মুক্তিযুদ্ধের একটি স্বপ্নও পূরণ হয়নি: মির্জা ফখরুল

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: মার্চ ২, ২০২১

সীমান্তবাংলা ডেক্স : স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে মুক্তিযুদ্ধের একটি স্বপ্নও পূরণ হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় যে শপথ আমরা নিয়েছিলাম, যে স্বপ্ন আমরা দেখেছিলাম, গত ৫০ বছরে সেই স্বপ্ন একটাও পূরণ হয়নি। গত পঞ্চাশ বছর ধরে দেশকে বিভক্ত করেছে আওয়ামী লীগ।’

ঐতিহাসিক জাতীয় পতাকা উত্তোলন দিবস উপলক্ষে বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির আয়োজনে মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে এসে বিএনপি মহাসচিব একথা বলেন। জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে আলোচনা সভাটির আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা যে স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপন করছি, তার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা। কারণ, আজকে যারা ক্ষমতায় আছে, এই আওয়ামী লীগের কারণে গোটা জাতি আজ বিভক্ত হয়ে আছে। তার কেবল তাদের নেতা ও ব্যক্তিদের কৃতিত্ব ছাড়া আর কারও অবদান স্বীকার করে না।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘স্বাধীনতা কোনো একজন ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা দলের কারণে আসেনি। স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা বাঙালির বহুকালের। সেই ব্রিটিশ পিরিয়ড থেকে যে আন্দোলন, সেই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে এ অঞ্চলের মানুষেরা। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এখানে আন্দোলন হয়েছে। সেই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সোমবার শ্রদ্ধা জানিয়েছি শেরে বাংলা একে ফজলুল হককে, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে, শেখ মুজিবুর রহমানকে। কিন্তু আমরা সবচেয়ে বেশি শ্রদ্ধা জানাতে চাই জিয়াউর রহমানকে। যিনি যুদ্ধ ঘোষণা না করলে এ দেশ স্বাধীনত হতো না, যিনি যুদ্ধ ঘোষণা না করলে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব হতো না। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে, স্বাধীনতার পর যারা ক্ষমতায় বসলেন, তাদের হাতেই গণতন্ত্র হত্যা হয়েছে। তারাই সর্বপ্রথম পুরোনো কালাকানুনগুলো নিয়ে এসেছেন।

তিনি বলেন, ‘আজকে একমাত্র ইস্যু হচ্ছে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। কারণ, আমাদের গণতন্ত্র হারিয়ে গেছে। সমস্ত চেতনা তারা লুণ্ঠন করে নিয়ে গেছে।’

পুলিশকে প্রতিপক্ষ ভাবা হচ্ছে কেন- পুলিশের আইজির এমন প্রশ্নের দিকে ইঙ্গিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদেরও তো একই প্রশ্ন। আপনি শিক্ষিত মানুষ, ব্রাইট অফিসার, সুদর্শন- আপনি কি একবারও প্রশ্ন করেছেন নিজেকে, পুলিশকে কেন প্রতিপক্ষ ভাবা হয়? কারা প্রতিপক্ষ ভাবছে? প্রশ্ন নিজেকেই করে উত্তর খুঁজে বের করুন।’

তিনি বলেন, ‘আজকে যখন নির্বাচন হয়, সেই নির্বাচনে পুলিশ ভোট দিয়ে দেয়, অন্য কাউকে দরকার হয় না। আজকে যখন রাজনৈতিক দলগুলো নিয়মতান্ত্রিকভাবে কর্মসূচি পালন করতে যায়, তখন তাদের নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতন করা হয়? আজকে কেন থানায় থানায় বলা হয়- দেশ তো আমরা চালাই। আমরা সরকার বানিয়েছি, আমরাই সবকিছুর ব্যবস্থা কবর?’

অনুষ্ঠানে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘৫০ বছর আগে এই দিনটা ছিল অনন্য একটি দিন। সেদিন ঢাবির বটতলায় হাজার হাজার ছাত্রজনতা উপস্থিত হয়েছিল। মঞ্চে ছিলেন ছাত্রনেতা নূরে আলম সিদ্দিকী, আ স ম আব্দুর রব, আব্দুল কুদ্দুস মাখন, শাহজাহান সিরাজ। আমি ছিলাম না। আমি ছিলাম চট্টগ্রাম। কিন্তু ওখান থেকে ঢাকার অবস্থা বুঝতে পেরেছিলাম।’

তিনি বলেন, ‘এরা কাউকে কথা বলতে দেয় না। কেউ কথা বলতে চাইলে প্রথম ভয় দেখায়, তারপর মামলা দেয়, গ্রেফতার করে, জেলে নেয়। অতঃপর জেলে মৃত্যুবরণ করলেও তাদের কিছু আসে যায় না, তবুও ওরা কাউকে কথা বলতে দেবে না।’

লেখক মুস্তাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনা তুলে ধরে মান্না বলেন, ‘এই মৃত্যুর জন্য দায়ী কে? খুবই মজার ব্যাপার— প্রধানমন্ত্রী বললেন, কারও অসুখ-বিসুখ হয়ে মারা গেলে আমাদের কী করার আছে?

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলক জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সেলিমা রহমান, নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর প্রমুখ।

০৩মার্চ/বিইউ/ডিএম/এডমিন/ইবনে

সংবাদটি শেয়ার করুন