ঘরে ঘরে পলিথিন গ্যাসের বোমা !

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: মার্চ ২১, ২০২১

সীমান্তবংলা ডেক্সঃ গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ আর গ্যাস লিকেজ থেকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের খবর প্রতিদিনই শোনা যায়। এতে একদিকে যেমন মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে বাড়ছে পঙ্গুত্বও। প্রায় প্রতিদিনই পত্রিকার পাতা খুললেই পাওয়া যায় এসব দূর্ঘটনার খবর। কিন্তু এরইমধ্যে জানা গেল আরও ভয়ানক এক খবর। দিনের বেলা লাইনে গ্যাস থাকে না বলে এলাকাবাসী রাতের বেলা পলিথিনে গ্যাস ভরে রেখে দিয়ে সেটি রান্নার কাজে ব্যবহার করছে!

বিস্ফোরক এই খবরের উৎসস্থল নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলা। এই উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকার জনগণ পলিথিনের বেলুনে গ্যাস ভরে ওই গ্যাস দিনের বেলা রান্নাবান্নার কাজে দেদার ব্যবহার করছেন। স্থানীয়রা জানান, দিনের বেলায় লাইনে গ্যাস থাকে না। এ কারণে স্থানীয়রা রাতের বেলাতেই পলিথিনের বেলুনে ওই গ্যাস ভরে রাখেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের খামারপাড়া, তালাশকুর ও নগরপাড়ায় অনেকে পলিথিনের বেলুনে করে গ্যাস ভরে রেখে সেগুলো দিনের বেলায় রান্নার জন্য ব্যবহার করছে আগে থেকেই। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, তাদের কারো ঘরে লাল পলিথিনের বেলুন, কারো ঘরে হলুদ বেলুন, আবার কারো ঘরে নীল বেলুনের সংগ্রহ। পলিথিনের এই বেলুনগুলো তারা তৈরি করে এক জাতীয় মেশিনের সাহায্যে গ্যাসের লাইন থেকে গ্যাস টেনে এনে জমা রাখা হয়। এসব বেলুন প্রায় সময়ই দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে। সচেতন এলাকাবাসী এই বেলুনগুলোর নাম দিয়েছে বেলুন বোমা। কিন্তু তাতেও থেমে নেই এর ব্যবহার।

বিস্ফোরণ ঘটলেও এলাকাগুলোতে প্রতিনিয়তই বাড়ছে বেলুন বোমা ব্যবহারকারীর সংখ্যা। কায়েতপাড়া ইউনিয়নের প্রায় ১০টি গ্রামে এই ‘বেলুন বোামায়’ চলছে রান্নাবান্নার কাজ। সোনারগাঁও তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃপক্ষ ঝূঁকিপূর্ণ এসব বেলুন বোমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিচ্ছে না। এমনটাই অভিযোগ স্থানীয়দের।

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের নারায়ণগঞ্জ জেলার উপমহাব্যবস্থাপক মমিনুল হক খবরের সত্যতা স্বীকার করেছেন। রবিবার বিকেলে দ্য রিপোর্টকে দেওয়া এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এ ধরণের অভিযোগ আমাদের কাছেও এসেছে। পলিথিনের বেলুনে গ্যাস ভরে রাখার ঘটনায় যে কোনো সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। বিষয়টি বোঝাতে আমরা রবিবার (২১মার্চ) কায়েতপাড়া ইউনিয়নের খামারপাড়া, তালাশকুর ও নগরপাড়া এলাকায় সারাদিন মাইকিংও করেছি। এলাকায় এলাকায় জনগণের মাঝে লিফলেট বিতরণ করেছি। এ বিষয়ে তাদের সচেতন করতে যা যা প্রয়োজন তা আমরা করবো।

এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এভাবে গ্যাস সঞ্চয় করে রাখা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। পলিথিন গলে গেলে কিংবা ছিদ্র হয়ে গেলে ঘরবাড়িতে আগুন লেগে যেতে পারে। পুড়ে যেতে পারে গোটা এলাকা। আমরা যখন এলাকায় গিয়েছি তখন তারা হয়তো ওই বেলুনগুলো সরিয়ে ফেলেছে। তবে তাদের এই কাজ থেকে বিরত রাখতে আমরা আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

তিতাস গ্যাস কোম্পানি একটি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘আমরা এসব কাজে জড়িতদের ব্যাপারে কঠিন পদক্ষেপ নিতে পারি না। শুধুমাত্র তাদের সচেতন করতে পারি। আর এটাই আমরা করছি।’

রান্নার জন্য পথিলিনের বেলুনে এভাবে গ্যাস ভরে রাখার বিষয়টি জানে না নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র স্টেশন ম্যানেজার বেলাল হোসেন দ্য রিপোর্টকে বলেন, এই ধরণের ঘটনা আমি এই প্রথম শুনলাম। আমরা শুধুমাত্র অগ্নিকাণ্ড ঘটলে অ্যাকশনে যাই। এসব দেখভাল করার দায়িত্ব আমাদের নয়।’

এ বিষয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ নুসরাত জাহান গণমাধ্যমকে জানান, ‘বিষয়টি আমিও শুনেছি। কিন্তু আমি বিশ্বাস করতে পারছি না। এটা কীভাবে সম্ভব।’ খবরের সত্যতা

আর.এম.আর/২১ মার্চ