জুয়েল চৌধুরী (মহেশখালী):
২৫ ডিসেম্বর-২১ইং রাত পৌনে দশটা। চোখ রাখলাম ফেসবুকে। হঠাৎ করে ভেসে আসলো স্বামী ও শাশুড়ী কর্তৃক গৃহবধূকে মাথা ন্যাড়ার খবর। পরদিন স্বশরীরে হাজির হই ভিকটিমের শ্বশুরবাড়িতে।
ভিকটিম মাইমুনার সাথে কথা বলে জানা যায়, স্বামী-শ্বাশুড়ির কাছে বারবার মাথার তেল চেয়ে না পাওয়ায় এবং মানসিক অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে রাগে ফেটে নিজের চুল কেটে ন্যাড়া হয়েছেন তিনি।
ঘটনাটি গত বিশদিন আগে ঘটলেও জানাজানি হয় গত ২৫ ডিসেম্বর রাতে গৃহবধুর ভাই মোহাম্মদ শুক্কুরের ফেসবুক স্ট্যাটাসের মারফতে। তিনি ফেসবুক স্ট্যাটাসে নিজের বোন মাইমুনার পক্ষে লিখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিচার চাইলে ঘটনাটি মূহুর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। আজ ফোনে তিনি ঘটনার আসল সত্যতা স্বীকার করেছেন।
তিনি জানান, গত চার বছর আগে আমার বোনের সঙ্গে নয়াপাড়া গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে বাহার উদ্দীনের বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েকমাস পর থেকে যৌতুকের জন্য
আমার বোনের উপর স্বামী বাহার উদ্দীন ও শাশুড়ী আছিয়া বেগমসহ আরো কয়েকজন মিলে অমানুষিক নির্যাতন করে আসছিল। কিন্তু আমার বোন তা সহ্য করতে না পেরে বিগত বিশদিন আগে নিজের মাথা নিজে ন্যাড়া করেছে।
গৃহবধূর শাশুড়ী আছিয়া বেগম জানান, আমার পুত্রবধুকে যাবতীয় ভরণপোষণ দেয়ার পরও কেন এমন করেছে জানিনা। তবে আমাদের পরিবার দারিদ্র হওয়ায় যথেষ্ট অভাব রয়েছে।
স্বামীর বড় ভাই আবু বক্কর কান্না করতে করতে বলেন, আমার ভাই পেশায় একজন টিউবওয়েল মেস্ত্রী। সে টিউবওয়েলের কাজ করতে গিয়ে আহত হয়ে বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেলে আছে। কিন্তু ভাই আহত হওয়ার পরেরদিন মাইমুনা আকতার নিজের চুল কেটে নিজেই ন্যাড়া হয়। ভাইয়ের বউ হওয়ায় লজ্জায় কাউকে বলিনি। কিন্তু গত ২৫ তারিখ তার ছোটবোন এসে ছবি তোলে নিয়ে যাওয়ার পর ঘটনাটি জানাজানি হয়।
জানা যায়, স্বামী স্ত্রীর মধ্যে অভাব দারিদ্রতার কারণে বনিবনা ছিলনা। এছাড়া স্ত্রী টিউমার আক্রান্ত রোগী ছিল। কলহের বিষয়ে স্থানীয় মেম্বার মো: শরীফুল ইসলামের কাছে মাইমুনার পরিবার বিচার দায়ের করলে, তিনি নিজ অর্থ খরচ করে উভয়পক্ষকে মিলিয়ে দেন।
স্বামী বাহার উদ্দীন কালারমারছড়া ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের আবু তাহেরের পুত্র।
সীমান্তবাংলা / ২৭ ডিসেম্বর ২০২১
300
Leave a Reply