উখিয়া উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামজুড়ে রোহিঙ্গাদের বসবাসের চিত্র দেখা যাচ্ছে। সরকারের প্রদত্ত আশ্রয় শিবিরের বাইরে শতশত রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ভাড়া নিয়ে কিংবা নিজস্ব ঘর নির্মাণ করে অবস্থান করছে। সম্প্রতি এক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, প্রভাবশালী ও জমির মালিকদের সহযোগিতায় এসব রোহিঙ্গারা দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় এলাকায় বসবাসের সুযোগ পাচ্ছে।
প্রাপ্ত তালিকা অনুযায়ী, শুধ বালুখালী এলাকাতেই অর্ধশতাধিক বাড়িতে রোহিঙ্গারা ভাড়া থাকে। অভিযোগ রয়েছে— বাদাম বিক্রেতা মনিয়ার বাড়িতে ১৪টি পরিবার, আনোয়ারের বসতভিটায় ২২টি, ছগির আহমদের বাড়িতে ১২টি, আর আবদুর রহমান ও লুৎফুর নাহারের বাড়িতে যথাক্রমে ২০ ও ৪৫টি পরিবার বসবাস করছে। প্রতিটি পরিবার মাসিক গড়ে তিন হাজার টাকা ভাড়া প্রদান করছে। এছাড়া ভাড়া বাসার জামানত বাবদ প্রতি পরিবার থেকে নগদ ৪৫–৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে।
এভাবেই ফরিদ আলমের বসতভিটায় ৩৪টি, আব্দুল করিম প্রকাশ বিডিআর বাড়িতে ১৬টি, জুনির বাড়িতে ২টি এবং ছৈয়দ আলম ও সামন্ডল আলমের বাড়িতে ১টি করে রোহিঙ্গা পরিবার অবস্থান করছে। নুরুল আমিন, রেহেনা আক্তার, বেলালসহ আরও বেশ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দার বাড়িতেও রোহিঙ্গাদের উপস্থিতি মিলেছে।
শুধু ভাড়া নয়, জমি কিনেও বসবাসের প্রমাণ মিলেছে। পালংখালী ইউনিয়নের মোছারখোলা, তেলখোলা, প্রেমবাজার, গর্জনখোলা ও বাইলাখালী এলাকার পাহাড়ি অঞ্চলে দেখা গেছে, চাকমা সম্প্রদায়ের কিছু পরিবারসহ স্থানীয়দের কাছ থেকে জায়গা কিনে একাধিক রোহিঙ্গা পরিবার ঘর নির্মাণ করেছে। বিশেষ করে তেলখোলা বাজার থেকে পশ্চিমের বাইলাখালী এলাকায় অন্তত ১৫টি রোহিঙ্গা পরিবার নিজস্ব ঘর তুলেছে। অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, এদের মধ্যে কয়েকজনের নামে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পর্যন্ত রয়েছে।
একইভাবে জামতলী, থাইংখালী ও পশ্চিম বালুখালী এলাকাতেও রোহিঙ্গাদের ভাড়া থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। পাশাপাশি উখিয়া সদর হাজমিরপাড়া, শীলেরছড়া ও দোছড়ি এলাকাতেও একাধিক পরিবার গৃহ নির্মাণ করে বসবাস করছে। এতে স্পষ্ট হচ্ছে, ক্যাম্পের বাইরে রোহিঙ্গাদের বসবাস দিনদিন বিস্তার লাভ করছে।