বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
সালাম-আদাব-নমস্কার
প্রায় ৪০ হাজার জনসংখ্যা অধ্যুষিত আমাদের রত্নাপালং ইউনিয়ন। উখিয়া উপজেলার পিছিয়ে পড়া উন্নয়ন বঞ্চিত একটি ইউনিয়ন রত্নাপালং। ২০১১ইং সালে ইউনিয়নের সর্বস্তরের মানুষের সর্বোচ্চ ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে দায়িত্বভার গ্রহণ করি। তখন থেকে শুরু করি রত্নাপালং ইউনিয়নকে গড়ে তোলার নিরলস উন্নয়ন সংগ্রাম। আল্লাহর মেহেরবানী এবং সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন সংস্থার সহযোগীতা ও এলাকার মানুষের দোয়ায় রত্নাপালং ইউনিয়নে প্রভূত উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। ৪ কোটি টাকার রাবার ড্যাম ও ১ কোটি টাকার নতুন ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণসহ কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হয়েছে আমাদের ইউনিয়নে।
এজন্য মহান আল্লাহর কাছে হাজারো শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, উখিয়া টেকনাফের সাবেক মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব আলহাজ্ব আব্দুর রহমান বদি ও মন্ত্রীপরিষদ সচিবের পদমর্যাদায় নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব জনাব মোহাম্মদ শফিউল আলম এর প্রতি অকুণ্ঠ চিত্তে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
দায়িত্ব গ্রহণের পর অত্র ইউনিয়নকে একটি মডেল ইউনিয়নে রুপান্তরিত করতে এবং সার্বিকভাবে অগ্রগতি সাধনের লক্ষ্যে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখি। কিন্তু অনেক সমস্যা মোকাবেলা করে এগিয়ে যেতে হয়েছে আমাকে। সবচেয়ে বড় বাধার সম্মুখীন হয়ে পড়ি পরিষদ ভবন নিয়ে। পুরোনো পরিষদে জায়গা সংকুলনের অভাবে গ্রাম আদালত প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়নি এবং গুরুত্বপূর্ণ ও কঠিন কাজ ছিল বারবার বন্যায় এলাকার রাস্তাঘাট ও ফসলের ক্ষতি সাধন থেকে রক্ষা করা। চলমান সময়ে মানব পাচার, ইয়াবার মত যুব সমাজ বিনষ্টকারী নেশার রমরমা ব্যবসা ও একটি বড় সমস্যা। এমনি সময়ে তা মোকাবেলা করতে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা ছিল আরো কঠিন ব্যাপার। তার জন্য প্রয়োজন ছিল শক্ত মনোবল,নিষ্ঠা ও ধৈর্য্য। দিনের পর দিন কঠোর পরিশ্রম ও নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে এলাকার বাস্তব চিত্রটা প্রশাসনের সর্বস্তরে তুলে ধরতে আমি সক্ষম হই। যার কারণে অল্প সময়ের মধ্যে এলাকায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন সম্ভব হয়।
শিক্ষা বিস্তারে অত্র ইউনিয়নের দুর্গম এলাকা গয়ালমারা দাখিল মাদ্রাসা ও কামারিয়ারবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধন করতে পেরেছি। তারই ধারাবাহিকতায় সকল প্রাথমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, দাখিল ও এবতেদায়ী মাদ্রাসা গুলোতে উন্নয়নের ছোঁয়া পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছি।
কৃষি কাজের বিস্তারে ভালুকিয়ায় ৪ ( চার) কোটি টাকা ব্যয়ে একটি রাবার ড্যাম স্থাপনের কাজ সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছি। রত্নাপালং ইউনিয়ন পরিষদের নতুন ভবনের কাজ সম্পন্ন করা সহ, গ্রামে গ্রামে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে চোখে পড়ার মত। বিগত বছরগুলোতে নিজ চেষ্টায় অত্র ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২০ কোটি টাকার বেশী উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে।
এলাকার জনসাধারণ আজ উন্নয়নের ছোঁয়া পেয়ে আনন্দিত। তার জন্য আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি অত্র ইউনিয়নের মুসলিম, হিন্দু-বৌদ্ধসহ সর্বস্তরের জনগণকে, প্রশাসনের সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারি এবং উখিয়া উপজেলা পরিষদ ও আমার বিজ্ঞ পরিষদ বর্গকে। যারা আমাকে একান্ত বিশ্বাসের সাথে একাগ্রচিত্তে কাজ করার অনুপ্রেরণা দিয়েছেন এবং সার্বিক সহযোগীতা করেছেন। অত্র ইউনিয়নের সার্বিক উন্নয়নের মূলে রয়েছেন মাননীয় এম পি মহোদয়, লোকাল গর্ভন্যান্স সাপোর্ট প্রজেক্ট-২ (এলজি এসপি-২), জেলা পরিষদ, শিক্ষা প্রকৌশল,উপজেলা প্রশাসন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল, যার জন্য জনগণের ও পরিষদের পক্ষে জানাচ্ছি অশেষ অশেষ কৃতজ্ঞতা। এলাকার বড় বড় প্রকল্প গুলোতে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে বাস্তবায়িত করে তুলেছেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এল.জি.ই.ডি), স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, উপজেলা পরিষদ, বিভিন্ন এনজিও এবং এলাকার জনগণ। উল্লেখিত সকল প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার নিকট চির কৃতজ্ঞ থাকবে অত্র পরিষদ। আশাকরি এই উন্নয়ন প্রক্রিয়া ধরে রাখতে পারলে, ভবিষ্যতে অত্র ইউনিয়ন একটি মডেল ইউনিয়ন হিসেবে অনুকরণীয় হয়ে থাকবে-ইনশাআল্লাহ।
একটি জাতিকে উন্নত থেকে উন্নততর করতে ইউনিয়ন পরিষদের ভূমিকা অপরিসীম। দেশের ৮০% লোক গ্রামে বসবাস করেন। নানা সীমাবদ্ধতার কারণে জনগণের সবটুকু চাহিদা পূরণ সম্ভবপর নয়। তবে, রাস্তাঘাট উন্নয়ন, কোটবাজারে শেডনির্মাণ ও পাবলিক টয়লেটে চালুসহ শিক্ষা ব্যবস্থা, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ও তাদের অধিকার রক্ষা, সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতি বজায় রাখা, জাতীয় কর্মসুচি পরিবার পরিকল্পনা, সার্বজনীন জন্ম নিবন্ধন, স্যানিটেশন,আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, নানা ধরণের বৃক্ষরোপণ কর্মসুচি, স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি, নারীর ক্ষমতায়ন, মানব পাচার প্রতিরোধসহ মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণে নিরলস ভাবে কাজ করে আমরা এগিয়ে রয়েছি। এসব কাজ করতে গিয়ে অনেক সময় অনেক বাধা বিপত্তির মুখে পড়েও ধৈর্য ও সাহসের সাথে তা মোকাবেলা করে অনেকটা সফলতা পেয়েছি। যে কারণে অত্র ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২০ কোটি টাকার বেশী উন্নয়নমূলক কাজ সম্পাদক করা সম্ভব হয়েছে।
ভবিষ্যতেও যেন উন্নয়ন প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে পারি তার জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার রহমত ও সর্বস্তরের জনগণের দোয়া এবং সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।
—————–
নুরুল কবির চৌধুরী
সাবেক চেয়ারম্যান,২নং রত্নাপালং ইউনিয়ন পরিষদ, উখিয়া, কক্সবাজার।
সংবাদ প্রেরক-শ.ম.গফুর,উখিয়া