চার যুগ পর বাড়ি ফিরে উচ্ছ্বসিত মোল্লা

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২১

সীমান্তবাংলা ডেক্স :  দীর্ঘ ৪৮টি বছর এফডিসিতে কাটিয়ে অবশেষে নিজের বাড়িতে ফিরে গেলেন আব্দুল মান্নান মোল্লা। ১৯৭২ সাল থেকে তিনি ফিল্মপাড়ায় ঝালমুড়ি বিক্রি করে আসছিলেন। নতুন-পুরোনো সব শিল্পীরাই তার ঝালমুড়ির ভক্ত ছিলেন। সবার কাছে মোল্লা নামে পরিচিত এই বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষটি বহু বছর ধরে এফডিসির মসজিদে বিনা বেতনে খাদেম হিসেবেও কাজ করেছেন।

এই মোল্লা এবং তার ঝালমুড়ি- দুটোই প্রিয় ছিল অভিনেতা-অভিনেত্রী থেকে শুরু করে এফডিসিতে কর্মরত সকলের কাছে। হয়তো আরও কয়েকটা বছর অতি আপন এই জায়গাটিতে থাকার ইচ্ছা ছিল তার। কিন্তু একটি হাত প্যারারাইজড হওয়া এবং ঝালমুড়ি বিক্রি আগের থেকে অনেক কমে যাওয়ায় বাধ্য হয়েই বাড়ির পথ ধরতে হয়েছে মোল্লাকে।

গেল শনিবার (৭ জানুয়ারি) জন্মস্থান কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার মির্জাপুর গ্রামে ফিরে গেছেন আব্দুল মান্না মোল্লা। তাকে সম্মানের সঙ্গে বাড়ি পাঠাতে এফডিসিতে মোল্লার মুড়ি উৎসবের আয়োজন করেছিলেন কয়েকজন সহৃদয়বান বিনোদন সাংবাদিক। গত ২৯ থেকে ৩১ জানুয়ারি বেলা ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে সেই মুড়ি উৎসব। উদ্দেশ্য ছিল মোল্লার জন্য কিছু অর্থ সংগ্রহ করা।

ওই মুড়ি উৎসবের আয়োজনে যারা ছিলেন তারা হলেন- সাংবাদিক মাজহার বাবু, আহম্মেদ তেপান্তর, রাহাত সাইফুল, এ এইচ মুরাদ, আসিফ আলম, রঞ্জু সরকার ও রুহুল আমিন ভূঁইয়া। সফল হয় তাদের মহৎ প্রচেষ্টা। ভালো সাড়া মেলে মোল্লার মুড়ি উৎসবে। সেখান থেকে তিন দিনে মোট সংগ্রহ হয় এক লাখ ৮১ হাজার ৭০০ টাকা। যেটা শনিবার মোল্লাকে বিদায় জানানোর সময় তার হাতে তুলে দেয়া হয়।

এদিন মোল্লাকে শেষ বিদায় জানাতে মুড়ি উৎসবটির আয়োজক সাংবাদিকদের সকলেই উপস্থিত ছিলেন। আরও ছিলেন বাংলাদেশে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, মহাসচিব বদিউল আলম খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক কাবিরুল ইসলাম রানা, আব্দুস সালাম এবং অভিনেত্রী সামিনা বাশার। মোল্লার শেষ বিদায়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তারা।

বাড়ি ফিরে মুঠোফোনে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন আব্দুল মান্নান মোল্লা। বলেন, ৪৮ বছর পর বাড়ি ফিরতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। পাশাপাশি তিনি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান সেসব সাংবাদিক ও সংস্কৃতি কর্মীদের, যাদের সহযোগিতায় তার দুর্দিনে তাকে সম্মানের সঙ্গে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।

মোল্লা এও জানান, ইতোমধ্যে তার বাড়ি পাশে একটি দোকান নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। তিনি আশা করছেন, চলতি মাসেই নতুন দোকানে বসতে পারবেন। আবার নতুন করে জীবন শুরু করতে পারবেন। এ জন্য তিনি সবার কাছে দোয়াও চেয়েছেন।

মোল্লার মুড়ি উৎসবে যারা আর্থিক সহায়তা করেছেন

প্রথম দিন: চিত্রনায়ক আলমগীর, জায়েদ খান, প্রযোজক আলিমুল্লাহ খোকন, ফরমান আলী, প্রযোজক জাহাঙ্গীর, পরিচালক শাহ আলম কিরন, শাহীন সুমন, সাইমন তারিক, আরিফুর জামান আরিফ, জসিম উদ্দিন জাকির, আবু রায়হান জুয়েল, চিত্রনায়িকা মৌমিতা মৌ, তানিন সুবাহ, অরিন, অভিনেতা হারুন রশিদ, আব্দুল হক, সাংবাদিক প্রতীক আকবর, এসকে মিডিয়া ও পুলিশ কর্মকর্তা আল মামুন।

দ্বিতীয় দিন: অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস, নাসরিন, চিত্রনায়িকা নিপুন, বিপাশা কবির, অধরা খান, তানহা মৌমাছি, শাহ হুমায়রা সুবাহ, আসমা ঝিলিক, চিত্রনায়ক ইমন, বাপ্পী চৌধুরী, আদর আজাদ, প্রযোজক-নায়ক মুন্না, হৃদয় চৌধুরী, পরিচালক শামীমুল ইসলাম শামীম, রফিক সিকদার, শফিক হাসান, নাসির উদ্দিন মাসুদ, প্রযোজক রাজিব সারোয়ার, রিজভী, নজরুল রাজ, এস এইচ ভিশন, সহকারী পরিচালক সমিতি, প্রযোজক শেখ সানোয়ার ও রুবেল।

সমাপনী দিন: অভিনেত্রী অঞ্জনা সুলতানা, প্রয়াত মান্নার স্ত্রী শেলী মান্না, অভিনেত্রী আন্না, হল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন উজ্জ্বল, চিত্রনায়িকা আঁচল আঁখি, আইরিন সুলতানা, রোমানা নীড়, চিত্রনায়ক আসিফ ইকবাল, শিপন মিত্র, জয় চৌধুরী, কায়েস আরজু, সাদমান সামী, অভি, প্রযোজক রাশেদ খান, জুলফিকার জাহেদী, নির্মাতা বুলবুল বিশ্বাস, রিয়াজুল রিজু, সাংবাদিক কামরুজ্জামান বাবু, কামরুজ্জামান মিলু, মহিউদ্দিন কাদের, ফটোগ্রাফার রফিকুল ইসলাম রনি, বাঁধন, মাসুদ রানা, সৌরভ ও পরিচালক ছটকু আহমেদ।

০৮ফেব্রুয়ারি/এএইচ/এডমিন/ইবনে

 

সংবাদটি শেয়ার করুন