মো: খায়রুল ইসলামঃ
তিনি মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে একদুয়ারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ছাদ বাগান, বিদ্যালয়ের চারপাশের আঙ্গিনায় বিভিন্ন প্রকারের সহগ্রাধিক গাছের চারা রোপণ করে এবং বিদ্যালয়টিকে একটি “গ্রীন স্কুল, ক্লীন স্কুল” হিসেবে গড়ে তোলায় পেয়েছেন এই সম্মাননা পুরস্কার।
“মুজিব বর্ষে বৃক্ষরোপণ, পরিবেশের সংরক্ষণ” এই স্লোগানকে সামনে রেখে মুজিব শতবর্ষকে স্মরণীয় করে রাখতে বছরব্যাপী নরসিংদী জেলার মনোহরদীর একদুয়ারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২০২০ সালের ১১ জুলাই নরসিংদী জেলার নান্দনিক জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জনাব গৌতম চন্দ্র মিত্র একটি কৃষ্ণচূড়ার চারা রোপণ করার মাধ্যমে শুরু হয় বছর ব্যাপী বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম।
ফুল,ফল, ঔষধি, ভেষজ ও শুভাবর্ধনকারী কয়েক হাজার বৃক্ষের চারা রোপণ করে সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করে অজপাড়া গাঁয়ের এই প্রতিষ্ঠানটি। “গ্রিণ স্কুল ক্লিন ক্যাম্পাস” নির্মাণ করার লক্ষ্যে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম দিন দিন জোড়ালো করা হয়। দিনের পর দিন বৃক্ষরোপণে অংশগ্রহণ করেন বিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশীজন সহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় শিল্পমন্ত্রী অ্যাড. নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামান, শিক্ষা বন্ধু ও বিশিষ্ট দানবীর আলহাজ্ব আব্দুল কাদির মোল্লা, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মোহাম্মদ গোলাম ফারুক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (অর্থ ও ক্রয়) প্রফেসর মো. সিরাজুল ইসলাম খান, পরিচালক (মনিটরিং এন্ড ইভালুয়েশন উইং) প্রফেসর মো. আমির হোসেন, পরিচালক (ঢাকা অঞ্চল) প্রফেসর মনোয়ার হোসেন, নরসিংদীর জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন,জেলা প্রশাসক আবু নঈম মো. মারুফ খান দীক্ষা, দক্ষতা, উন্নয়নে, শিক্ষা অনলাইনে- এর প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ কবীর হোসেন, রাজউকের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল সিদ্দিকুর রহমান, ঢাকা অঞ্চলের উপপরিচালক এ. এস এম খালেক, উপজেলা চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম খান বীরু, মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাফিয়া আক্তার শিমু, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ এস এম আবুল কাশেম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল করিমসহ মনোহরদী উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও এলাকার সর্বস্তরের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
বিদ্যালয়ের প্রবেশদার থেকে শুরু করে রাস্তার উভয় পাশে রোপণ করা হয়েছে বনজ, ফলদ, ভেষজ ও শোভাবর্ধনকারী বিভিন্ন গাছ। প্রত্যেক গাছের গোড়াতেই রোপণকারী ব্যক্তির নাম, পদবি ও তারিখ উল্লেখপূর্বক ফলক লাগিয়ে দেয়া হয় । এতে করে সকলের মধ্যে বৃক্ষরোপণের আগ্রহ বৃদ্ধি পায় এবং পরবর্তিতে রোপণকারীদের যে কেউ বিদ্যালয়ে আসলে তাঁর রোপণ করা গাছের খোঁজ খবর নেন এবং নিজ হাতে একটু যত্ন করেন।
এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অংশগ্রহণ ছিল স্বতঃস্ফূর্ত। সাবেক শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ আবার চারা ক্রয় করে দিয়েছেন বিদ্যালয়ে রোপণ করার জন্য। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা টিফিন পিরিয়ডে/ অবসর সময়ে চারাগাছের পরিচর্যা করে। ফলে বৃক্ষের প্রতি তাদের আগ্রহ ও ভালবাসা জন্মায়। যার ফলে প্রত্যেক শিক্ষার্থী তাদের নিজ নিজ বাড়িতে বৃক্ষরোপণ করে ফুল ও ফলের বাগান গড়ে তুলছে।
এর ফলে বাড়ির আঙ্গিনায় পরিবর্তন আসছে ও সুন্দর হয়েছে গ্রামের পরিবেশ। নতুন কারিকুলামে কর্মমুখী শিক্ষার যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে তা বাস্তবায়নে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করেন প্রধান শিক্ষক আবদুল কাদির মৃধা । বিদ্যালয়ের বাগান পরিচর্যার জন্য স্থানীয় কৃষি অফিস সাহায্য করেন। বিদ্যালয়ের ছাদেও গড়ে তোলা হয়েছে বিশাল ছাদ বাগান।
বিদ্যালয়ের মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ পরিদর্শনের জন্য দেশ বিদেশ থেকে পর্যটক আসেন,বাগানের বিষমুক্ত তাজা ফল দ্বারা আপ্যায়ন করা হলে তাঁরা মুগ্ধ হন। বিদ্যালয়টি তার ছাদ বাগান ও মাঠের চারপাশের সবুজ বৃক্ষরাজির জন্য সারাদেশে গ্রিণ ও অন্যতম মডেল বিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত।
© কপিরাইট ২০১০ - ২০২৪ সীমান্ত বাংলা >> এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ
Leave a Reply