গণহত্যার স্বীকারোক্তি দেয়ার পর মিয়ানমারের দুই সেনা কোথায়?

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৯, ২০২০

ঢাকাটাইমসঃ দুটি সংবাদমাধ্যম ও একটি মানবাধিকার সংস্থার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, মিয়ানমারের দুজন পক্ষ ত্যাগকারী সৈন্য রোহিঙ্গা গণহত্যার স্বীকারোক্তি দেবার পর তাদের দ্য হেগে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

নিউ ইয়র্ক টাইমস. ক্যানাডিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশন ও অলাভজনক সংস্থা ফর্টিফাই রাইটস বলেছে, উত্তর রাখাইন প্রদেশে এই দুজন সৈন্য বহু গ্রামবাসীকে হত্যার পর গণকবর দেয়ার স্বীকারোক্তি দিয়েছে এবং যে ভিডিওতে এই স্বীকারোক্তি তারা দিয়েছে, সেটি এ বছরই মিয়ানমারে ধারণ করা হয়েছে।

গণমাধ্যমগুলোর উদ্ধৃত করা এই ভিডিও রয়টার্স দেখেনি বলে জানাচ্ছে। নিউ ইয়র্ক টাইমস বলেছে তাদের পক্ষে ভিডিওর সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে মন্তব্য জানতে চেয়ে রয়টার্সের করা ফোন কলে কোনো সাড়াও দেয়নি মিয়ানমারের সরকার এবং সেনাবাহিনীর মুখপাত্র।

খবরে বলা হয়েছে. এই দুজন সৈন্য বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির হেফাজতে ছিল। গোষ্ঠীটি রাখইনে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়ছে। আরাকান আর্মির হেফাজতে থাকা অবস্থাতেই স্বীকারোক্তি দেয় তারা। পরে তাদের নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তারা সাক্ষী হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে কিংবা বিচারের মুখোমুখি হতে পারে।

রয়টার্স বলছে, খবরে এটা স্পষ্ট নয়, এই দুজন কী করে আরাকান আর্মির হাতে ধরা পড়লো, কেন তারা কথা বললো এবং কীভাবে এবং কার দায়িত্বে তারা দ্য হেগে পৌঁছালো।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বা আইসিসির একজন মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেছেন, তাদের হেফাজতে এই দুজন নেই। ‘না, এই খবরগুলো সত্য নয়। এই ব্যক্তিরা আইসিসির হেফাজতে নেই’, রয়টার্সকে বলেন ফাদি এল আবদাল্লাহ নামে এই মুখপাত্র।

আইসিসিতে অভিযোগকারী পক্ষ বাংলাদেশের আইনজীবী পায়াম আখাভান, যিনি মূলত একজন কানাডিয়ান আইনজীবী, তিনি বলেন, ‘ওই দুই ব্যক্তি সীমান্তের চৌকিতে এসে তাদের সুরক্ষা দেয়ার জন্য আবেদন করেন এবং ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা এবং ধর্ষণের বিষয়ে স্বীকারোক্তি দেন।’

‘তবে আমি এটুকুই বলতে পারি, এই দুই ব্যক্তি এখন আর বাংলাদেশে নেই,’ রয়টার্সকে তিনি বলেন।

আর আরাকান আর্মির মুখপাত্র খাইন থু খা বলেন, এই দুজন যুদ্ধবন্দী ছিলেন না। তবে তারা কোথায় আছেন সেই প্রসঙ্গে খোলাসা করে কিছু বলেননি। শুধু এটুকু বলেন, তারা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন পীড়নের শিকারদের ‘ন্যায়বিচারের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’।

২০১৭ সালে রোহিঙ্গা মুসলমানদের গণহত্যা ও ধর্ষণের অভিযোগ সবসময়ই নাকচ করে মিয়ানমার। তাদের দাবি, তারা ২০১৭ সালে শুধু সেইসব রোহিঙ্গা জঙ্গির বিরুদ্ধেই অভিযান পরিচালনা করেছে, যারা পুলিশের চৌকিতে হামলা করেছে।

রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক বাংলাদেশে যেতে বাধ্য করা, নিপীড়ন ও অন্যান্য মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের তদন্ত করছে আইসিসি। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে।

তবে এখনো সেখানে কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা হয়নি বা সাক্ষ্যও গ্রহণ করা হয়নি।

আইসিসির কৌঁসুলির অফিস থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘চলমান তদন্ত সম্পর্কে জল্পনা বা খবরের ওপর কোনো প্রকাশ্য মতামত তারা করে না। চলমান তদন্ত কর্মসূচির কোনো সুনির্দিষ্ট দিক নিয়ে আলোচনাও করে না।’ –বিবিসি বাংলা

সীমান্ত বাংলা/৯সেপ্টেম্বর