শাপলাপুরের চিহ্নিত অপরাধী ভুমিদস্যু সেই শিবির ক্যাডার মোক্তার গ্রেফতার

Date:

 

নিজস্ব প্রতিবেদক

সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের শাপলাপুরের দাগী অপরাধী নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার আসামি সেই শিবির ক্যাডার সাবেক মেম্বার মোক্তার আহমেদকে জেলে প্রেরণ করা হয়েছে।একটি চাঁদাবাজি মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিঙ্গ হাকিম তার জামিন না মন্জুর করলে তাকে জেলে যেতে হয়েছে।গতকাল (মঙ্গলবার)টেকনাফ আদালতের হাকিম তামান্না ফারাহ’র আদালতে তার বিরুদ্ধে রুজু করা চাঁদাবাজি মামলা নং ২১/৩৩৮ এর শুনানিতে তার জামিন আবেদন নাকচ করা হয় বলে আদালতের জিআরও জানান।তার বিরুদ্ধে ভূমিদস্যুতা,নারী নির্যাতন,প্রতারণা ও বন মামলা সহ প্রায় ২ ডজন মামলা বিচারাধীন রয়েছে বিভিন্ন আদালতে।ধৃত মোক্তার অসাধু পুলিশ কর্মকর্তা ও সন্ত্রাসী বাহিনী ব্যবহার করে বিপুল জায়গা জমি,বানিজ্যিক মার্কেট ও একাধিক দোকানের মালিক বনে গেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।ব্যাপক অনুসন্ধান ও তার আত্মীয় স্বজন ঘনিষ্ঠদের দেয়া তথ্যে এমন ভূমিগ্রাসীতার প্রকৃত চিত্র উঠে এসেছে।পারিবারিক ভাবে অসচ্ছল সাবেক মেম্বার মোক্তার শুধু সরকারি খাস জমি নয়, তার রক্ত সম্পর্কীয়দের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে জন্মদাতা পিতাকে পিটিয়ে জখমের ভয়াবহ অভিযোগ রয়েছে। একইভাবে তার আপন কয়েক ভাই বোনও তার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের নীরব স্বাক্ষী।স্হানীয় পাড়া প্রতিবেশীরা মোক্তারের অঢেল ভূ-সম্পদের ব্যাপারে রীতিমত চমকে উঠলেও আইন ও সরকারি সংশ্লিষ্ট বিভাগের রহস্যজনক নিরবতায় নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।তাদের জিজ্ঞাসা মোক্তারের জবরদখল থেকে এসব অবৈধ সম্পদ সরকারের নিয়ন্ত্রণে অাদৌ নিয়ে আসা যাবে কিনা।কেন না এসব হারাম সম্পত্তি হালাল করতে ভুমিগ্রাসী মোক্তার সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের হর্তাকর্তাদের ম্যানেজ করার জোর তদবিরে নেমে পড়েছে।ইতিমধ্যে খাস খতিয়ানের জমি নিজের নামে খতিয়ান,সৃজিত খতিয়ান করার দূরহ কাজটি সম্পন্ন করেছে।মোক্তার শুধু বাহারছড়া নয়,পাশ্ববর্তী শীলখালী ইউনিয়ন ও টেকনাফ সদরের বড় ডেইলে বিপুল পরিমাণ জমির মালিক।টেকনাফ সদরে তার ২ একর জমি রয়েছে।যার বাজার মূল্য কৌটি টাকার অধিক।নিজ এলাকার ২ নং ওয়ার্ডে তার পিতা আমির হামজার কাছথেকে ২ একর ৪০ শতক জমি হেবার মাধ্যমে কেড়ে নিয়েছে।একইভাবে ৩ নং ওয়ার্ডে তার কোটি টাকা মূল্যের ১ একর ৬০ শতক জমি রয়েছে।ভূমিদস্যু মোক্তার তার ৫ বোন ও ৪ ভাইকে বঞ্চিত করে পৈতৃক ভিটা সহ সুপারি বাগান ও জবরদখলে রেখেছে বলে স্বজনদের অভিযোগ ।এ কান্ডে তার পিতা বাঁধা দিলেও পাষণ্ড মোক্তার তার পিতাকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে তার অনুকুলে হেবা প্রদানে বাধ্য করেছে বলেও জানাযায়।একই এলাকায় সাড়ে ১৫ একরেরও অধিক বনবিভাগের সংরক্ষিত বনভূমি দখলে রেখেছে মোক্তার।শীলখালী মৌজার নামজারি খতিয়ান ৩২২৪ এও ২০ শতক জমি রয়েছে তার।একইভাবে ৩২২১ খতিয়ানে ৮৯ শতক জমির মালিক মোক্তার।এ জমির পাশ্ববর্তী ৩৮৩ বি এস খতিয়ান তার নামে সৃজিত।এখানে ১.২০ শতক জমি রয়েছে যার পুরোটাই সরকারি খাস খতিয়ানের। এছাড়া শাপলাপুর বাজারে সরকারি খাস খতিয়ানে ৭ টি দোকান বানিয়েছেন তিনি।তার পাশেই খেলার মাঠে রয়েছে একটি মার্কেট।যেখানে ১১টি দোকান ভাড়াদিয়ে প্রতিমাসে অবৈধ আয় করছেন।১ নং ওয়ার্ডের নোয়াপাড়ায় ৩ একর ২০ শতক ভূ-সম্পত্তি রয়েছে যার বাজার মূল্য ২ কোটি টাকা বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।আলাদিনের চেরাগ হাতে পাওয়ার ন্যায় সম্পুর্ণ অবৈধভাবে স্হানীয় মাস্তান ও অসাধু পুলিশ চক্রকে ব্যবহার করেই সরকারি ও ব্যাক্তি মালিকানাধীন জমি দখল করেছে মোক্তার।অভিযোগ রয়েছে টেকনাফের আ ও ফ- আদ্যক্ষরের দুই ওসির সাথে সিন্ডিকেট করে ভূমিদস্যুতায় অভিষেক ঘটায় মোক্তার।বিনিময়ে এসব পুলিশ কর্তারা মোক্তারের অঢেল নজরানায় তুষ্ট হতেন।এরাও মোক্তারের নানা অবৈধ কাজে নিজেদের দপ্তরের সার্বিক সহযোগিতা দিতেন।এ কারণে মোক্তার তার ভূমিদস্যুতা টেকনাফে সীমাবদ্ধ না রেখে জেলা শহর ও অন্যান্য উপজেলায় বিস্তৃত করে।অবৈধ আয়ের টাকায় মহেশখালী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাশে ৮ একর কক্সবাজার সদরের খুরুস্কুলে নির্মিত রেললাইনের পাশে প্রায় ৫ একর সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পাশে প্রায় ৪০ শতক জমির মালিক তিনি।এছাড়াও শহরের পাহাড়তলীতে ১৫ গন্ডা জমি কিনেছেন ভূমিদস্যু মোক্তার।রয়েছে বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি ব্যাংকে তার সহ দুই স্ত্রী, পুত্র ও পোষ্যদের নামে একাধিক ব্যাংক হিসাব। এমনকি কক্সবাজার হোটেল মোটেল জোনের বহুল বিতর্কিত ”মম” রির্সোটের স্বত্বাধিকারীও বনে গেছেন মোক্তার।এককালের দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার মোক্তার বহু মামলার আসামিও।এমনকি ২০০৪ সালে চট্টগ্রামে সংঘটিত চাঙ্চল্যকর এইট মাডার মামলার অগ্রভাগের কয়েকজন আসামির সাথে গভীর সখ্যতা ছিল বলেও জনশ্রুতি রয়েছে।১২ টি অজামিন যোগ্য ধারার মামলার কয়েকটিতে জামিনে মুক্ত হয়ে অপরাধ কান্ড ঘটাচ্ছে বীরদর্পে। নারী ও শিশু নির্যাতন, ভূমিদস্যুতা,পরিবেশ রক্ষা আইন, চাঁদাবাজি,হত্যা প্রচেষ্টা,লুটপাট ও প্রতারণা সহ নানা অপরাধ আইনের বিভিন্ন ধারায় মামলা বিচারাধীন থাকলেও মোক্তার ছিল অধরা।সচেতন মহল চাঁদাবাজির এ মামলা সহ তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন আদালতে বিচারাধীন অন্য মামলাগুলো সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাকে সহসাৎ আইনের শেকল থেকে মুক্ত না করতে আইন ও বিচার প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।নচেৎ আবারও বেপরোয়া অপরাধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হবে এতে কোন সন্দেহ নেই বলে জানান এলাকাবাসী ও তার অত্যাচার নির্যাতনের ভুক্তভোগীরা।

সীমান্তবাংলা /১৫ জুন ২০২১

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Share post:

Subscribe

spot_imgspot_img

Popular

More like this
Related

দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের স্টাফ রিপোর্টার হলেন এম. দলিলুর রহমান

  (বিশেষ প্রতিনিধি) বহুল প্রচারিত দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের লোহাগাড়া উপজেলা প্রতিনিধি...

মাদক কারবারে পাচারকারী আটক হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে গডফাদার

মায়ানমার থেকে অবৈধভাবে প্রবেশ করা সিগারেট, স্বর্ণের বার, ইয়াবাসহ...

নরসিংদীতে বজ্রাঘাতে মা-ছেলেসহ ৪ জন নি’হ’ত

নরসিংদী প্রতিনিধি: নরসিংদীতে জমিতে ধান কাটার কাজ করার সময় বজ্রাঘাতে...

সংবাদ প্রকাশের জের:পাচার কালে জ্বালানী তেল জব্দ:টহলদলের গাড়ীতে হামলা:অধরা চোরাকারবারি

  এম.এ.রহমান সীমান্ত: গত কয়েকদিন ধরে দৈনিক গণসংযোগ পত্রিকায় ববস্তুনিষ্ঠ ও...