মহেশখালীতে দেবরের হাতে ভাবি খু*ন, থানায় মামলা

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২৩

 

মহেশখালী প্রতিনিধি: 
কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউপির হামিদুর রহমান পাড়ায় ৭ই জুন (বুধবার) রাত ২টার দিকে ভাবির গলা কেটে হত্যার চেষ্টা চালায় দেবর আক্তার হোছন। এ ঘটনায় গৃহবধূ মুবিনা আক্তার ৯ই জুন (শুক্রবার) সকাল ৮টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।

নিহত হওয়ার দুইদিন পর আক্তার হোছনকে এক নম্বর আসামী করে অজ্ঞাত তিনজনের নামে মহেশখালী থানায় মামলা করেছে নিহতের বড়ভাই মো: বাদশা। অভিযুক্ত আক্তার হোছন স্থানীয় আহমদ আলী আহমদের পুত্র এবং নিহত মুবিনা আক্তারের দেবর।

অপরদিকে নিহত গৃহবধূ মুবিনা আক্তার কালারমারছড়া ইউপির অফিসপাড়া গ্রামের মৃত ছালেহ আহমদের কন্যা ও হোয়ানক মালয়েশিয়া প্রবাসী ছৈয়দ মিয়ার স্ত্রী। নিহতের এক ছেলে এক মেয়ে রয়েছে।

এ ঘটনায় অনুসন্ধানে গেলে একের পর এক বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

মামলার বাদি মো: বাদশা ও মুবিনার ভাবি রুজিনা বলছে, মুবিনা পরকীয়ায় রাজি না হওয়ায় আক্তার হোছন মুবিনাকে হত্যা করছে। এছাড়াও পরকীয়ায় জড়িয়ে স্বামীর পাঠানো স্বর্ণ ও টাকা ছিল আক্তার হোছনের মুল টার্গেট। মুবিনাকে গলা কেটে আহত করার পর ভিন্ন কৌশল নেয় আক্তার হোছন। তাই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় মুবিনার একই গাড়িতে অবস্থানে ছিল আক্তার হোছন। জ্ঞান ফেরার পর আক্তার হোছনকে দেখতে পেয়ে মুবিনা বলছে, আমাকে শেষ করে দিয়েছে আক্তার। আমাকে মেরে ফেলেছে আক্তার। সে মেরে ফেলার জন্য আমার একই গাড়িতে হাসপাতালে যাচ্ছে। তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দাও।

আক্তার হোছনকে উদ্দেশ্য করে মুবিনা বলছিল, এই আক্তার! আমি মরে গেলে হাশরের দিন তুই আমার ঘোড়া হয়ে থাকবি। আমি তোকে ক্ষমা করবোনা। আমার ছেলেমেয়ের কিছু হলে তুই দায়ি থাকবি। কথাগুলো চলন্ত গাড়িতে কেঁদে কেঁদে বলছিলেন নিহত মুবিনা আক্তার। প্রশাসনের কাছে মুবিনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তার পরিবার।

মুবিনার মামাত ভাই মাষ্টার এমরান জানান, মৃত্যু নিশ্চিত করতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন আক্তার হোছন সেটা অনেকটাই নিশ্চিত বলা যায়। কেননা, ডাক্তার ইমার্জেন্সি অপারেশনের কথা বললে টাকার অজুহাত দেখিয়ে আক্তার হোছন অপারেশন করাতে রাজি হয়নি। এমনকি অনেকবার সামান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে টাকা দিতে গড়িমসি করছে। মুবিনা বেঁচে থাকলে সব গোপন রহস্য বেরিয়ে আসার ভয়ে এটা করেছে সে। তা নাহলে মুবিনার মৃত্যুর পর সে হাসপাতালে লাশ রেখে পালিয়ে যেতনা। সবকিছু তার পূর্বপরিকল্পিত এটি নিঃসন্দেহে বলা যায়।

তবে নিহত গৃহবধূ মুবিনার শাশুর আলী আহমদের দাবি ভিন্ন; তিনি বলেন, বুধবার রাতে সে নিজের গলায় ব্লেড ও দা চালিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে। তখন আমি ঘুমে ছিলাম। তার চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার পুত্রবধু মুবিনা পাগলামি করছে এবং গলা দিয়ে রক্ত ঝরছে। এসময় আমার ছেলে ঘুম থেকে উঠে এসে তার হাতে থাকা দা’টি কেড়ে নেয় এবং পার্শ্ববর্তী কয়েকজনের সহযোগিতায় আমার পুত্রবধূকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। তিনি বলেন, আমার ছেলে যদি হত্যা করতে চাইত তাহলে কি তার ভাবিকে চিকিৎসা করাতে হাসপাতালে নিয়ে যেত?

মহেশখালী থানার ওসি প্রণব চৌধুরী বলেন, এ ঘটনায় আক্তার হোছন ও অজ্ঞাত দুইতিন জনকে আসামী করে থানায় এজাহের দায়ের হয়েছে। রহস্য উদঘাটনে পুলিশ কাজ করছে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে।