বাকখালীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ‘সাংবাদিকদের উপর হামলা!

Date:

 

নিজস্ব প্রতিবেদক ;
কক্সবাজার শহরের প্রাণ হিসেবে পরিচিত বাঁকখালী নদীর তীরে দখলকৃত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে জেলা প্রশাসনের অভিযান চলাকালে সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। নদীটির তীরেবর্তী ৬০০ হেক্টর প্যারাবন ধ্বংস করে একে একে চলছিলো স্থাপনা নির্মাণ। ভূমিখেকোরা নদীর তীরে গজিয়ে উঠা প্যারাবন ধ্বং করে গড়ে তুলেছেন শত শত স্থাপনা। যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি বলে জানিয়েছেন পরিবেশবাদী সংগঠন গুলো। এ নিয়ে দীর্ঘ আন্দোলনের পর (২৮ফেব্রুয়ারী ২০২৩) মঙ্গলবারের উচ্ছেদ অভিজানের মধ্য দিয়ে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো সফলতার মুখ দেখতে চলেছে।

কক্সবাজার হতে খুরুশকুলের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য কস্তুরাঘাট পয়েন্টে বাঁকখালী নদীর ওপর নির্মাণ করা হচ্ছে একটি সংযোগ সেতু। সেতুর পাশাপাশি সংযোগ সড়ক তৈরি হওয়ায় সড়কের দুই পাশে প্যারাবন ধ্বংস করে নদী দখলের মহোৎসবে মেতে উঠে প্রভাবশালী ভূমিদস্যু চক্র। যদিও এখানে একটি নদী বন্দর করার ব্যপারে সরকারের প্রজ্ঞাপন রয়েছে। এর জন্য এ জমি বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য হাইকোর্ট রায় দিয়েছে বলে জানা গেছে।

এরই প্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০ টা থেকে দখলকৃত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে জেলা প্রশাসন অভিজান শুরু করে। অভিযানে অংশ নেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে পরিবেশ অধিদফতর, বিআইডব্লিউটিএ, বন বিভাগসহ বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা। এদিকে অভিজানের সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে দুপুরে ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত সাংবাদিকদের উপর হামলে পড়েন ভূমিখেকোরা। এতে ডিবিসি নিউজের কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি সহ স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমের বেশ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। হামলার শিকার সাংবাদিকরা জানান, উচ্ছেদ চলাকালে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে লাঠিসোটা নিয়ে সাংবাদিকদের উপর হামলা চালান দখলদার চেয়ারম্যান আবদুল খালেকের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২ জন যুবক। এ সময় ডিবিসি নিউজ ও বিডিনিউজের প্রতিনিধি শংকর বড়ুয়া রুমি, আজকের পত্রিকার প্রতিনিধি মাইন উদ্দিন শাহেদ, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের প্রতিনিধি তৌফিকুল ইসলাম লিপুসহ বেশ কয়েকজন স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মী।

পরে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হামলার সময় চেয়ারম্যান আবদুল খালেককে পিস্তল হাতে নিয়ে সাংবাদিকদের হুমকি দিতে দেখা গেছে বলে অভিযোগ করেন উপস্থিত কালের কণ্ঠের বিশেষ প্রতিবেদক তোফায়েল আহমদ।
তিনি সংবাদ সংগ্রকালে সাংবাদিকদের উপর এমন বর্বর হামলার নিন্দা জানান।

অভিযানে নদীর তীরবর্তী এলাকায় সীমানা পিলার দিয়ে দখল করা শতাধিক পিলার ভেঙে দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ২ শতাধিক ভবন ও ঘর গুড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান বলেন, উচ্ছেদ অভিযান চলমান রয়েছে এবং থাকবে। এখানে অনেকভাবে উচ্ছেদ বন্ধ করার চেষ্টা চলছে। অনেকেই আইনজীবী এনে উচ্ছেদে প্রতিবন্ধকতা তৈরির চেষ্টা করছে। কিন্তু হাইকোর্টের আদেশে এ উচ্ছেদ। নদীর সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ পর্যন্ত অভিযান চলবে। সাংবাদিকদের উপর হামলাকারী চেয়ারম্যান আবদুল খালেকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Share post:

Subscribe

spot_imgspot_img

Popular

More like this
Related

মাদক কারবারে পাচারকারী আটক হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে গডফাদার

মায়ানমার থেকে অবৈধভাবে প্রবেশ করা সিগারেট, স্বর্ণের বার, ইয়াবাসহ...

নরসিংদীতে বজ্রাঘাতে মা-ছেলেসহ ৪ জন নি’হ’ত

নরসিংদী প্রতিনিধি: নরসিংদীতে জমিতে ধান কাটার কাজ করার সময় বজ্রাঘাতে...

সংবাদ প্রকাশের জের:পাচার কালে জ্বালানী তেল জব্দ:টহলদলের গাড়ীতে হামলা:অধরা চোরাকারবারি

  এম.এ.রহমান সীমান্ত: গত কয়েকদিন ধরে দৈনিক গণসংযোগ পত্রিকায় ববস্তুনিষ্ঠ ও...

সিরাজগঞ্জ ২১৬ কেজি গাঁজাসহ ০২ জন মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার, কাভার্ড ভ্যান জব্দ।

  মোঃ লুৎফর রহমান লিটন সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জে র‌্যাব-১২’র অভিযানে...