কক্সবাজা‌রে আইক‌নিক রেল‌স্টেশন, পর্যট‌নে প্রচুর সম্ভাবনা 

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: অক্টোবর ২১, ২০২৩

মোস‌লেহ উদ্দিন : দেশের প্রথম আইকনিক রেলস্টেশন হ‌চ্ছে কক্সবাজা‌রে। নির্মাণ কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। একইভা‌বে ডুলাহাজারা-কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণকাজ প্রায় শে‌ষপ্রা‌ন্তে। সব মিলিয়ে রেললাইন পুরোপুরি চালু হলে কক্সবাজা‌রে পর্যটনখা‌তে তৈরি হবে প্রচুর সম্ভাবনা। সর্বসাকু‌ল্যে উন্নয়ন কর্মকান্ড দ্রুত শেষ হ‌লে পরবছরটি‌তে কক্সবাজা‌রে নবযুগের সূচনা ঘটা‌বে।

শহরের কাছেই তৈরি হচ্ছে নান্দনিক ডিজাইনের আইকনিক টাউয়ার রেলস্টেশন। এই স্টেশনে থাকছে ১৭টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্টান। রেলস্টেশন ও রেললাইন সম্পূর্ণ নির্মিত হলে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের বিনোদনের নতুন গন্তব্য হবে পর্যটননগরী কক্সবাজার।

আইকনিক স্টেশনের সুপ্রশস্ত চলন্ত সিঁড়ি দিয়ে দ্বিতল থেকে নামতে হবে মুলট্রেনের প্ল্যাটফর্মে। স্টেশনের ভেতরেই থাকবে কেনাকাটার ব্যবস্থা। থাকবে নির্দিষ্ট লকার। ‌নি‌জের ব্যাগ রেখে স্বাচ্চ‌ন্দে ঘুরে আসতে পারবেন পর্যটকরা।এগু‌লো ছাড়াও র‌য়ে‌ছে এই প্রকল্পের আওতায় আরও ৯টি সাবস্টেশন নির্মাণ হচ্ছে।

কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামের দিকে পরের স্টেশন রামু। পর্যায়ক্রমে রয়েছে ইসলামাবাদ, ডুলাহাজারা, চকরিয়া, হারবাং, লোহাগড়া, সাতকানিয়া ও দোহাজারী রেলওয়ে স্টেশন। চট্টগ্রামের দোহাজারি-কক্সবাজার রেললাইন, যা ছিল কক্সবাজারবাসীর জন্য স্বপ্নের মতো। তা এখন বাস্তবায়নের পথে।

২০১০ সালে দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার ও রামু থেকে মিয়ানমার সীমান্ত ঘুমধুম পর্যন্ত ১২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। কক্সবাজারের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ করার পাশাপাশি মিয়ানমারসহ ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে বাংলাদেশকে যুক্ত করা এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। তবে কক্সবাজার থেকে বাংলা‌দেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটারের কাজ আপাতত বন্ধ র‌য়ে‌ছে।

চট্টগ্রামের দোহাজারী কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার। কক্সবাজার রেলস্টেশনকে বলা হচ্ছে গ্রিন স্টেশন। ফয়েজ উল্লাহ বলেন, কক্সবাজার রেলস্টেশন ডিজাইন করার সময় একটা অনুপ্রেরণা নিই। ঝিনুক ও শামুকের গঠনটা বাইরে থাকে, আর বাকি শরীরের অংশটুকু ভেতরে আবৃত থাকে। আমরা সেখান থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে পুরো রেলস্টেশনটাকে একটা ছাউনি দিয়ে ঢেকে দিয়েছি।

দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের পরিচালক মো: মফিজুর রহমান জানান, দুটি লটে আমরা কাজ করছি। লট-১-এ আমরা একটু পিছিয়ে আছি। লট-১ শুরু করেছিলাম পরে। কারণ, আমরা প্রথমে কক্সবাজারে জমি পেয়েছিলাম। আশা করছি জুনের মধ্যে শেষ করতে পারবো। বাকিটা সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরের মধ্যে শেষ হবে। তাহলে অক্টোবর- নভেম্বরে ট্রেন চালাতে পারবো বলে আশা করছি।

প্রথম ধাপে দোহাজারী থেকে চকরিয়া ৫০ কিলোমিটার ও পরের ধাপে চকরিয়া থেকে কক্সবাজার ৫০ কিলোমিটার রেললাইন প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি ৯০ ভাগের বেশি হয়েছে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, কক্সবাজারে নির্মাণা‌ধিন ঝিনুক আকৃতির আদলে তৈরি আইকনিক রেলস্টেশনটি শুধু যাত্রী যাওয়া-আসার জন্য নয়। এখানে আর্থসামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে টেকসই করার জন্য নানা ধরনের ব্যবহারকে সংমিশ্রণ করা হয়ে‌ছে। পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন ধরনের রেস্টুরেন্ট, ফুডকোর্ট, মাল্টিপারপাস

লোডও কম হবে। এতে এখান থেকে প্রচুর পরিমাণে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে। এই প্রকল্পটি পরিবেশগতভাবে টেকসই হিসেবে ডিজাইন করা হয়। এখানে বৃষ্টির পানি থেকে শুরু করে পানি পুনর্ব্যবহার করা, বিদ্যুৎ সাশ্রয়, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রয়েছে। পানির জন্য কম অপচয় ওয়াটার ফিক্সচার ব্যবহার করা হয়ে‌ছে।

সীমান্তবাংলা/মউ/২১অ‌ক্টো২৩