হিমন সরকার বগুড়া(শেরপুর) প্রতিনিধি:
বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় চলমান বর্ষায় বাঙালী নদীতে পানি বৃদ্ধি ও তীব্র স্রোতের কারণে নদীর তীরবর্তী এলাকায় ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে।বিভিন্ন এলাকার অনেক বাড়িঘর বিলীন হয়েছে গেছে নদীগর্ভে। জানা যায়, উপজেলার বাঙ্গালী নদী বেষ্টিত সুঘাট মধ্যভাগ, জোড়গাছা, বিনোদপুর,আওলাকান্দি,কল্যানী,চককল্যানী,চকধলী,ঝাঁজর, বিলনোথার, নলডিঙ্গিপাড়া, চক খানপুর, গজারিয়া,বড়ইতলী,সহ নদী তীরের অনেক এলাকার ফসলি জমি ও বাড়িঘর অনেকটাই এখন বিলীনের পথে। উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের চক কল্যানী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, এই নদী ভাঙ্গনের দৃশ্য। নদী পাড়ের বসবাসরত লোকজন নদীর তীরের ভাঙ্গন কবলের মুখে পড়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে । নদী ভাঙ্গনের কারণে জীবন বাঁচাতে এসব ঘরবাড়ী সরানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে এখন তারা। ইতিমধ্যে নদীর ভাঙ্গনে বেশ কিছু ঘরবাড়ি, ইবতেদায়ী মাদ্রাসা ও রাস্তাঘাট বাঙালি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।অথচ বাঙালি নদীর কোথাও কোন স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হয়নি। বাঙালি নদীর ভাঙ্গনে সর্বস্ব হারানো চক কল্যানী গ্রামের নজরুল, বক্কার, ছামসুল, মজিদ, মহির উদ্দিন, মফিজ সহ অনেকেই বলেন, আমরা গত ৪ বছর যাবৎ নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে বসতবাড়ি হারিয়েছি। এবারো নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়েছি।
প্রতি বছরেই নদী ভাঙ্গনের ফলে আমরা সংসারের ঘাটতি থেকে উঠতে পারছিনা। এতো পরিশ্রম করে চাষাবাদ করেও যদি নদী ভাঙ্গনের কারণে ঘাটতি থেকে না উঠতে পারি তাহলে কিভাবে আমরা চলবো। আমাদের বসতবাড়ি ও গ্রামগুলো রক্ষার জন্য সরকারের কাছে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়া ক্ষতিগ্রস্ত মানুষেরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বগুড়ার সোনাতলা, সারিয়াকান্দি, ধুনট ও শেরপুর উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বাঙালী নদীর ১৯ কিলোমিটার এলাকায় ২২ লটে নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ করার কথা। এছাড়াও সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ওই নদী খনন করা হবে বলে জানা গেছে। এজন্য সরকারের ব্যয় হবে ৩২০ কোটি টাকা। এ কাজের জন্য বরাদ্দ পাওয়া গেছে মাত্র ১৫ কোটি টাকা। ইতিমধ্যেই বগুড়ার ঐ ৪ উপজেলায় নদীর তীর সংরক্ষণের জন্য সিসি ব্লক নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এখনো পর্যন্ত শেরপুর উপজেলায় নদী খননের কাজ শুরু হয়নি বলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে। এদিকে বাঙালী নদীর অব্যাহত ভাঙনে চলতি বর্ষা মৌসুমে শেরপুর উপজেলার বিস্তৃীর্ণ এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। বাঙালি এবং করতোয়া নদীর তীর সংরক্ষণের জন্য সম্প্রতি দরপত্র আহবান করা হলেও শুরু হয়নি বাঁধ রক্ষার কোন কাজ।
ফলে বাঙালী নদীর অব্যাহত ভাঙনে বিস্তৃীর্ণ এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করে জনসাধারণ। এ বিষয়ে বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাহবুবুর রহমান জানান,বগুড়ার ধুনট উপজেলা থেকে ১৯ কিলোমিটার বাঙালী নদী ভাঙনরোধে তীর সংরক্ষণ ও নদী খননের কাজ শুরু হয়েছে।সেনাবাহিনী নদী খননের কাজ তদারকি করবেন।নদীর তীর সংরক্ষণের কাজের জন্য ঠিকাদার নিযুক্ত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা সিসি ব্লক তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বন্যার পানি নেমে গেলেই খননকাজ বা তীর সংরক্ষণ কাজ শুরু হবে।
সীমান্তবাংলা/ ০৬ সেপ্টেম্বর