বুয়েটে রাজনীতি বন্ধ হলে ভিন্ন তৎপরতা বাড়ার শঙ্কা

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: এপ্রিল ৩, ২০২৪

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে হল দখল, সিট বাণিজ্য, নির্যাতন, গেস্টরুম কালচার, চাঁদাবাজি ও ত্রাসের রাজনীতি বন্ধ করে সুস্থ ধারার ছাত্ররাজনীতি ফিরিয়ে আনার তাগিদ দিয়েছেন সাবেক ছাত্রনেতা ও শিক্ষাবিদেরা। তারা বলছেন, ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কোনো সমাধান নয়। এতে বরং গোপন রাজনৈতিক তৎপরতা বাড়বে। তাই শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের রাজনীতি দিয়েই ছাত্ররাজনীতির ইতিবাচক ধারা ফিরিয়ে আনতে হবে।

আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের জের ধরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বুয়েটে নিষিদ্ধ হয় সক্রিয় ছাত্র রাজনীতি। এরপর থেকে এই উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্ধ আছে ছাত্র সংগঠনগুলোর কার্যক্রম। কিন্তু সম্প্রতি ছাত্রলীগ নেতাদের বুয়েট ক্যাম্পাসে যাওয়াকে কেন্দ্র করে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিতে পরীক্ষা বয়কট করে আবারও প্রতিবাদে নেমেছে বুয়েট শিক্ষার্থীরা। অভিযোগ রয়েছে, সক্রিয় ছাত্ররাজনীতি বন্ধের সুযোগে বুয়েটে গোপনে তৎপরতা চালাচ্ছে ছাত্রশিবির ও নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীর। যদিও সাধারণ শির্ক্ষাথীরা সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তারা বলছেন, দলীয় লেজুরভিত্তিক ছাত্ররাজনীতির কারণে লেখপড়ার সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট হয়। উদাহরণ হিসেবে তারা আবরার হত্যাসহ গত কয়েক বছরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন অপকর্মের বিষয় সামনে এনেছেন।

অন্যদিকে ছাত্ররাজনীতি থেকে জাতীয় রাজনীতিতে অবদান রাখা নেতারা বলছেন, ছাত্ররাজনীতি বন্ধ রাখাটা কোনো সমাধান নয়। এমন পরিস্থিতিতে বরং গোপন রাজনীতির তৎপরতা বাড়ে। অতীতের ইতিহাসও সেই সাক্ষ্যই দেয়।

ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করা নয়। বরং শিক্ষার্থীদের স্বার্থে ইতিবাচক রাজনীতির ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে হবে। সেই সঙ্গে হিযবুত তাহরীরের মতো জঙ্গি গোষ্ঠী যাতে মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সেটি নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

 

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, “একদিকে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির রাজনীতি নিষিদ্ধ করে রাখবে, আরেকদিকে মৌলবাদী শক্তি সেখানে নীরবে নিশ্চুপে রাজনীতি চালিয়ে গিয়ে সেটিকে দুর্জয় ঘাঁটি তৈরি করবে। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”

জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, “মাথাব্যথা হলে তা সারানোর ওষুধ আছে। মাথা কাটার ফর্মুলা কাউকে দেওয়া উচিত নয়। বুয়েট ঐতিহাসিকভাবে সশস্ত্র যুদ্ধে ভূমিকা রেখেছে। সেই বুয়েটের ছাত্রছাত্রীরা রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি করবে, এটা আমর কাছে অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে। আমি মনে করি তারা এটা পুনর্বিবেচনা করবেন।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলছেন, “শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার পরিবেশ ঠিক রেখে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের পক্ষে লড়াই করার যে ছাত্ররাজনীতি, সেটি চালু রাখতে হবে। নয়তো শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের পথ বন্ধ হয়ে যাবে।”

তিনি বলেন, “পরিবেশ যদি সুষ্ঠু সুন্দর করা যায়, শিক্ষার একটা পরিবেশ আমরা ধরে রাখতে পারি। সময়ের বিবর্তনে ছেলে-মেয়েরা আবার রাজনীতিতে আগ্রহী হবে। আজকের তরুণরা মত প্রকাশ করতে চায়, প্রতিবাদ করতে চায়। সেক্ষেত্রে তাদেরকে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত রাখা, রাজনীতির অধিকার দেওয়া, সেটিও তাদের দাবির মধ্যে আসবে।”(ঢাকাটাইমস/০৩এপ্রিল/এফএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন