রাজাকার পুত্র মেয়র মকসুদের রোষানলে বেতন-ভাতা বঞ্চিত কাউন্সিলর ছালামত উল্লাহ!

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: আগস্ট ২, ২০২১

 

এন আলম আজাদ;

কক্সবাজারের মহেশখালী পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড় কাউন্সিলর ছালামত উল্লাহ গত ৩বছর ধরে পৌরসভা থেকে সম্মানী ভাতা না পাওয়ায় মহেশখালী পৌরসভার মেয়র ও রাজাকার পুত্র মকসুদ মিয়ার বিরুদ্ধে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে বলে জানা গেছে।

রবিবার (১ আগষ্ট) লিখিত অভিযোগপত্রটি জেলা প্রশাসক বরাবর দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পৌর কাউন্সিলর ছালামত উল্লাহ।
তিনি জানান, বিগত ৩বছর আমাকে পৌরসভা থেকে সম্মানী ভাতা দিচ্ছেনা মেয়র মকসুদ মিয়া । আমি পৌরসভার বিভিন্ন অপকর্ম ও নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় আমার সম্মানী ভাতা দিচ্ছে না।তার নানা অনিয়ম দূর্নীতির ফিরিস্তির বিরুদ্ধে আমার দৃঢ় অবস্হান ছিল সব সময়।মেয়র সেটাকে পুঁজি করে আমাকে তার রোষানলে আবদ্ধ করে।কাউন্সিলর জানান,মেয়র স্থানীয় বাজার ইজারা না দিয়ে সরকারি খাস কালেকশন বলে নিজের হাতে রেখেছে। কোন কাজে টেন্ডার ইস্যূর সময় কাউকে না জানিয়ে নিজের মতো করে যে কোন কাজ নিজের হাতে রেখে কাজ চালান। এইসব বিষয় নিয়ে কথা বলায় আমাকে নিয়ে গিয়ে বেশ কয়েকবার মারধরসহ সস্মানহানী করেছে এবং আমাকে পৌরসভার কাউন্সিলরদের সম্মানী ভাতা থেকে বঞ্চিত রেখেছে।
তিনি আরো জানান, আমি পৌর ওয়ার্ড় আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়াতে তার সহ্য হচ্ছেনা কারণ সে জামায়াত থেকে আওয়ামীলীগে যোগদান করে আমাদের মতো তৃনমুল আওয়ামী সদস্যদের নাজেহাল করছে। আমি এর সুষ্ট বিচার দাবি করছি ও আমার প্রাপ্য সম্মানী পাওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি।
বর্তমান পৌর মেয়র মকসুদ মিয়ার ছেলে ইয়াবার সাথে সম্পৃক্তা আছে বলেও লিখিত অভিযোগে জানানো হয়।
মহেশখালী পৌরসভার দায়িত্বরত সচিব নুর মোহাম্মদের কাছে কেন কাউন্সিলর ছালামত উল্লাহকে সম্মানী ভাতা প্রদান করা হচ্ছে না জানতে চাইলে তিনি মেয়রের সাথে কথা বলতে বলেন।
মহেশখালী পৌর মেয়র মকসুদ মিয়াকে এব্যাপারে জানতে মোবাইলে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশিদ জানান, তিনি মিটিং এ আছেন।
এদিকে গত নির্বাচনের সময় মহেশখালী পৌরসভার মেয়র মকসুদ মিয়াকে যুদ্ধাপরাধী, মানবতাবিরোধী অপরাধী, কুখ্যাত রাজাকারের সন্তান ও মাদক ব্যবসায়ী বলেছেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মেহেদী হাসান। আর এ কারণেই তৎসময়ের নির্বাচনে তার আওয়ামী লীগের দলীয় নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছিল।
এরপরেও অদৃশ্য ক্ষমতাবলে নৌকা প্রতীক নিযে নির্বাচন করে মেয়র নির্বাচিত হয়। নির্বাচনের আগে একই বছরের ১৬ মার্চে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটি ও মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মের যৌথ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মেহেদী হাসান বলেছিলেন, কক্সবাজার জেলার যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় ২২ নাম্বারে অন্তর্ভুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী, চিহ্নিত রাজাকার হাশেম শিকদারের ছেলে, মাদক ব্যবসায়ী, কালোবাজারি, ভূমিদস্যু মকসুদকে গত ১৩ মার্চ অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ড মহেশখালী পৌরসভার মেয়র পদে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি তখন প্রচার হওয়ার পর তারা সংবাদ সম্মেলন করে। উল্লেখ্য ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মকসুদের পিতার মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধ কর্মকাণ্ড, ধর্ষণ, লুটতরাজসহ সকল অপকর্ম সবাই জানে এমনকি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলাটি চলমানও রয়েছে।

তাছাড়া মকসুদের পিতাসহ একই পরিবারের মোট নয় জন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এজহারভুক্ত আসামিও। পারিবারিকভাবে তারা স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবির-বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত। যার সত্যতা ও তাদের অপকর্ম ওই এলাকার জনসাধারণের কাছ থেকেই তথ্য নিলে আপনারা বিস্তারিত জানতে পারবেন যোগ করেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যদি একজন স্বীকৃত রাজাকারের ছেলে ও মাদক ব্যবসায়ীকে দলীয় মনোনয়ন দেয় তবে সেটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও হৃদয়বিদারক বলে জানানো হয়েছিল সেই সময়ের সংবাদ সম্মেলনে।
পৌর মেয়র মকসুদ মিয়া ২০১৬ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন।একইভাবে ২০২১ সালে এপ্রিলে হওয়া নির্বাচনে আবারো নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটি মকসুদ মিয়াকে রাজাকারপুত্র আখ্যায়িত করে মনোনয়ন বাতিলের জন্য সংবাদ সম্মেলন করেছিল।তাও কোন অদৃশ্য কারণে সরকারের দৃষ্টি থেকে বাদ পড়ে যাওয়ায় হতবাক মহেশখালীর স্বাধীনতার চৈতনাধারী জনসাধারণ সহ সচেতন মহল।

সীমান্তবাংলা / ২ আগষ্ট ২০২১