চকরিয়ায় রেজিষ্ট্রি অফিসে দুদকের অভিযান, সিন্ডিকেট দুর্নীতিবাজরা আতংকে

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: এপ্রিল ২, ২০২১

 

এন আলম আজাদ,কক্সবাজার

কক্সবাজারের চকরিয়া সাব রেজিস্ট্রার ও অফিস মোহরারকে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের একটি অভিযানিক দল।

এ সময় তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছে ঘুষ লেনদেনের ৬ লাখ ৪২ হাজার ১০০ টাকা।

গতবৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২–এর সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিনের নেতৃত্বে চকরিয়া সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে এ অভিযান পরিচালিত হয়।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন, চকরিয়ার সাব রেজিস্ট্রার মো. নাহিদুজ্জামান (৩১) ও অফিস মোহরার দুর্জয় কান্তি পাল (৩৮)।

নাহিদুজ্জামান নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার উত্তর নাড়িবাড়ি এলাকার বাসিন্দা। দুর্জয় কান্তি পালের বাড়ি কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুলে। অভিযানের সময় অফিস সহকারী শ্যামল বড়ুয়া কৌশলে পালিয়ে যান।

দুদকের চট্টগ্রাম-২–এর সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন বলেন, সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে ৬ লাখ ৪২ হাজার ১০০ টাকা জব্দ করা হয়েছে।

এর মধ্যে সাব রেজিস্ট্রার নাহিদুজ্জামানের ব্যবহৃত স্টিলের লকার থেকে ১ লাখ ৯২ হাজার ৫৫০ টাকা, অফিস মোহরার দুর্জয় কান্তি পালের ড্রয়ার থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা ও শ্যামল বড়ুয়ার ড্রয়ার থেকে ২ লাখ ৮৯ হাজার ৫৫০ টাকা জব্দ করা হয়।

এসব টাকা বৃহস্পতিবার জমি রেজিস্ট্রির সময় অবৈধ লেনদেন হলেও এসব টাকার কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি তারা।

দুদক কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন আরও জানান, ওই তিনটি ড্রয়ার থেকে ঘুষ লেনদেনের হাতের লেখা ৪১টি স্লিপও জব্দ করা হয়েছে। শুক্রবার (২ এপ্রিল) গ্রেফতারকৃতদের আদালতে উপস্হাপন করা হবে।

দুদক সূত্রে জানা যায়, দুদকের হটলাইনে (১০৬) চকরিয়া সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের এক ভুক্তভোগী ঘুষ লেনদেনের বিষয়ে অভিযোগ করেন।

এরপর দুদকের একটি গোয়েন্দা দল বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছদ্মবেশে সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে অবস্থান নেয়।

দলটি সরেজমিনে ঘুষ লেনদেনের চিত্র দেখে। পরে সন্ধ্যা ছয়টা থেকে আনুষ্ঠানিক অভিযান শুরু হয়। সেই অভিযান শেষ হয় রাত তিনটায়।

এদিকে অসংখ্য ভুক্তভোগী দূর্নীতির আখড়া হিসাবে বহুল পরিচিত চকরিয়া সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে দুদকের এই অভিযানকে সাধুবাদ জানিয়েছে।তারা অভিযানের গ্রেফতার থেকে কৌশলে পালিয়ে যাওয়া অফিস সহকারী শ্যামল বড়ূয়াকে দ্রুত গ্রেফতার পূর্বক আইনের কাঠগড়ায় দাড় করানোর পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে কর্মকালীন নানা অনিয়ম-দূর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অঢেল টাকা ও ঙ্গাত বহির্ভূত সম্পদ উদ্বারের দাবি জানিয়েছে।

চকরিয়া সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসেই শুধুই নয় জেলার অন্য ৭ টি সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে প্রতিনিয়তই সরকারী রেজিষ্ট্রিশন নীতিমালা ভঙ্গকরে কতিপয় অসাধু সহকারী ও বিভিন্ন পদবীর কয়েকজন সিন্ডিকেট ভিক্তিক দূর্নীতিতে নিমজ্জিত। এরা সেবাপ্রার্থীদের জিন্মি করেই দলিল রেজিষ্ট্রি সহ ১১টি কর্ম সম্পাদনে অবৈধ উৎকোচ গ্রহন করছে।এসব সিন্ডিকেট ভিক্তিক দুর্নীতিবাজরা এখন অঢেল অর্থবিত্তের মালিক।

চকরিয়া অফিসে দূদকের অভিযান শোনে অনেক রথিমহারথি দুর্নীতিবাজ মুহুর্তেই অফিস ছেড়ে আত্ন গোপনে চলে গেছে।তাদের কেউ কেউ বাসাবাড়িতেও নেই।এই অভিযান রেজিষ্ট্রি অফিসের দুর্নীতিবাজদের মধ্যে গ্রেফতার শংন্কা বিরাজ করছে।তারাও গ্রেফতার হতে পারেন এমন আশংকায় সিন্ডিকেট দুর্নীতিবাজরা নিজ উপজেলা ছেড়ে কেউ জেলা সদরে আবার কেউ চট্টগ্রামে আত্ন গোপনে রয়েছেন বলে দায়িত্বশীল সুত্র নিশ্চিত করেছে।

সীমান্তবাংলা/ শা ম/ ২ এপ্রিল ২০২১