মহেশখালীতে মোখার তান্ডবে তিন শ্রমিকের মৃত্যু; ক্ষতিগ্রস্ত এলএনজি টার্মিনাল

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: মে ১৫, ২০২৩

 

জুয়েল চৌধুরী, মহেশখালী:
কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউপিতে লবণ সংরক্ষণ ও পলিথিন আনতে গিয়ে ঘূর্ণিঝড় মোখা’র কবলে পড়ে তিন লবণ চাষীর মৃত্যু হয়েছে।

তারা হলেন— উপজেলার হোয়ানক ইউপির পশ্চিম কালাগাজীর পাড়া গ্রামের মৃত আবুল ফজলের পুত্র মোহাম্মদ রিদুয়ান, একই ইউপির পানিরছড়া গ্রামের মৃত মদনের পুত্র মো: আনছার উল্লাহ ও আকতার কবিরের পুত্র মো: নেছার উদ্দিন।

জানা গেছে, ১৪ মে (রবিবার) সকাল নয়টায় আনুমানিক পঞ্চাশ জনেরও বেশি লবণ চাষী পলিথিন ও লবণ সংরক্ষণে মাঠে যায়। ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রচন্ড বাতাসে কয়েকজন ঠান্ডায় অবচেতন হয়ে পড়লে পাশ্ববর্তী কয়েকজন চাষী তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকাল সাড়ে চারটায় রিদুয়ানের মৃত্যু হয়। অন্যদের মধ্যে নেছার উদ্দিন ও আনছার উল্লাহকে অনেক খোঁজাখুজির পর লবণ মাঠ থেকে রাত এগারটায় তাদের মরদেহ উদ্ধার করে এলাকাবাসী। এ সময় সোনা মিয়া নামের আরেকজনকে অবচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে মহেশখালী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সে সুস্থ আছে বলে জানা গেছে।

হোয়ানকের ইউপি চেয়ারম্যান মীর কাসেম চৌধুরী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, মৃত ব্যক্তিদের স্ব স্ব পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং এখনো কয়েকজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।

লবণ মাঠে উপস্থিত থাকা লোকমান হোছাইন জানান, সকালে ঘূর্ণিঝড় মোখার যখন একটু আধটু প্রভাব শুরু হচ্ছিল ঠিক সে সময়ে আমরা যে যার মত করে উৎপাদিত লবণ গর্তে সংরক্ষণ করতে যায়। আমরা সারাদিন বাতাস আর বৃষ্টিতে ভিজে কাজ করছিলাম। কাজ শেষে বাড়ি ফেরার সময় আমি ও আরো কয়েকজন অসুস্থতা বোধ করি। পথিমধ্যে আমি বাড়ি পৌঁছে অজ্ঞান হয়ে যায়। হুঁশ ফিরলে নিহতদের মৃত্যুর খবর শুনি।

এ বিষয়ে মহেশখালী ইউএনও মোহাম্মদ ইয়াছিনকে ফোনে না পাওয়ায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

মোখার প্রভাবে মহেশখালীর এলএনজি টার্মিনাল ক্ষতিগ্রস্ত

ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে মহেশখালীর দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা মেরামত করতে ২ থেকে ১৫ দিন সময় লাগবে বলে জানান বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
যার কারণে আগামী দুই দিন ৪০০ ঘনমিটার গ্যাসের ঘাটতি দেখা দেবে। পাশাপাশি আগামী দুই দিন বিদ্যুৎ সরবারহ ব্যাহত হতে পারে বলে জানান।

প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, ঘূর্ণিঝড়ের মোখার প্রভাবে মহেশখালীর দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনালের একটি তার জায়গা থেকে কিছুদুর ভেসে যায়। যেটি মেরমাত করতে ১৫ দিনের মতো সময় লেগে যাবে। অন্যটি দুই দিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে।
এর আগে, শুক্রবার রাত ১১টা থেকে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে কক্সবাজারের মহেশখালীর দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ সাময়িক বন্ধ থাকার কথা জানায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।

শুক্রবার রাতে মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পরিস্থিতি অনুকূল হওয়ার পর তা পুনরায় চালু করা হবে। তবে চট্টগ্রাম, মেঘনাঘাট, হরিপুর ও সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ বা আংশিক চালু থাকতে পারে।

এ দুই টার্মিনালের মাধ্যমে এলএনজি কার্গো থেকে আমদানি করা এলএনজি দেশে গ্যাসের জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হয়। গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকার ফলে শনিবার রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ সরবারহ ব্যাহত হয়।