উখিয়ায় নাসিম-বাপ্পুর তান্ডবে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী : প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২১

 

নিজস্ব প্রতিবেদক;

উখিয়ার রত্নাপালং ইউনিয়নের ভালুকিয়া আমতলী গ্রামের নুরুল আলমের ছেলে বাপ্পু ও নাসিমের বিরুদ্ধে চুরি ডাকাতি ও মাদক কারবার সহ বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয়রা জানান, নুরুল আলম দীর্ঘদিন যাবৎ প্রবাস জীবনে থাকলেও তার দুই ছেলে নাসিম (২৩) ও বাপ্পু (২২) তার মা মুর্শিদা বেগমের হাতে গড়ে উঠে সমাজ বিরোধী কার্যকলাপ ও অপশিক্ষায়।

মুর্শিদা বেগমের সাথে বড় বড় মাদককারবারীকে সাথে উঠাবসা ও তাদের সাথে গভীর সম্পর্ক থাকার সুবাধে তার দুই ছেলে জড়িয়ে পড়ে মাদক পাচাররের সাথে। তার এক ছেলে বাপ্পু ইয়াবা নিয়ে বিজিবির হাতে আটক হলেও অপর ছেলে নাসিম বিভিন্ন জায়গায় চুরি ডাকাতির ঘটনায় অনেকবার গণপিটুনি খেলেও তাদের এই অসমাজিক কার্যকলাপ ও মাদকপাচার বন্ধ হয়নি। তাদের ক্ষমতা আর টাকার দাপটে অনেক প্রশাসন ও রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের মেনেজ করে তারা এসব কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

এলাকাবাসী আরো জানান, বাপ্পু বিজিবি ও র‍্যাবের সোর্স পরিচয় দিয়ে নিজেই মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা অল্প সময়ে অনেক টাকার মালিক বনে যায়। যা বিগত বছর দেড়এক আগে দু ভেলা খাবার ও জুটেনি তাদের পরিবারের। বর্তমানে ছয়তলা ফাউন্ডশনে বাড়ি নির্মাণ শুরু করেন। মাসে ৩/৪ টা বিলাসবহুল মোটরসাইকেল বদলায় যা লাখ লাখ টাকা দামের। তাদের এই টাকার উৎস কুথাই প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর দেওয়ার জন্য জোর দাবি জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।

আমতলী এলাকার খালেদা মেম্বার নামে এক মহিলা জানান, বাপ্পু আর নাসিম তারা দুই ভাই মিলে পুরো আমতলী বাসীর বদনাম ছড়িয়েছে যা আমাদের এলাকার মান হানিকর। প্রতিনিয়তে তাদের খবর শুনা যায় এক ভাই ইয়াবা ব্যবসা নিয়ে এলাকায় জগড়া বিবাধ। আরেক ভাই চুরি ডাকাতির ঘটনায়।

তিনি আরো জানান,সোমবার (৯ আগস্ট) আমার বাসার পাশে প্রবাসী নুরুল আমিনের স্ত্রী’ আমিনার বাড়িতে নাসিম নামের ছেলেটি রাত গভীরে ঘরের টিন কেটে ডুকে তাকে মারধর করে নগদ ২০ হাজার টাকা ও ২ ভরি সর্ণ অলংকার নিয়ে পালিয়ে যায়। এ নিয়ে উখিয়া থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করেন তার পরিবার। এখনো তার সুরহা মিলেনি।

আমতলী এলাকার অটো রিকশাচালক মনজুর আলম জানান, নাসিম আর বাপ্পুর কারণে এলাকায় থাকা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।দিন রাতে এলাকাবাসীকে নানান কৌশলে অত্যাচার করে যাচ্ছে। তাদের এক ভাই ডাকাত আরেকভাই ইয়াবা ব্যবসায়ী।

তিনি আরোও বলেন, বাপ্পু নামে ছেলেটি গত এক মাস আগে পারিবারিক একটা ঘটনায় আমার গাড়ির সিটের নিচে ইয়াবা দিয়ে আমাকে ফাসানোর চেষ্টা করেন ভাগ্য ভালো এলাকার লোকজন তাদেরকে হাতে নাতে দেখেন তারা ইয়াবা ডুকাই দিচ্ছে আমার গাড়িতে, পরে বিজিবি আসলে ঘটনা বিস্তারিত জেনে তাদের আটক করার জন্য ধাওয়া করলে তারা কৌশলে পালিয়ে যায়।

একই এলাকার ছেলে বাপ্পুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু শাহাজালাল প্রকাশ( মাম্বুল) বলেন, বাপ্পু আর নাসিম তাদের একটা সিন্ডিকেট আছে যেখানে আমাকেও ভুলবাল বলে তাদের সাথে জড়াইছিল তারা মাদক ব্যবসা, চুরি চিন্তায় সহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ড করেনা এমন কোন কাজ নেই। বড় বড় মাদককারবারীর ইয়াবা পাচারের কন্টাকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পৌছে দিয়ে থাকে মোটা অংকের টাকায়। তাদের ৫/৬ জনের একটি বড় সিন্ডিকেট তারা বিভিন্ন খারাপ কাজের কন্টাক নিয়ে থাকে টাকার বিনিময়ে। আমি তাদের এসব কার্যকলাপ দেখে সেখান থেকে বের হয়ে নিজের ভুলকে শুধরায় নিচি।

স্থানীয় এক ইউপি সদস্য জানান, এলাকায় প্রতিনিয়তে তাদের অপরাধ কর্মকান্ডের কথা শুনা যায় যেদিকে যায় সেদিকে তাদের খবর একদিন ডাকাতির ঘটনা শুনলে আরেকদিন ইয়াবা ব্যবসার টাকার ভাগ ভাটোয়ারা নিয়ে জগড়ার কথা অন্যদিন নিরহ ব্যাক্তিদের ফাসানোর চেষ্টা। এলাকায় দিন দিন বেপোয়া হয়ে উঠেছে তারা। তাদের লাগাম টেনে ধরা উচিত নয়তো এলাকার পরিবেশ ধ্বংস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

রত্নাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খাইরুল আলম চৌধুরী বলেন,বাপ্পু আর নাসিম তাদের একটি সিন্ডিকেট আমতলী এলাকায় চুরি ডাকাতি, মাদককারবারসহ নানান অপরাধমূলক কাজে লিপ্ত হয়ে এলাকায় নিরহ মানুষদের উপর নির্যাতন ও অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের বেপারে বিভিন্ন ধরণের রেকর্ড ও রয়েছে চুরি ডাকাতিসহ মাদককার বারীর। উখিয়া থানায় অনেকেই তাদের বেপারে অভিযোগ দায়ের করেছেন। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহীনির প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হউক।

উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আহমেদ সঞ্জুর মোরশেদ জানান, চুরি ডাকাতি ও মাদককারবারীর যত বড় সিন্ডিকেট হউক না কেন তাদের বিষদাঁত ভেংগে দিতে সকল ধরণের প্রস্তুতি রয়েছে উখিয়া থানা পুলিশের। অপরাধী একদিন না একদিন ধরা পড়বেই। বাপ্পু আর নাসিমের বিষয়ে খতিয়ে দেখছে উখিয়া থানা পুলিশ।

সীমান্তবাংলা / ১৬ আগষ্ট ২০২১