রাঘব বোয়ালদের নাম প্রকাশ করবে ডিবি, টাকার ভাগ নিতেন অনেকে

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: এপ্রিল ৪, ২০২৪

রাজধানীর পীরেরবাগ থেকে টাকার বিনিময়ে আসল সার্টিফিকেট তৈরি করার অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট এ কে এম শামসুজ্জামান গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। এই ঘটনায় রাঘব বোয়ালদের নাম পেয়েছে ডিবি পুলিশ। তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে ঘটনার সঙ্গে আরও যারা জড়িত তাদের সবার নাম প্রকাশ করা হবে। এই ঘটনায় শামসুজ্জামান একাই নন, বোর্ডের ঊর্ধ্বতন অনেক কর্মকর্তা জড়িত।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, কয়েক দিন আগে পীরেরবাগে অভিযান চালিয়ে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সার্টিফিকেট তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়েছিলাম। এই সার্টিফিকেট কিন্তু জাল নয় বরং সরকার যে কাগজ ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের সনদ দেয় কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট শামসুজ্জামান একই কাগজ ব্যবহার করে সার্টিফিকেট বানাতেন। অর্থাৎ তিনি শিক্ষা বোর্ড থেকে কাগজ এনে বাসায় বসে সার্টিফিকেট বানাতেন। রেজাল্ট অনুযায়ী তিনি টাকা নিতেন, তবে ৩৫ হাজারের কমে তিনি কাজ করতেন না। এরপর সার্টিফিকেট বানানোর পর সেই রেজাল্টের তথ্য শিক্ষা বোর্ডের সার্ভারে আপলোড করে দিতেন। এই সার্টিফিকেট দিয়ে অনেকে বিদেশে গেছেন, অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন আবার অনেকে চাকরি করছেন। এভাবে তিনি সাড়ে ৫ হাজারের বেশি সার্টিফিকেট দিয়েছেন।

ডিবি প্রধান বলেন, গ্রেপ্তারের পর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট এ কে এম শামসুজ্জামানকে আমরা রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। আমাদের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি অনেক চমকপ্রদ তথ্য দিচ্ছেন।

শিক্ষা বোর্ড থেকে সনদ তৈরির কাগজ কীভাবে বের করতেন এই প্রশ্নের জবাবে শামসুজ্জামান গোয়েন্দাদের জানিয়েছেন, সবাইকে ম্যানেজ করে অর্থাৎ শিক্ষা বোর্ডের সকলের সঙ্গে যোগসাজশ করে কাগজ বের করতেন। এমনকি তার এই সার্টিফিকেট তৈরির কারখানার বিষয়ে অনেক গণমাধ্যমের সাংবাদিকরাও জানতেন। সকলেই তার কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, শামসুজ্জামানের অবৈধভাবে তৈরি করা সার্টিফিকেটের বিষয়ে একাধিকবার তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বোর্ডের কর্মকর্তারা তদন্ত করতে গিয়ে দেখলেন অনেক কিছু বেরিয়ে আসছে। ফলে সেটাও ধামাচাপা পড়ে যায়। নিজে না বোঝার দোহাই দিয়ে অভিযোগ তদন্তের জন্য পাঠানো হয় কমপিউটার কাউন্সিলে। তারাও চুপ হয়ে যায়। কামরুজ্জামান আমাদের বলেছেন, সার্টিফিকেট তৈরির বিষয়টি সকলেই জানতেন। টাকার বিনিময়ে সবাই তার কাছে ম্যানেজ করে আসল সার্টিফিকেট বানিয়ে সার্ভারে আপলোড করে দিতেন। আমরা সব কিছুই তদন্ত করছি। তার কাছ থেকে সার্টিফিকেট উদ্ধার করা হয়েছে। আমাদের কাছে তিনি বলেছেন, কারা তদন্ত করতে গিয়ে চুপ হয়ে গেছেন। রিমান্ডে পাওয়া তথ্য যাচাই করে কোন কোন রাঘব বোয়াল জড়িত সবার নাম প্রকাশ করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/০৪এপ্রিল/এসএস/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন