রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৮ পূর্বাহ্ন

শিরোনামঃ
প্রতিষ্টাতা কমিটির উদ্যোগে রামু প্রেস ক্লাবের ৩৬ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপিত  নরসিংদীতে অনির্দিষ্টকালের জন্য জনতা জুটমিল বন্ধ ঘোষণা নরসিংদীতে কারাগার থেকে লুট হওয়া শটগান ও চায়নিজ রাইফেলের ম্যাগজিন উদ্ধার উখিয়ায় কেন্দ্রীয় ফেমাস সংসদের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন সম্পন্ন উখিয়ায় অরক্ষিত গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির হিড়িক, আইনের কোন বালাই নাই সিলেটে বিমান থেকে উখিয়ার সালাউদ্দিন র‍্যাবের হাতে আটক।  বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও গতিধারা নতুন করে বিনির্মাণ করতে হবে ” মুহাম্মদ শাহজাহান ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া কমপ্লেক্সে হামলার প্রতিবাদে সিরাজগঞ্জে সমাবেশ। কর্মজীবনের ইতি টানলেন প্রধান শিক্ষক রবিউল আলম নরসিংদীতে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন
বিভাগীয় প্রধান নিয়োগে নিয়ম মানছেন না বেরোবি ভিসি

বিভাগীয় প্রধান নিয়োগে নিয়ম মানছেন না বেরোবি ভিসি

সীমান্তবাংলা ডেক্স : বিভাগীয় প্রধান নিয়োগে সুস্পষ্ট বিধি-সংবিধি থাকলেও সেসবকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে একের পর এক বিভিন্ন বিভাগে বিভাগীয় প্রধান পদে পছন্দের লোককে বসাচ্ছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ।

নানা অভিযোগে সমালোচিত বেরোবির এই ভিসির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, বিভাগের যোগ্য শিক্ষককে বাদ দিয়ে আইন ও বিধির কোনও তোয়াক্কা না করেই পছন্দের শিক্ষককে বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব দিচ্ছেন তিনি।

এছাড়া নিজের ক্ষমতা একচ্ছত্র রাখতে বেরোবি উপাচার্য নিজেই একই সঙ্গে কয়েকটি বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব নিয়ে রেখেছেন। এদিকে ক্যাম্পাসে না থেকে উপাচার্যের সার্বক্ষণিক ঢাকায় অবস্থানের কারণে সেসব বিভাগের একাডেমিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ায় হয়রানি হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর আইন ২০০৯ (২০০৯ সনের ২৯ নং আইন) এর ২৮(৩) বিধি মোতাবেক- যদি কোনও বিভাগে অধ্যাপক না থাকেন তাহা হইলে ভাইস-চ্যান্সেলর সহযোগী অধ্যাপকের মধ্যে হইতে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পালাক্রমে একজনকে বিভাগীয় প্রধান নিযুক্ত করবেন।

তবে শর্ত আছে, সহযোগী অধ্যাপকের নিম্নের কোনও শিক্ষককে বিভাগীয় প্রধান পদে নিযুক্ত করা যাবে না। সহযোগী অধ্যাপক পদমর্যাদার কোনও শিক্ষক কোনও বিভাগে কর্মরত না থাকলে, সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রবীণতম শিক্ষক বিভাগের প্রধান হবেন।

কিন্তু বিভাগীয় প্রধান নিয়োগ নিয়ে আইনের কোনো শর্তই মানছেন না উপাচার্য কলিমউল্লাহ। আইন লঙ্ঘন করে যোগ্য ব্যাক্তিকে বঞ্চিত করে নিজের পছন্দের ব্যাক্তিকে দিচ্ছেন বিভাগীয় প্রধান নিয়োগ কিংবা নিজেই দখল করে থাকছেন বিভাগীয় প্রধানের পদ।

জানা যায়, গত ১৪ জানুয়ারি লোকপ্রশাসন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের মেয়াদ পূর্ণ করেন বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক যুবায়ের ইবনে তাহের। আইন ও জ্যেষ্ঠতা অনুযায়ী বিভাগটির শিক্ষক আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদ বিভাগীয় প্রধান হওয়ার কথা। কিন্তু তাকে নিয়োগ না দিয়ে ভিসি নিজেই অবৈধভাবে বিভাগটির বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক আসাদুজ্জামান ভিসি কলিমউল্লাহর অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব অবস্থানে থাকার কারণে তাকে নিয়োগ দেয়া হয়নি বলে মনে করছেন বিভাগটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

এর আগে ২০১৭ সালেও ভিসি নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ ওই বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের পদ দখল করে বিভিন্ন জটিলতার সৃষ্টি করেন। পরে শিক্ষার্থীদের কঠোর আন্দোলনের মুখে পড়ে ভিসি বিভাগীয় প্রধানের পদ ছাড়তে বাধ্য হন। শুধু তাই নয় ভিসি বিভাগটির প্রধান থাকাকালীন সময়ে একজন শিক্ষক তার বিরুদ্ধে বিভাগের অর্থ তছরুপের লিখিত অভিযোগ করেন।

জেন্ডার এন্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের যোগ্য শিক্ষক থাকার পরেও সম্পূর্ণ অবৈধভাবে বিভাগটির বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্বও নিয়ে রেখেছেন ভিসি। মাসের পর মাস ভিসি ক্যাম্পাসে না থাকায় এক প্রকার গায়েবিভাবেই চলছে বিভাগটি।

একাডেমিক প্রয়োজনে বিভাগীয় প্রধানের স্বাক্ষর নিতে হয়রানির শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। শুধু তাই নয় বিভাগটির প্লানিং কমিটিতে অবৈধভাবে একাই দুই সদস্যের পদ নিয়ে ভিসি প্লানিং কমিটির অন্য সদস্যের স্বাক্ষর ছাড়াই নিয়োগ বোর্ড সম্পন্ন করে শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

একই ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগে। বিভাগটিতে প্রধান হওয়ার যোগ্য একজন সহযোগী অধ্যাপক থাকা সত্ত্বেও সহকারী অধ্যাপক তানিয়া তোফাজকে অবৈধভাবে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। অথচ আইন অনুযায়ী সহযোগী অধ্যাপক ড. বিজন মোহন চাকী বিভাগীয় প্রধান হওয়ার কথা। আইন মেনে বিভাগীয় প্রধান নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বিভাগটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

এদিকে ঢাকায় গিয়ে ভিসির সঙ্গে ফটোসেশন না করায় একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের যোগ্য শিক্ষককে বিভাগীয় প্রধান নিয়োগ না দিয়ে বিভাগটির অন্য এক শিক্ষককে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

ভিসির সঙ্গে বিভাগের প্রধান হওয়া থেকে বঞ্চিত ওই শিক্ষকের একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেখানে শোনা যায়, ভিসি একাউন্টিং বিভাগের শিক্ষক উমর ফারুককে ফোন দিয়ে ঢাকায় তার সঙ্গে ফটোসেশন করে নিয়োগপত্র নেয়ার কথা বলেন।

কিন্তু ঢাকায় গিয়ে নিয়োগপত্র নিতে অপারগতা প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন ওই শিক্ষক। এর পরপরই উমর ফারুককে বাদ দিয়ে একই বিভাগের শিক্ষক আমির শরিফকে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব দেন ভিসি।

অপরদিকে বিভাগে তিন বছরের জন্য বিভাগীয় প্রধান নিয়োগ দেয়ার আইন ও রীতি থাকলেও তারও খেলাপ করছেন ভিসি। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রধান নিয়োগে নিয়ম ভঙ্গ করে দুই বছরের জন্য নিয়োগ প্রদান করেন। এ ঘটনায় ভিসি বরাবর স্মারকলিপিও দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

উল্লেখিত বিভাগগুলো ছাড়াও ভিসির বিরুদ্ধে এর আগে আইন লঙ্ঘন করে ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এসব অনিয়মের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. আবু কালাম মো. ফরিদ উল ইসলাম। বিভাগের একাডেমিক কার্যক্রমে স্বাভাবিকতা রাখতে আইন ও বিধি অনুযায়ী বিভাগীয় প্রধান নিয়োগের আহবান জানিয়েছেন এ শিক্ষক নেতা।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, ‘আইনের মধ্যে থেকে যার বিভাগীয় প্রধান হওয়ার কথা তাকে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব দেয়া প্রয়োজন। এতে করে বিভাগের কাজ গতিশীল হয় আর আইনেরও লঙ্ঘন হয় না।’

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে বেরোবি ভিসি অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

১৫ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/ডিএম/এডমিন/ইবনে

 

সংবাদটি শেয়ার করুন

পোষ্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© কপিরাইট ২০১০ - ২০২৪ সীমান্ত বাংলা >> এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ

Design & Developed by Ecare Solutions