বালুখালীতে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ৯ হাজার রোহিঙ্গা পরিবার পাচ্ছে নতুন ঘর .

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: জুন ৪, ২০২১

 

নিজস্ব সংবাদদাতা সীমান্তঃ

মিয়ানমার থেকে বাস্তচ্যুত হয়ে আসা আশ্রিত উদ্বাস্তুদের বালুখালীর ক্যাম্প ৮ ও ৯ এ বিগত ২২ মার্চ ঘটে যাওয়া ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি।

ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৯ হাজার পরিবারকে ‘আশ্রয়ণ’ দিচ্ছে। ইতোমধ্যে ১ হাজার ‘আশ্রয়ণ’ নির্মাণ কাজ শুরু করেছে সংস্থাটি।জানা গেছে, প্রাথমিক পর্যায়ে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের অফিস (আরআরআরসি) ও রেড ক্রিসেন্ট যৌথভাবে ৮শত পরিবারের জন্য তাঁবু স্থাপনসহ ৭শত টি ‘অস্থায়ী আশ্রয়ণ’ নির্মাণ করে। রেড ক্রিসেন্টের পপুলেশন মুভমেন্ট অপারেশনের আওতায় কাতার রেড ক্রিসেন্টের অর্থায়নে ৭৫ টি ও ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস অ্যান্ড রেডক্রিসেন্ট সোসাইটিসের অর্থায়নে ৯শত ২৫ টিসহ মোট ১ হাজার পরিবারের জন্য অপেক্ষাকৃত অধিক শক্তিশালী আশ্রয়ণ নির্মাণ করা হচ্ছে। বাঁশ, লোহা, কাঠ ও অন্যান্য সামগ্রীর সমন্বয়ে, শেল্টার সেক্টর, সাইট ডেভেলপমেন্ট ও আরআরআরসি এর অনুমোদিত নকশায় নির্মিত এই আশ্রয়ণগুলো পূর্বের আশ্রয়ণ অপেক্ষা অধিক টেকসই ও দুর্যোগ সহনশীল এবং প্রশস্ত।

বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি কক্সবাজারের হেড অব অপারেশন এম.এ হালিম বলেন, “কক্সবাজারে নিয়োজিত মানবিক সংস্থাসমূহের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা খুব অল্প সময়েই প্রয়োজনীয় সেবাসমুহ প্রদানে সক্ষম হয়েছি। বর্তমানে ১ হাজার আশ্রয়ণ নির্মাণের কাজ চলছে। সামনের দুর্যোগ ও বর্ষার মৌসুম মাথায় রেখে এই সব আশ্রয়ণ পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে দুর্যোগ পরিস্থিতিতেও ক্যাম্প জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা কিছুটা হলেও নিশ্চিত হবে বলে আশা করা যায়।

আগামী ৩০ জুন নাগাদ এই প্রকল্প সম্পূর্ণ বাস্তবে রূপ নেবে।”তিনি বলেন, “আরআরআরসি ও সাইট ম্যানেজমেন্ট আমাদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। অধিকতর দুর্যোগপ্রবণ এলাকা হিসাবে কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় প্রবল বর্ষণ ও ভুমিধ্বসের প্রবণতা রয়েছে। এর ফলে প্রতিবছরই এই মৌসুমে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়। আশা করছি এই দুর্যোগ -সহনশীল আশ্রয়ণ এবছর এই ক্ষতির পরিমান ও দুর্ভোগ হ্রাস করতে সহায়তা করবে।”
২০১৭ সালে শুরু হওয়া চলমান পপুলেশন মুভমেন্ট অপারেশনের অংশ হিসাবে, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, আইএফআরসি এবং অন্যান্য দেশের রেড ক্রস রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সহায়তায় ক্যাম্পে বসবাসকারী এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর উভয়কেই স্বাস্থ্যসেবা, পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি; আশ্রয়ন, জীবিকা ও মৌলিক চাহিদা এবং দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কার্যক্রমের পাশাপাশি নারী ও সর্বাধিক ঝুঁকিগ্রস্ত সম্প্রদায়ের সুরক্ষা সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ২০১৭ সালে অপারেশন শুরু থেকে এযাবত, বিডিআরসিএস প্রায় দশ লক্ষ মানুষকে মানবিক সহায়তা প্রদান করেছে।
গত ২২ মার্চ অগ্নিকাণ্ডের সাথেসাথে এগিয়ে যায় রেড ক্রিসেন্টের কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবীগণ। তারা নেভানোয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তাতে শেষ নয়- ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, প্রাথমিক চিকিৎসা ও মনোসামাজিক সহায়তা, প্রাথমিক আশ্রয়ণ, জরুরী খাদ্য সরবরাহসহ পবিত্র রমযান মাসের বিশেষ ফুড প্যাকেজ সরবরাহ ও অন্যান্য সেবা দিয়ে আসছে। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে খাদ্যদ্রব্য নিয়ে ৫১ হাজার ৭২৬ পরিবার ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ও সেবা নিয়ে সর্বমোট ৭২ হাজার ২০০ ক্যাম্প ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মাঝে সেবা পৌঁছে দিয়েছে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি।

সীমান্তবাংলা / ৪ জুন ২০২১