রামুতে প্রবল বর্ষণে পানিবন্দি অসংখ্য ঘরবাড়ী  

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২৩

 

কামাল শিশির, রামু

রামুর বিভিন্ন এলাকায় কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণে অনেক বসত বাড়ি পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

অপরদিকে রাজারকুল ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের মৌলভীপাড়ায় বন্যার পানিতে ডুবে প্রাণ হারিয়েছে ২ বছর বয়সী শিশু সামিয়া। সোমবার, বিকাল ৫ টার দিকে ওই এলাকার সৌদী প্রবাসী মৌলভী ওবাইদুল হকের শিশু কন্যা বর্ষণের ফলে জমে থাকা পানিতে ডুবে প্রাণ হারান।
শিশুটির মা উম্মে হাবিবা জানান- শিশু সামিয়া বাড়ির ভেতরে খেলা করছিলো। এক পর্যায়ে শিশুটি বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়া বাড়ির উঠোনে পড়ে গিয়ে প্রাণ হারায়।

এছাড়া বিভিন্নস্থানে পাহাড় ধ্বস, দেয়াল ধ্বস, গাছপালা পড়ে একাধিক বসত ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

উপজেলা প্রশাসন এবং ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে মাইকিং করে এলাকার জনসাধারণকে বর্ষণের ফলে সৃষ্ট বন্যা, জলাবদ্ধতা ও পাহাড় ধ্বস থেকে জানমাল রক্ষায় সচেতন করা হচ্ছে। বর্ষণের ফলে কৃষকদের সদস্য রোপন করা বিপুল রোপা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এ কারণে শত শত কৃষক চাষাবাদ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।

টানা বর্ষণের ফলে রামুতে বাঁকখালী নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রামুতে কর্মরত পানি উন্নয়ন বোর্ডের গ্রেস রিডার রুহুল আমিন জানান- বাঁকখালী নদীতে পানির বিপদ সীমার চিহ্ন ৫ দশমিক ২৮ মিটার, কিন্তু সোমবার সন্ধ্যা থেকে পানি বিপদ সীমা অতিক্রম করে ৫ দশমিক ৬৮ মিটারে প্রবাহিত হচ্ছিলো।

কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল আলম জানিয়েছেন- ইউনিয়নের ৫ শতাধিক বসত বাড়ি পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া অসংখ্য বসত ঘর ও মাছের খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউনিয়নের মনিরঝিল, বৈলতলা, চরপাড়া, গাছুয়াপাড়া, ডিককুল, ডেপারকুল, লামারপাড়াসহ আরও কয়েকটি গ্রাম পানিতে একাকার হয়ে গেছে।

কয়েকটি বাড়ি থেকে পানিবন্দি অবস্থায় লোকজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া পাহাড়ের উপরে বসবাসকারিদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে ও সতর্ক থাকতে মাইকিং করা হয়েছে।

চাকমারকুল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সিকদার জানিয়েছেন- কয়েকদিনের প্রবল বর্ষনে ইউনিয়নের ৩ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এরমধ্যে নতুন চরপাড়া, ফুয়ারচর, নাসিরাপাড়া, পূর্ব মোহাম্মদ পুরা, উত্তর চাকমারকুল, পশ্চিম চাকমারকুল, আলী হোসেন সিকদারপাড়ার একাংশ, জালাইলতলীসহ বিভিন্নস্থানে লোকজন পানিবন্দি হয়ে মানবেতর সময় পার করছে জারাইলতলী এলাকা গাছ পড়ে একটি বসত ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে দূর্গত লোকজনকে উদ্ধার ও প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া মাইকিং করে লোকজনকে সতর্ক করা হয়েছে।

দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খোদেস্তা বেগম রীনা জানিয়েছেন- অতিবর্ষনের ফলে ইউনিয়নের ৫টিরও বেশী গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে ২ শতাধিক বসত বাড়ি পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পাহাড় ধ্বস ও বন্যার ক্ষয়ক্ষতি রোধে জনসাধারণকে সজাগ থাকার জন্য পরিষদের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে।
এছাড়াও রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া, গর্জনিয়া, ফতেখাঁরকুল, রশিদনগর, জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নে বর্ষণের কারণে অনেক বসত বাড়ি পানিবন্দি থাকার খবর পাওয়া গেছে।

রামু উপজেলা প্রসাশনের পক্ষ থেকে এ নিয়ে
যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাহমিদা মোস্তফা স্বর্ণা। তিনি সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে আসার জন্য অনুরোধ জানান।