
ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক নিউজ ;
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে ভয়ংকর অর্থনৈতিক সংকটের মুখে শ্রীলঙ্কা। দেশটিতে হু হু করে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। পেট্রোল ও ডিজেল না থাকায় জ্বালানি পাম্প স্টেশনগুলো বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। বিদ্যুৎ সংকটে ফিরেছে হারিকেনের আলো। পর্যাপ্ত কাগজ আমদানি সম্ভব না হওয়ায় স্কুল পরীক্ষাও স্থগিত। প্রকট হচ্ছে নগদ অর্থ সংকট। সব মিলিয়ে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে শ্রীলঙ্কার সাধারণ মানুষের জনজীবন।
দীর্ঘ লোডশেডিংয়ে তেলে জ্বালানো বাতিই মূল ভরসা, তাই কেরোসিনের মতো জ্বালানির জন্য দিনভর লাইনে দাঁড়িয়ে লঙ্কানদের গলদঘর্ম হতে হচ্ছে। সাথে আছে চরম অর্থনৈতিক সঙ্কট। সবমিলিয়ে দেশটিতে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। অর্থের অভাবে হাসফাঁস করছে দিশেহারা লঙ্কানরা। এরমধ্যে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভেও টান পড়েছে। ফলে গুরুত্বপূর্ণ আমদানিও করতে পারছে না দ্বীপ রাষ্ট্রটি। ফলে অনেক জীবন রক্ষাকারী ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া আর প্রধানমন্ত্রী মাহেন্দা রাজা পাকসের দেশে।
আর এসবের জন্য সরকারের অব্যবস্থাপনাকেই দায়ী করছে দেশটির জনগণ। জ্বালানির জন্য লাইনে দাঁড়ানো কলম্বোর এক গৃহিনী বলেছেন, ‘পাঁচ ঘণ্টা ধরে আমি এখানে দাঁড়িয়ে আছি।’ রান্না করার স্টোভের জন্য জ্বালানি নিতেই তাকে এই দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, তার সামনেই লাইনে দাঁড়াতে দাঁড়াতে তিন জন মানুষ অজ্ঞান হয়ে পড়েছেন। তিনি বলেন, ‘ আমি কিছুই খাইনি। প্রচণ্ড মাথা ঘোরাচ্ছে। খুব গরম। কিন্তু আমি কী করবো? এটা খুব কঠিন সময়।
জ্বালানির অভাবে ঠিকমতো বাস-ট্রাক চলছে না। লোডশেডিং আর ওষুধ স্বল্পতায় অনেক অস্ত্রোপচারও এখন বন্ধ রাখছে হাসপাতালগুলো। কাগজের অভাবে স্কুলগুলোতেও পরীক্ষা বন্ধ। ভাদিভু নামের একজন শ্রমিক বলেন, ‘আমি ৬০ বছর ধরে কলম্বোতে বসবাস করছি, তবে এমনটা আগে কখনো দেখিনি। এখানে খাওয়ার কিছু নেই, পান করার কিছু নেই। রাজনীতিবিদরা বিলাসী জীবনযাপন করছে, আর আমরা ভিক্ষা করছি।’
গত বুধবার থেকে গড়ে ১০ ঘণ্টার বেশি লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে শ্রীলঙ্কায়। এক বিবৃতিতে সিলন ইলেক্ট্রিসিটি জানিয়েছে, জ্বালানি সরবরাহের স্বল্পতার কারণে উৎপাদন কম, তাই চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রাখতে তারা দীর্ঘ লোডশেডিংয়ের পথে হাঁটতে বাধ্য হয়েছে।