান,সভাপতি হিসাবে কোন অনুপ্রবেশকারী ও সুযোগ সন্ধানীদের বিপক্ষে আপত্তি তুলার এখতিয়ার আমার রয়েছে। কিন্তু উপজেলা কমিটির একজন দায়িত্বশীল নেতা উল্টো আমাকেই হাইব্রিড আর যারা বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাংচুর, এমনকি ইসলামপুরে আওয়ামীলীগকে নির্বংশ করে দেয়ার প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছিল সেই আরিফরা আজ আওয়ামীলীগের নিবেদিত প্রাণ বলে মন্তব্য করায় হ্রদয়ে রক্ত ক্ষরণ হয়েছে।তিনি আক্ষেপের সুরে বলেন,কাদের হাতে আজ বঙ্গবন্ধুর আদর্শের তৃণমূলের আওয়ামীলীগ?

অবশেষে উভয় পক্ষের মধ্যে তীব্র বিতন্ডায় পরিস্থিতি অনুকুলে না থাকায় সভায় আমন্ত্রিত ঈদগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক সাবেক ছাত্র নেতা আবু তালেব,যুগ্ম আহবায়ক হুমায়ুন কবির হিমু সহ অন্য নেতারা সভাস্থল ত্যাগ করতে বাধ্য হন।

সম্মেলন প্রস্তুুতি কমিটি শেষ মুহূর্তে গঠন না হওয়ায় দলের নিবেদিত প্রাণ নেতা কর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজমান।

স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারা বলছে, আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকার পরও
আরিফ ও তার ভাইদের অত্যাচারে ইসলাপুরে প্রকাশ্যে আওয়ামীলীগ করা যায়নি।তারা আওয়ামীলীগ নিধন করার জন্য আওয়ামীলীগে আশ্রয় নিতে চায়।

জানতে চাইলে ঈদগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক আবু তালেব জানান,অঙ্গ সংগঠনের কিছু জুনিয়র অনুপ্রবেশকারী এর জন্য দায়ী।এক যুগ্ম আহবায়কেও কম দায়ী করেননি তিনি। ভবিষ্যতে ইউনিয়ন কমিটি গঠনে অনুপ্রবেশকারী হাইব্রিডদের দলে ঠাঁই না দিয়ে পরিক্ষিত সৎ নেতাকর্মীদের মধ্য থেকে আগামী ইউনিয়ন আওয়ামী গঠন করা হবে বলে জানান উপজেলার এই শীর্ষ নেতা।