অবশেষে দুদকের জালে আটকা পড়তে যাচ্ছেন কক্সবাজার জেলা সিভিল সার্জন অফিসের প্রধান সহকারী রফিকুল। গত ২৪ জুলাই জেলার শীর্ষ দৈনিক কক্সবাজার ৭১ সহ একাধিক পত্রিকায় তার দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের পর তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
বিষয়টি দূর্নীতি কমিশন দুদকের নজরে এসেছে বলে জানিয়েছেন দুদকের একজন কর্মকর্তা। তিনি জানান, কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিসের প্রধান সহকারীর অবৈধভাবে কোটিপতি হওয়ার বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো হয়েছে।উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সম্মতি পেলেই তদন্তে নামবেন বলে জানান এ দুদুক কর্মকর্তা।
এদিকে ক্ষমতার অপব্যবহারে কোটিপতি প্রধান সহকারী রফিকুল তার অর্জিত বিপুল অর্থ ও অবৈধ সম্পদ রক্ষা করতে এখন ব্যাকুল হয়ে উঠেছেন।তার অফিসের কয়েকজন কর্মচারীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সংবাদ প্রকাশের পর রফিকুল এসব ধামাচাপা দিতে নানা উদ্ভট কল্ল কাহিনির অবতারণা করেছেন। তিনি তাকে ধোঁয়া তুলশী পাতা হিসেবে জাহির করতে মিথ্যা কে সত্য এবং সত্য কে মিথ্যায় রুপ দিচ্ছেন।তিনি আষাঢ়ে গল্প সাজিয়ে তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে কয়েকটি স্থানীয় দৈনিক ও অনলাইনে প্রকাশিত ও প্রচারিত সংবাদের প্রতিবাদ করেছেন।
প্রকাশিত সংবাদে দূর্নীতিবাজ রফিকুল তার প্রতিপক্ষদের ষড়যন্ত্রের রুপকার হিসেবে চিহ্নিত করলেও তার এমন যুক্তি ধোপে টিকছে না।সংবাদে প্রকাশিত এসব অবৈধ সম্পদ ও টাকা কড়ির কাহিনি প্রতিবেশি সহ অফিসের সহকর্মীদের কাছেও ঙ্গাত। রফিকুলের অবৈধ সম্পদ গড়ার নেপথ্যে কাহিনি পুরোপুরি ফাঁস না হলেও সাধারণ মানুষের কাছেও তা এখন দৃশ্যমান। যদিও তিনি এসবকে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হিসাবে প্রচার করে পার পেতে চাইছেন।স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও জেলা সিভিল সার্জন অফিস তদন্ত টিম গঠন করলে রফিকুলের অবৈধ অর্থ উপার্জনের থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে বলেও সচেতন মহল সহ সর্ব সাধারণের বিশ্বাস। সুচুতুর রফিকুল সংবাদ কর্মীদের এক হাত দেখাতে গিয়ে প্রতিবাদ লেখক সাংবাদিককে এ কাজে মোটা অংকের বিনিময়ে ব্যবহার করেছেন।আর ঐ দায়িত্ববান মিডিয়া কর্মী রফিকুলের পক্ষে সাফাই গাইতে গিয়ে “ধান বানতে শিবের গীত গেয়েছেন”।সংবাদে প্রকাশিত তথ্যের পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে মিথ্যার বেসাতির অবতারণা করেছেন।যা প্রকাশিত তথ্যের চেয়ে প্রতিবাদের তথ্য অনেক বিশাল।অভিযোগকারীদের ধারণা এসব বক্তব্য মূলত তদন্ত কাজকে ধামাচাপা দেওয়ার অপকৌশল মাত্র। তা নির্বোধও বুঝতে পারেন সহজেই। তাছাড়া প্রধান সহকারী রফিকুল মনেপ্রাণে স্বাধীনতা বিরুধী হিসাবে পত্রিকায় প্রকাশিত হলেও তিনি প্রতিবাদে এ বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন।তিনি ছাত্রাবস্হায় ইসলামী ছাত্র শিবিরের নানা কর্মসূচিতে শরিক হতেন। বিএনপি জামাত সমর্থক হওয়ায় ৯১ সালের সেই সরকারের সময় সহজেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অফিস সহকারী হিসেবে চাকরি জুটে তার। সরকারি চাকরীর শুরুতেই তিনি আগের ন্যায় কক্সবাজার শহরে জামাতে ইসলামির মিছিলের অগ্রভাগে দেখা গেছে তাকে। এমনকি তার সহকর্মীদের কয়েকজনও নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিষয়টি স্বীকার করেছেন।এদিকে তার অত্যাচার অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারের শিকার ভুক্তভোগীদের তালিকায় রয়েছে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানও।প্রধান সহকারী রফিকুলের কাছে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা অতি তুচ্ছ। তিনি তাদের অবঙ্গা করেন সর্বক্ষণ। এই কারণে নেজাম উদ্দিন নামের এক মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কে চাকরির পদে পদে বিমাতা সুলভ আচরন করতেন।তিনি মুক্তিযোদ্ধার ঐ সন্তান সহ আরও কয়েকজনকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত রাখতেন।এমন কি সরকারি অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের চাকুরীর শেষে পেনশন, পদোন্নতি, বদলী ও কারোর বিরুদ্ধে অভিযোগ হলে তদন্তের নামে ঘুষ বানিজ্যে, উৎসব ভাতা ও টিএডিএ সহ নানা ক্ষেত্রে কমিশন চাইতেন। তার এমন অাবদারের কেউ কেউ রফিকুলের ভয়ে সাড়া দিলেও নেজাম উদ্দিন সহ কয়েকজন তার অবৈধ খায়েশ পূরণ না করায় সরকারি এসব সুবিধার সিকিভাগও ভোগ করতে পারতেন না।একসময় তারাই এ কর্মকর্তার চক্ষুশুল হয়ে দাঁড়ায়।এ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা প্রতিবাদ মুখী হলে স্বেচ্ছাচারী রফিকুল ক্ষমতার অপব্যবহার ঘটিয়ে তাদের কে কক্সবাজার সদর থেকে বিভিন্ন উপজেলায় জোর পূর্বক বদলী করতে ভূমিকা রাখতেন এমন অভিযোগও ভুক্তভোগীদের।উর্ধতন কর্তৃপক্ষও এক্ষেত্রে ভূমিকা নেন মুনি মুশিক ভব।
এসব ক্ষেত্রে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ভুক্তভোগীর অভিযোগ তদন্ত হলেও প্রধান সহকারী রফিকুল নানা কান কথা শুনিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের হেনস্তা করেন এবং অভিযোগের সঠিক তদন্তের ব্যাঘাত ঘটান বলেও অভিযোগ রয়েছে।দূর্নীতিবাজ রফিকুল “ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খাই না” এমন ভূমিকা নিলেও তার ইতিপূর্বে সংঘটিত নানা অনিয়ম দূর্নীতি ও স্বেচ্ছাচার সাধারণ মানুষের মধ্যে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। অবৈধ নিয়োগ, আত্মীয় স্বজনদের সরকারি চাকরী পাইয়ে দেয়া সহ দেশি-বিদেশি প্রকল্পের টাকা লোপাটকারী রফিকুল নিজেকে হাজী মোহাম্মদ মহসিন বানানোর কাজে অভিষ্ট।তার সব সম্পদই দৃশ্যমান। এসবের তদন্ত হওয়া দরকার বলে জানান ভুক্তভোগীরা।নচেৎ মিথ্যা প্রতিবাদ দিয়ে পার পেলে একই অফিসে আরও অনেকই তার পদাঙ্ক অনুসরণ করবে বৈ কি?তাই প্রধান সহকারী রফিকুল ও তার স্ত্রী এবং শশুড় বাড়ির লোকজন সহ সকল ব্যাংক হিসাব ও দৃশ্যমান সম্পদের তদন্ত আশু প্রয়োজন।এ চাওয়া তার সহকর্মী থেকে শুরু করে ভুক্তভোগী কর্মচারী সহ সচেতন মহলের।