নিজস্ব প্রতিবেদক,উখিয়া :
কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী ৮ নাম্বার ক্যাম্পে আল ইয়াকিন পরিচয় ধারণ করা সশস্ত্র রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের নানা অপরাধমুলক কর্মকান্ডের কারণে অতিষ্ঠ সাধারণ রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি বালুখালীর পশ্চিমপাড়া, বালুখালীীছড়া ও জুমেরছড়ার স্থানীয় বাসিন্দারাও শংকিত হয়ে পড়েছে।এসব সশস্ত্র রোহিঙ্গারা ইয়াবা,তরল মাদক,স্বর্ণ পাচার কাজে সশস্ত্র প্রহরী হিসেবে ব্যবহার হওয়া ছাড়াও সকল অবৈধ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।এ ছাড়াও সাধারণ রোহিঙ্গাদের নিকট থেকে চাঁদা উত্তোলন, শালিস বাণিজ্য,বিয়ে বাড়ীসহ পারিবারিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান থেকে নিদিষ্ট হারে চাঁদা উত্তোলন করছে।সাধারণ রোহিঙ্গাদের প্রাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী জোরপূর্বক তাদের নিকট স্বল্প মূল্যে বিক্রিতে বাধ্য করা সহ ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বহুমুখী নিপীড়ন করে যাচ্ছে এসব সশস্ত্র রোহিঙ্গারা।তারা দিনের বেলায় লোকচক্ষুর আড়ালে থাকলেও রাতের বেলায় ধারালো দা,কিরিচ,দেশীয় তৈরী সশস্ত্র নিয়ে সংঘবদ্ধ ভাবে ক্যাম্প অভ্যন্তরে অবাধ বিচরণের পাশাপাশি মাদক,ইয়াবা,চোরাচালান নির্বিঘ্নে পাচার করে ক্যাম্পে ঢুকাতে বালুখালীর জুমেরছড়া,পশ্চিমপাড়া ও বালুখালীরছড়া এলাকায়ও অবস্থান নিয়ে থাকে।তাদের এসব সাধারণ রোহিঙ্গা কিংবা স্থানীয়দের চোখে পড়লেও ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চাইনা।
বালুখালীর ক্যাম্প-৮’র ব্লক বি-৪৪ এর আশ্রিত রোহিঙ্গা জমির হোছনের ছেলে মৌলবী আবু বক্কর(৪০) ব্লক বি-৪০ এর ফজল করিমের ছেলে মীরু মাঝি(৪৫,) ব্লক বি-৪০ এর জাবেরের ছেলে ওসমান(৩৮), ব্লক বি-৫০ এর ইয়াছিন প্রকাশ সাবেক চেয়ারম্যান,ব্লক বি-৩২ এর মোঃ সিদ্দিকের ছেলে হেড মাঝি শফিউল্লাহ (৩৩), ব্লক বি-৪০ এর ফজল করিমের ছেলে আয়াজ(৩৭), ক্যাম্প-৩’র ব্লক এএ-১৮ এর মৌলবী মোহাম্মদ নুরের ছেলে মৌলবী ফাহাদ(৩২) এর নেতৃত্বে অন্তত ৪০-৫০ জনের সশস্ত্র গ্রুপ রয়েছে।যারা ক্যাম্প ভিত্তিক শাখা উপশাখা আল ইয়াকিনের ক্যাম্প জিম্মাদার পরিচয় ধারণ করে সাধারণ রোহিঙ্গাদের যা ইচ্ছে তা করে থাকে।ক্যাম্প ভিত্তিক সব বৈধ-অবৈধ ব্যবসা থেকে মাসোহারা আদায়,চোরাচালান ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ,প্রতি পরিবার পিছু মাসিক চাঁদা আদায়,
শালিস-বিচারে টাকা উত্তোলন ছাড়াও মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাধারণ নিরীহ রোহিঙ্গাদের অনেকেই বলেন,উল্ল্যেখিত রোহিঙ্গা সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দাবী পুরণ না করলে অপহরণ করে জানে মেরে লাশ গুম করার হুমকি দিয়ে নির্যাতন করে থাকে।এসব সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস কারো নেই।প্রতিবাদ করলেই মারধর চলে।তাদের হাতে সাধারণ রোহিঙ্গারা অসহায়।
পালংখালী ইউপির ১নং ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত মেম্বার নুরুল আলম সওদাগর বলেন,মাঝেমধ্যে অচেনা সংঘবদ্ধ কিছু রোহিঙ্গার দল গ্রামে রাত গভীরে ঢুকে অবাধ চলাচল করে থাকে বলে লোকমুখে শুনেছি।তারা হয়তো চোরাচালান কিংবা কোন অসৎ উদ্দেশ্যে যাতায়াত করতে পারে।
সাধারণ রোহিঙ্গা এবং স্থানীয়দের দাবী এসব সশস্ত্র রোহিঙ্গাদের গতিবিধি নজরদারি করতঃ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
ক্যাম্পে দায়িত্বরত ৮আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(মিডিয়া) মোঃ কামরান হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেছেন,এ বিষয়ে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হইবে।
সীমান্তবাংলা/রম/০৯ ডিসেম্বর ২০২১