মালয়েশিয়ায় ৯২ বাংলাদেশির বিচারে বসছে বিশেষ আদালত

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৬, ২০২০

প্রবাস ডেস্ক: অবৈধ অভিবাসীদের নিজ দেশে ফিরতে ‘ব্যাক ফর গুড’ কর্মসূচির মেয়াদ শেষ হতে না হতেই মালয়েশিয়ায় শুরু হয়েছে অভিযান। পাঁচ মাস সুযোগের পরও যারা ফিরতে ব্যর্থ হয়েছে তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে চিরুনি অভিযানের মাধ্যমে।

এই অভিযানের অংশ হিসেবে বছরের শুরুর দিনই ৭৮ বাংলাদেশিসহ ২২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর শনিবার রাতে মালয়েশিয়ার পেরলিচের কাংগার এলাকায় কয়েকটি কনস্ট্রাকশন সাইটে অভিযান চালিয়ে ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করে অভিবাসন বিভাগ। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে বাংলাদেশের ১৪, ইন্দোনেশিয়ার ৯ এবং মায়ানমারের ২ জন।

মোট ৩১৫ অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করে রাখা হয়েছে ডিটেনশন ক্যাম্পে। এর মধ্যে ৯২ বাংলাদেশি রয়েছেন। তাদের বিচার করতে সোমবার (৬ জানুয়ারি) দুটি বিশেষ আদালত বসছে। একটি বসবে দেশটির সেলাঙ্গর রাজ্যের সিমুনিয়ায় অন্যটি কেডা লঙ্কাতে।

দেশটির সরকারি সংবাদ সংস্থা বার্নামার খবরে বলা হয়েছে, অভিবাসন বিভাগের আইনের ১৯৫৯ ধারায় অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেপ্তারের পর বিশেষ আদালতে দ্রুত বিচার পরিচালনা করা হবে।

দেশোটির ইমিগ্রেশন বিভাগ জানিয়েছে, যেসব অবৈধ কর্মী সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নেননি, তাদের আটক করা হবে। মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন আটক কর্মীদের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা চালাচ্ছে।

ইমিগ্রেশন বিভাগের প্রধান খায়রুল দাজাইমি দাউদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ১ আগস্ট থেকে সরকারের দেয়া সাধারণ ক্ষমা কর্মসূচির সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন দেশের ১ লাখ ৯০ হাজার ৪৭১ জন দেশে ফিরে গেছেন।

এর আগে ২৯ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাধারণ ক্ষমার মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য আহ্বান জানালেও তা আমলে নেয়নি দেশটির সরকার।

মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তান শ্রি মহিউদ্দিন ইয়াছিন সাংবাদিকদের বলেন, অবৈধ অভিবাসীদের বিভিন্ন সুযোগ দেয়ার কারণেই অবৈধ অভিবাসীদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকার আর কোন সুযোগ দিতে চায় না।

দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পাঁচটি রুপরেখার ভিত্তিতে দেশজুড়ে অবৈধ অভিবাসীবিরোধী অভিযান পরিচালিত হবে। আর সেই অভিযানে যারা আটক হবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেবে সরকার।

তিনি আরও বলেন, মালয়েশিয়াতে অবৈধ অভিবাসী সমস্যা একটি জাতীয় সমস্যা যা এখনো সম্পূর্ণভাবে মোকাবেলা করা সম্ভব হয়নি। এটি স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এটি শুধু জাতীয় ও সীমান্ত নিরাপত্তাকেই বিঘ্নিত করে না বরং দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর ব্যপক প্রভাব ফেলছে।

উল্লেখ্য, অবৈধ অভিবাসীদের বৈধ হওয়ার জন্য সরকার ২০১৭ সালে সুযোগ দেয়। শেষ হয় ২০১৮ সালের ৩০ আগস্ট। এতে বৈধ হওয়ার সুযোগ পেয়ে বহু বাংলাদেশি নিবন্ধিত হয়েও প্রতারনার শিকার হয়েছেন অনেকে। এরপর ২০১৯ সালের ১ আগস্ট থেকে অবৈধ অভিবাসীদের নিজ দেশে ফিরতে সরকার ব্যাক ফর গুড কমসুচি চালু করে। আর এ কর্মসূচী শেষ হয়েছে গত ৩১ ডিসেম্বর।