নরসিংদীতে ইরি-বোরো রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২১, ২০২৪

মো: খায়রুল ইসলামঃ নরসিংদী জেলার ৬টি উপজেলায় ইরি-বোরো ধান রোপনের মৌসুম চলছে। আর তাই শীতের তীব্রতা উপেক্ষা করেই ইরি-বোরো রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষাণ-কৃষাণীরা। জেলা জুড়ে ইরি বোরো ধান লাগানো নিয়ে গ্রামে গ্রামে চলছে এখন উৎসবের আমেজ। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কেউ বীজতলা থেকে ধানের চারা তুলছেন, আবার কেউ জমিতে চারা গালানোর উপযোগী করে তোলায় ব্যস্ত রয়েছেন, কেউ জমিতে হালচাষ দিচ্ছেন। এ দৃশ্য দেখা যাচ্ছে জেলার বিভিন্ন মাঠ জুরে।
জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৬টি উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৫৬ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান লাগানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে নরসিংদী সদর উপজেলায় ৭হাজার ৩৭০ হেক্টর, শিবপুর ৮ হাজার ৭২০ হেক্টর, মনোহরদী ৯ হাজার ৩১০হেক্টর, পলাশে ৭ হাজার ৪৩০ হেক্টর, বেলাবতে ৭ হাজার ৯৮০ হেক্টরও রায়পুরা উপজেলায় ১৫ হাজার ৭০০ হেক্টর জমি।
বেলাব উপজেলার বাজনাব গ্রামের হযরত আলী জানান, শীতের কুয়াশা কম থাকায় বীজ তলায় কোনো প্রকার ক্ষতি হয়নি। এছাড়া বাজারে সার ও ওষুধের দাম বৃদ্ধি থাকায় বোরো আবাদে কৃষকের মুখে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। এবার তিনি দুই বিঘা জমিতে ব্রি-২৮ ধানের আবাদ করেছেন। ধান আবাদে যে পরিমাণ খরচ হয় বাজারের ধানের দাম কম থাকায় কৃষকদের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।
শিবপুর উপজেলার জয়নগর গ্রামের কৃষক অহিদ মিয়া জানান, এবার প্রায় দুই বিঘা জমিতে আবাদ করেছেন। শ্রমিক সঙ্কট থাকায় চুক্তি ভিত্তিতে বোরো রূপনের কাজ দেয়া হয়েছে। বিঘা প্রতি সাড়ে পনের’শ থেকে দুই হাজার টাকার মতো দিতে হচ্ছে। বীজতলা থেকে শুরু করে সার, ওষুধসহ জমি লাগানো পর্যন্ত বিঘা প্রতি প্রায় চার থেকে পাঁচ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। এছাড়া অনেকে ৪০০ টাকা করে শ্রমিকদের দিয়ে সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কাজ করে নিচ্ছেন।
এছাড়া রায়পুরা উপজেলার বাখরনগর গ্রামের কৃষক আলি হোসেন জানান, কৃষিতে উৎপাদন খরচ দিনদিন যেভাবে বাড়ছে সে তুলনায় ধানের দাম বাড়ছেনা। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও ধানের সেইভাবে দাম বাড়েনি। কতিপয় দালাল/ফড়িয়ার কারণে প্রতিবছরই কৃষককে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয় জমি বর্গা নিয়ে আবাদ করেন যেসব কৃষক। সরকারকে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় এবং দাম বাড়ানোর জন্য দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা।
তবে কিটনাশক, সার, ও বিদ্যুৎতের দাম কমানোর জন্য সরকারের সুদৃষ্টি দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা।
নরসিংদী জেলা কৃষিস¤প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোঃ আজিজুর রহমান জানান, জেলায় চলতি মৌসুমে ৫৬ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান লাগানোর লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজারে ইউরিয়া, ফসফেট, টিএসপি, পটাশসহ সকল প্রকার সার, তেলের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় ইরি-বোরো ধানের ভরা মৌসুমেও সঙ্কট থাকবেনা। এছাড়া কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।