নিজস্ব প্রতিনিধি:
উখিয়ায় কতিপয় হিন্দু সপ্রদায়ভুক্ত দূর্বৃত্তায়নের শিকার একটি অসহায় মুসলিম পরিবার মানবন্ধন করেছে। আজ বুধবার সকাল ১০ টার দিকে উখিয়া থানার সামনে আয়োজিত এ মানববন্ধনে অসহায় পরিবারের সদস্য সাংবাদিক মোসলেহ উদ্দীন বলেন, এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে কতিপয় হিন্দু সমাজের বিপদগামী লোকজন আমাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্র লিপ্ত রয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে গতোকাল উখিয়া সদরে তারা মানবন্ধনের নামে সম্পুর্ন নাটকীয়ভাবে এক বিশাল শো ডাউনের আয়োজন করে, যাতে আমাদের অসহায় পরিবারটিকে নিয়ে খুবই ন্যাক্ষারজনক আচরন করে, যে কারনে আমরা ভীত সন্ত্রস্থ হয়ে পড়ি। এবং যা স্থানীয় প্রশাসন ও সুশীল সমাজ পর্যবেক্ষণ করে।
মুন্সী পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা স্থানীয় প্রশাসন ও সুশীল সমাজের দৃষ্টি আকর্ষন করে বলেন, আমরা নিরাপত্তা চাই, আমরা বাঁচতে চাই, আমাদের পরিবারের উপর তারা যে কোন সময় হামলা করতে পারে। আমাদেরকে উচ্ছেদ সহ প্রাননাশের মতো ঘঠনা সৃষ্টি করার জন্য হুম্পকি ধমকি দেয়া হচ্ছে, কেননা উখিয়া বাজারের ২ শ হিন্দু পরিবারের মধ্যে এই একটি মাত্রই মুসলিম পরিবার। তারা চায়না আমরা এই ২ শ পরিবারের মাঝে আমরা বসবাস করি ।
মুন্সী পরিবারের ভিটে মাঠি সম্পর্কে পাঠক সমাজের যা জানা দরকার পাঠক সমাজেরঃ-
উখিয়া বাজারে পাশে অবস্থিত দেড় শ বছরের পুরানো বাড়ির আঙ্গিনায় গিয়ে দেখা যায়, ওয়ালা পালং মৌজার ৯১৬ নং খতিয়ানে ৭০২৬ দাগ, ৭৩১৭ দাগের জমি যা ২২/১০/৫৩ ইংতে খরিদসুত্রে মৃত জাকির হোসেন মুন্সীর নামে বিএস লিপিবদ্ধ রয়েছে। সম্প্রতি ওই জমিতে একটি গৃহ নির্মাণ শুরু করলে রতন দে গং এর অভিযোগের ভিত্তিতে উখিয়া থানা পুলিশ নির্মানস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ রাখার জন্য বলে। এভাবে কমপক্ষ্যে ৫/৬ দফা পুলিশ আসার পর সর্বশেষ উখিয়া থানায় পরিবারের সকল সদস্যকে ডেকে নিয়ে যায়, সেখানে অফিসার ইনচার্জ আহমেদ সঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, উর্ধ্বতনের চাপ আছে, আপনারা কাজ বন্ধ রাখেন, আমরা এ বিষয় নিয়ে চেয়ারম্যান সহ বসবো।
ইত্যবসরে হঠাৎ নাটকীয় ভাবে প্রশাসনকে সম্পুর্ন বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোক জড়ো করে উখিয়া সদরে নিয়ে এসে প্রধান সড়ক অবরোধ করে। এ সময় তৎকালীন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্যাট আমিনুল এহসান খান ও ওসি সাহেবের হস্থক্ষেপে তারা অবরোধ তুলে নিতে বাধ্য হয়।
অপরদিকে তৎকালীন সময়ে সনাতনী সম্প্রদায়ের রবী, রতন ও মৃদুলের মৌখিক আবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের নিয়ে সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেন। পরিদর্শনকালে নেতৃবর্গ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পায়, দীর্ঘ শতবর্ষ বংশানুক্রমে মৃত বাচামিয়া অতপর তার পুত্র জাকের হােেসন মুন্সীর মৃত্যুস্থলে রফিক, শাহাব, খুরশিদা, নাজিম, জসিম, মিসবাহ, মোসলেহ, কফিল, সাজেদা, খালেদা ও শাহিন ওয়ারিশসুত্রে প্রাপ্তমতে কয়েকটি বসতবাড়িতে রুপান্তর করে বসবাস করে আসছে জন্মাবধি।
এদিকে কথিত শ্বসান বা বনভুমিতে জবর দখলকারী উল্লেখ করে উজ্জ্বল দাশ, হারাধন চক্রবর্তী, সজল ধর, প্রদীপ ধর, যতীন্দ্র দাশ, হারাধন ড্রাইভার, শ্যমল দাশ, নুরুল আলম, বাদশা মিয়া ও বাদল কর্মকারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে ২২/৮/২০০৯ তারিখে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু উল্লেখিত লোকদের বিরুদ্ধে কোন আইনী প্রতিকার না চেয়ে, শুধুমাত্র একটি মুসলিম পরিবারে পিছু পড়ায়, এলাকার সচেতন সমাজকে ঘটনাটি নিয়ে রীতিমতো ভাবিয়ে তুলেছে।
উল্লেখ্য, ওই জমিটি ভুমিহীন পরিবারের প্রতি আদিষ্ট হয়ে জাকের হোসেন মুন্সি নামে ১/১২/৮৬ইং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কক্সবাজার মহোদয়ের কাছে আবেদন করলে নালিশি জমি থেকে ৪০ শতক জমি শ্ৰেণী পরিবর্তন করে অনুমোদন ঘোষনা করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব। এ প্রেক্ষিতে নালিশি জমি বিষয়ে মামলাটি বর্তমানে সিনিয়র সহকারি জজ আদালত কক্সবাজারে বিচারাধীন রয়েছে ।
সীমান্তবাংলা/০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১