মোসলেহ উদ্দিন উখিয়া ■ সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া দৃশ্যপটের প্রেক্ষিতে সেন্টমার্টিন ও বান্দরবান পর্যটন নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। শঙ্কা রয়েছে সেন্টমাটিনে যাওয়ার পথে নাফনদে। বাংলাদেশ- মিয়ানমার সীমারেখায় দু’দেশের জলে। যাত্রিবাহী বোটে গুলি পড়ে প্রাণহানির শঙ্কা করছেন দ্বীপবাসিরা। মিয়ানমারের অভ্যান্তরে সেদেশের জান্তাসরকার ও বিদ্রোহী সৈন্যদের মধ্যে দেশ বিভাজনের সংকট চলছে।
একইভাবে পার্বত্য চট্রগ্রামের পাহাড়ি জনপদ বান্দরবানে কেএনএফ বিদ্রোহী সশস্ত্র সংগঠনের আধিপত্যবাদের জেরে সেখানে বসবাসরত বিভিন্ন পেশাজীবি শ্রেনীর মানুষ বিভিন্ন সমস্যা ও শঙ্কায় রয়েছেন। সেখানকার বাসিন্দারা কেএনএফ সদস্যদের অন্যায় কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও শান্তি সমাবেশ করেছেন। কেএনএফ এর কিছু সদস্য স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে আত্মসমর্পণ করলেও আপাতদৃশ্য ভীতি কাটেনি। যে কারণে এবারের ঈদে পর্যটন শহর কক্সবাজারে পর্যটকদের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আবহাওয়ার অনুকুল পরিবেশ ঠিক থাকলে সারাদেশের ভ্রমণ পিপাসুদের সমুদ্র বিলাসে আগমণ বেড়ে যেতে পারে। ধারণ সক্ষমতার কথা মাথোয় রেখে এবার অতিরিক্ত পর্যটককে সেবা দিতে কক্সবাজার পর্যটন প্রস্তুত। প্রায় ৫শ হোটেল-মোটেল পর্যটকদের সেবায় প্রস্তুত হলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। পর্যটন ব্যবসায়ীদের হিসাবে পর্যটক সেবার সঙ্গে নিবন্ধিত আবাসিক হোটেলের সংখ্যা ৫শ ২০টি। এসবের ধারণক্ষমতা প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার।
অনিবন্ধিত হোটেল-মোটেল ও সরকারি- বেসরকারি রেস্ট হাউজসহ আরো অন্তত ৩০ হাজার পর্যটকের রাত যাপনের সুযোগ থাকছে। অতীতকে মাথায় রেখে ধারণ ক্ষমতার বাইরে পর্যটক সমাগমের রেকর্ড রয়েছে কক্সবাজারে। তবে এবার যাতায়াতে ট্রেন যুক্ত হওয়ায় পর্যটকের উপচেপড়া ভীড় যে কোনো সময়কে ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা পর্যটনখাত সংশ্লিষ্টদের।
কক্সবাজার হোটেল, রিসোর্ট, গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার বলেন, ঈদ সামনে রেখে কক্সবাজারের হোটেল-রেস্তোরাঁর সংস্কারকাজ চলছে। পর্যটকদের বাড়তি চাপ সামলানো ও ভোগান্তি কমাতে প্রতি বছর ঈদে নতুন বিনিয়োগ করেন মালিকরা।
এবার পর্যটকদের বাড়তি সুযোগ সুবিধা রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। ভোগান্তি কমাতে পর্যটকদের নিরাপত্তা সহ সার্বিক নির্দেশনা ছাড়াও প্রশাসনের নজরদারি লোকবল বাড়ানো হবে। কক্সবাজারমুখী পর্যটকের চাপ সামাল দিতে বিভিন্ন এয়ারলাইনসের ফ্লাইট সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। আগে প্রতিদিন ৪-৫ টি ফ্লাইট চলাচল করলেও ঈদ উপলক্ষে প্রতিদিন গড়ে ২০টি ফ্লাইট চলাচল করবে কক্সবাজারে। তাছাড়া,নিয়মিত ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার দু’জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করছে দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ চালুর পর থেকে। আন্তঃনগর ট্রেনগুলো সরাসরি কক্সবাজারে পৌঁছলেও বিশেষ দু’জোড়া ট্রেন প্রতিদিন চট্টগ্রাম থেকে একাধিক স্টেশনে যাত্রা বিরতি দিয়ে কক্সবাজারে যাত্রী পরিবহন করবে।
কক্সবাজার বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক গোলাম মোর্তজা হোসেন বলেন, ঈদের একদিন আগ থেকে কক্সবাজার রুটে চাপ রয়েছে। ঈদের পরেরদিন থেকে কক্সবাজারে দৈনিক ২০টি ফ্লাইট আসবে, ২০টি যাবে। ঈদের ছুটিতে পর্যটকের টিকিটের চাহিদা বেশি। এরই মধ্যে আরো কয়েকটি ফ্লাইট বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। দেশের বিভিন্ন পর্যটন স্পটে পর্যটক সমাগম সবচেয়ে বেশি হয় শীত মৌসুমে। এরপর সবচেয়ে বেশি হয় ঈদ-পরবর্তী সপ্তাহ জুড়ে। টানা ছুটির কারণে কক্সবাজারে অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রের চেয়ে এবার দর্শর্ণার্থীর সংখ্যা বাড়তে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
সীমান্তবাংলা/এমইউ/১৬জুন২৪
© কপিরাইট ২০১০ - ২০২৪ সীমান্ত বাংলা >> এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ
Leave a Reply