নরসিংদী প্রতিনিধি◾
ঈদুল আজহাকে ঘিরে নরসিংদীতে মৌসুমি ব্যবসা হিসেবে অনেকেই খাইট্টা বিক্রি করে থাকেন। জেলা শহরের বিভিন্ন জায়গায় খাইট্টার পসরা নিয়ে বসেছেন অনেকে। সাধারণত ঈদের চার থেকে পাঁচদিন আগ থেকে এ ব্যবসা জমে ওঠে। তবে এবার ব্যবসায় ভাটা পড়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
জেলা সদরের বড় বাজারে কথা হয় খাইট্টা বিক্রেতা আবু তাহের মোরলের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমি রাজমিস্ত্রির কাজ করি। তবে ঈদুল আজহায় খাইট্টা বিক্রি করি। এবার ৫০০ খাইট্টা নিয়ে বসেছি। ১৫ থেকে ২০টির মতো বিক্রি হয়েছে। তবে এবার ক্রেতা কম। ঈদের আগের দিন ক্রেতা বাড়তে পারে।’
মাধবদী বড় মসজিদ রোডে খাইট্টার পসরা সাজিয়ে বসেছেন পৌর শহরের বাসিন্দা সাহাদাত হোসেন, মো. সফিক, হানিফ মিয়া, আওলাদ হোসেন, সাইফুল মিয়া, মো. ইজানুর মিয়া, আবদুর সাত্তারসহ আরও অনেকে।
মো. সফিক মিয়া জানান, তিনি টেক্সটাইল মিলের যন্ত্রাংশ লোড-আনলোডের কাজ করেন। ঈদের ছুটিতে তেমন কাজ থাকে না। তাই গত চার বছর ধরে এ সময় খাইট্টা বিক্রি করেন। বিশেষ করে প্রতি ঈদের ৫ দিন আগ থেকে এই ব্যবসা শুরু করেন। এত তার ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা আয় হয়। তবে এবার লাভ নিয়ে শঙ্কায় আছেন তিনি।
বড় মসজিদ রোডে প্রায় পাঁচ বছর ধরে খাইট্টা বিক্রি করছেন সাহাদাত হোসেন। তিনি জানান, তার কাছে ২০০ থেকে ১ হাজার টাকা দামের খাইট্টা রয়েছে। এবার ৫০০ খাইট্টা বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছেন। তবে এবার ক্রেতা অনেক কম থাকায় সে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারবেন কি না তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন।
খাইট্টা কিনতে এসেছেন কসাই হরমুজ আলী। তিনি জানান, বাঞ্ছারামপুর যাবেন কোরবানি পশুর মাংস কাটতে। এজন্য তার ভালো মানের খাইট্টা দরকার। তেঁতুলগাছ ছাড়া অন্য গাছের কাঠের খাইট্টা দা বা ছুরির আঘাত তেমন সহ্য করতে পারে না। এতে কাঠ থেকে ছোট ছোট টুকরা ওঠে মাংসে লেগে থাকে। এটি পরে মাংস থেকে ছাড়াতে বেশ বেগ পেতে হয়।
আম, জাম ও তেঁতুল কাঠ অপেক্ষাকৃত শক্ত। তাই মাংস কাটার কাজে এই কাঠের খাইট্টা ব্যবহার করেন কসাইসহ স্থানীয় কোরবানিদাতারা। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা প্রথমে স্থানীয় করাতকল ও মহাজনদের কাছ থেকে ছোট ছোট কাঠের গুঁড়ি কেনেন। এরপর সেগুলো নির্দিষ্ট মাপে টুকরা করে খাইট্টা তৈরি করা হয়।
© কপিরাইট ২০১০ - ২০২৪ সীমান্ত বাংলা >> এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ
Leave a Reply