নতুন মায়ের ঘুমের সমস্যা : মেনে চলুন এই কৌশলগুলো

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৬, ২০১৯

সন্তানের বেড়ে ওঠার জন্য মায়ের দুধের কোনো বিকল্প হয় না। কিন্তু, সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুকে দুধ পান করানোর জন্য মাকে যথেষ্ট ধকল পোহাতে হয়। ঘুমের ক্ষেত্রেও যথেষ্ট হেরফের দেখা দিতে পারে। শিশুকে তার চাহিদা মাফিক স্তন্যদান করতে গিয়ে মায়েরা সঠিক পরিমাণে ঘুমানো থেকে বঞ্চিত হন। তাহলে ঠিক কোন উপায়টি অনুসরণ করা উচিত?

অনেকেই এক্ষেত্রে মায়ের বুকের দুধ শিশুকে পান করান না। কিন্তু এসময় মাথায় রাখতে হবে যে, একমাত্র মায়ের বুকের দুধ একজন শিশুকে রোগপ্রতিরোধে সাহায্য করে। তাকে সঠিক ওজন অর্জন করতে এবং সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

অন্যদিকে, একজন মায়ের দেহকে সঠিক আকৃতিতে আনার জন্য, নিজের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাওয়ার জন্য এবং নানারকম অসুস্থতা থেকে দূরে থাকতে শিশুকে দুধ পান করানোর প্রয়োজন হয়। তাহলে, এই অবস্থায় কোন কৌশলটি সঠিক সমাধান এনে দিতে পারে? চলুন, জেনে নেওয়া যাক।

নতুন মায়েদের ঘুমের ঘাটতি পোষানোর কৌশল-

সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর মায়েদের পক্ষে পরিমাণমতো ঘুমানো কঠিন হয়ে পড়ে। ৪-৬ সপ্তাহ পর্যন্ত এই অবস্থার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় তাদের। তাই এই সময়ে সঠিক পরিমাণে ঘুমানোর জন্য মেনে চলুন নিচের এই কৌশলগুলো-

ছোট ছোট ঘুমের সময়-

নিজের ঘুমের সময়কে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে নিন। আপনার শরীর ক্লান্ত থাকবে। তাই ঘুমিয়ে পরা আপনার জন্য খুব একটা কঠিন কাজ হবে না। তবে, এই ঘুমের সময়টুকুকে ৩০ মিনিটের মধ্যে বাধুন। প্রতি ৩০ মিনিট পরপর ঘুম থেকে উঠুন, সন্তানকে দুধ পান করিয়ে আবার ৩০ মিনিটে ঘুমের জন্য সময় নিন। এতে করে আপনার সন্তান পুষ্টি পাবে, আর আপনিও পাবেন যথেষ্ট পরিমাণে ঘুম।

ঘরের বাইরে যান-

দিনের বেলায় শিশুকে কোলে নিয়ে সূর্যের আলোতে বের হোন। এতে করে আপনার শিশু দিন ও রাতের সাথে মিলিয়ে ঘুমানোর প্রক্রিয়াটি রপ্ত করে ফেলবে। রাতে ঘরে খুব বেশি আলো না রাখার চেষ্টা করুন। আমাদের শরীর দিন ও রাতের ওপর ভিত্তি করে ঘুমায় ও জাগে। সেই পদ্ধতিটিই ব্যবহার করুন আপনার ছোট্ট শিশুর ওপরে।

কারো সাহায্য নিন-

এই সময় আপনার পাশে থাকার জন্য কাউকে রাখুন। যেন, আপনি ঘুমিয়ে গেলে সে শিশুর দিকে খেয়াল রাখতে পারে। এতে করে খুব বেশি সমস্যা ছাড়াই আপনার মাতৃত্বের স্বাদ নিতে পারবেন আপনি। শরীরের উপরেও বাড়তি চাপ পড়বে না।

ঘরেই রাখুন শিশুকে-

আপনার শিশুকে আপনি যে ঘরে আছেন সেখানেই রাখুন। এমনভাবে শিশুকে রাখুন যেন আপনি হাত বাড়ালেই তাকে ছুঁতে পারেন। তাহলে রাতে আপনার শিশু খাবারের জন্য জেগে উঠলেও তাকে দেখতে অন্য ঘরে যেতে হবে না আপনাকে। নিজের ঘুমে খুব কম বিঘ্ন ঘটিয়েই উপভোগ করতে পারবেন আপনি।

বেবি ওয়্যারিং পরুন-

শিশুকে বহন করার চেষ্টা করুন। এতে করে আপনি তার ক্ষুধা লাগার সময়গুলো ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। এজন্য বেবি-ওয়্যারিং পরুন। আপনার শিশু কখন ক্ষুধার্ত, কখন তার কিছু দরকার তা বোঝা এতে করে আপনার পক্ষে অনেক সহজ হয়ে যাবে।

শিশুকে প্রথম ৪-৫ সপ্তাহ মায়ের দুধ পান না করালেই নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই সময়টিকে ৬ মাস নির্ধারণ করেছে। শিশু এবং শিশুর মায়ের জন্য মাতৃদুগ্ধ পান প্রক্রিয়ার কোনো বিকল্প হয় না। তাই, এই ধাপটিকে এড়িয়ে না গিয়ে শিশুকে মায়ের দুধ পান করান। অন্যদেরকেও উৎসাহ দিন। এতে শিশু যেমন সুস্থ থাকবে, তেমনই সুস্থ থাকবেন মাও।

সূত্র- মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটাল