কক্সবাজারে হোটেল ভর্তি, সৈকতে রাত কাটাচ্ছে পর্যটকরা

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২১

সীমান্তবাংলা ডেক্স : আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসসহ সপ্তাহ শেষে টানা তিন দিনের ছুটিতে বিপুল পরিমাণ পর্যটকের সমাগম হয়েছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। এ কারণে হোটেলে রুম না পেয়ে সৈকতের বালিয়াড়ি ও বাসে রাত্রি যাপন করছে পর্যটকরা।

গত বৃহস্পতিবারের (১৮ ফেব্রুয়ারি) পর থেকে কক্সবাজারমুখী হয়ে উঠে বিপুল পরিমাণ পর্যটক। এতে কক্সবাজারের চার শতাধিক হোটেল-মোটেলে চড়া দামেও রুম পাওয়া যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে সৈকতের বালিয়াড়িতে রাত যাপন করছে অনেক পর্যটক। আবার কেউ কেউ যাত্রীবাহী বাসের ভেতরেই রাত কাটাচ্ছেন। এসবের মাঝেও পর্যটকদের সৈকতে নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. জিল্লুর রহমান জানান, “ছুটিতে কয়েক লাখ পর্যটক কক্সবাজারে অবস্থান নিয়েছে। এসব পর্যটকদের উপস্থিতি দেখে ট্যুরিস্ট পুলিশ আগের চেয়ে দ্বিগুণ নিরাপত্তা জোরদার করেছে। কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ও হোটেল-মোটেল এলাকায় বিরামহীনভাবে দায়িত্বপালন করছে তারা। কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মোতায়েন করা হয়েছে সাদা পোশাকে বিশেষ পুলিশ। সৈকতে তিল ধারণের জায়গাও নেই। গত পাঁচ বছরের সময়েও এক সঙ্গে এতো ভিড় হয়নি।”

ট্যুারিস্ট পুলিশের পরিদর্শক শাকের আহমদ জানান, সৈকতে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে ট্যুারিস্ট পুলিশের ১২টি ইউনিট কাজ করছে। মাস্ক পরিধানসহ শারীরিক দূরত্ব মানতে প্রচারণার পাশাপাশি সার্বিক নিরাপত্তা জোরদারে অভিযোগ কেন্দ্র চালু, প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে।

কক্সবাজার কলাতলী মেরিন ড্রাইভ হোটেল-মোটেল গেস্টহাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুখিম খান বলেন, “বিপুল পরিমাণ পর্যটক কক্সবাজারে এসেছে। শনিবার একদিনেই তিন লক্ষাধিক পর্যটকের সমাগম ঘটেছে। এর আগের দিন শুক্রবারও ছিল একই রকম। কক্সবাজারের সাড়ে চার শতাধিক হোটেলে দুই লক্ষাধিক অতিথি থাকতে পারেন। বাদবাকিদের একটু কষ্ট করে রাত অতিবাহিত করতে হচ্ছে।”

এদিকে হোটেলে রুম না পাওয়ার সুযোগে খাবার হোটেলগুলোও বাড়িয়ে দিয়েছে খাবারের দাম। পাশাপাশি পর্যটন এলাকায় রাস্তা মেরামতের কাজ চলমান থাকায় যানজটসহ নানা সংকট ও দুর্ভোগে পড়েছে পর্যটকরা। অনেক ভ্রমণকারী রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন রাত কাটানোর একটি কক্ষের জন্য।

ঢাকা থেকে আসা মাসুদুল আলম নামের এক পর্যটক জানান, “ছুটিতে প্রথমবার কক্সবাজার সৈকত ভ্রমণে এসেছি। কিন্তু, এখনকার অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে ঢাকার মতো মানুষের ভিড়। শুক্রবার কক্সবাজার আসলেও এক রাত সৈকতে ঘুরাঘুরিতে কাটিয়েছি। শনিবার চড়া দামে হোটেলে রুম পেয়েছি। আমার মনে হয় মৌসুমে কক্সবাজার না এসে অফ-সিজনে আসা উচিত।”

ফরিদপুরের শামশুল হক দম্পতি জীবনের প্রথমবার এসেছেন কক্সবাজারে। তারা জানান, “এই প্রথমবার এসে কক্সবাজারকে দেখলাম। একসাথে এত বিপুল সংখ্যক মানুষ আর দেখিনি। সৈকতে এত বেশি মানুষ দেখে মনে হচ্ছে এটা ঢেউয়ের সাগর নয়, যেন মানুষের সাগর।”

নারয়ণগঞ্জের রিজভী আহমদ ন্যান্সি বলেন, “এতদিন করোনার কারণে ঘরে বন্দি জীবন কাটিয়েছি। সাগর পাড়ে এসে মনে হচ্ছে, এখন আমরা মুক্ত পাখির মত উড়ছি, আর ঘুরছি।”

উল্লেখ্য, বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই গাড়িতে গাড়িতে পর্যটকের দল কক্সবাজারে আসতে শুরু করে। বৃহষ্পতিবার রাতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের নানা প্রান্ত থেকে ছেড়ে আসা কয়েকশ নৈশ কোচ শুক্রবার ও শনিবার সকালে এসে পৌঁছে কক্সবাজারে। এ কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে অসহনীয় যানজট লেগে যায়। একসঙ্গে প্রচুর সংখ্যক যানবাহন আসায় সেগুলো কক্সবাজার শহরের কয়েক কিলোমিটার দূরে থামিয়েই যাত্রীদের নামিয়ে দিতে হচ্ছে।

 

20 ফেব্রুয়ারি/এডমিন/ইবনে

সংবাদটি শেয়ার করুন