সীমান্তবাংলা ডেক্স : বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে শুরু হলো বহুল প্রত্যাশিত করোনার টিকা প্রয়োগ। এ কর্মসূচি উদ্বোধনের দিন বুধবার ২৭ জনের শরীরে প্রয়োগ করা হয়েছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের উৎপাদিত কোভিশিল্ড টিকা।
টিকা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে আতঙ্ক ছড়ানো হলেও যারা প্রথম দিনেই টিকা নিয়েছেন তারা সবাই সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন।
এরপর বীর মুক্তিযোদ্ধা, চিকিৎসক, সংসদ সদস্য, গণমাধ্যমকর্মীরাও করোনার টিকা নেন। টিকা নেয়ার পর সবাইকে বেশ উৎফুল্ল দেখা গেছে। তবে সবার কণ্ঠে ছিলো ইতিহাসের সাক্ষী হওয়ার আনন্দ।
টিকা নিয়ে আতঙ্ক না ছড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে তারা বলছেন, সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে প্রথম দিনে টিকা নিয়েছেন। সবাইকে টিকা নেয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
প্রথম টিকাগ্রহণকারী নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তা বলেছেন, আমি সুস্থ আছি। দেশবাসীকে করোনার টিকা নিতে অনুরোধ জানাচ্ছি। এই টিকা নেয়ার মধ্য দিয়ে দেশে করোনামুক্ত হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আমি প্রথম টিকা নিতে অনেক আনন্দ ফিল করছি। এর মাধ্যমে একটি ইতিহাসের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরেছি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতান প্রথমদিনেই ভ্যাকসিন নিয়েছেন। কিন্তু ভ্যাকসিন নেয়ার বিষয়ে আগে থেকে পরিবারকে কিছু জানাননি তিনি।
তিনি বলেন, যেভাবেই হোক মানুষের মধ্যে একটা অপপ্রচার ছড়িয়ে পড়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে অন্য কর্মীদের বলবো ভ্যাকসিন নেয়ার কথা, আমি যদি না নিয়ে বলি তাহলে সেটা হয়তো সঠিক হবে না। আমি আমার পরিবার, সহকর্মীদের জানাইনি। আমি নিজে থেকেই সংকল্প করেছি। ভ্যাকসিন নিলে মানুষের যে ক্ষতি হবে এই অপপ্রচার বন্ধ হবে।
তিনি আরও বলেন, ভ্যাকসিন খুবই সাধারণ একটা বিষয়। খুবই ছোট একটি সুই, কোন ব্যথাও বোধ করিনি আমি। ছোট বেলায় আমরা ভ্যাকসিন নিতেও ব্যথা পেয়েছি। এখন আরও আধুনিক, এখন মানুষকে কম কষ্ট দেয়া হয়।
ডা. অরূপ রতন চৌধুরী বলেন, ভ্যাকসিন আমাদের দেশে একটি আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। আমি যেহেতু একজন ফ্রন্টলাইন সৈনিক আমার প্রথম থেকেই ইচ্ছা ছিল ভ্যাকসিন নেয়ার। এটি আমাদের প্রত্যকের জন্য জরুরি। আমি আজকে এটা নিয়ে প্রমাণ করলাম যে এটার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নাই। যাদের মনে সন্দেহ রয়েছে বা ভয় পাচ্ছেন তাদের বলতে চাই– আমি নিয়েছি আপনারাও নিন।
কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আহমেদ লুৎফুল মোবেন বলেন, করোনার মধ্যেও আমরা কাজ করে গেছি। চিকিৎসা যখন শুরু হলো আমরা করে গেলাম। এখন ভ্যাকসিনের সুযোগ এসেছে, ভ্যাকসিনের মাধ্যমে যুদ্ধের সুযোগ হয়েছে তাই মোকাবেলা করছি। এই মোকাবেলা আমাদের সবাই করতে হবে। যেকোনো ইঞ্জেকশনের কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। সেটার জন্য অবজারভেশন টিম আছে। একটি নিরাপদ সময় পর তাদেরকে ভ্যাকসিন সেন্টার থেকে ছেড়ে দেয়া হবে। যদি কোনো সমস্যা হয় সেটা জানানোর মাধ্যম আছে।
এদিকে টিকাদান কর্মসূচির আওতায় বৃহস্পতিবার ঢাকার ৫টি সরকারি হাসপাতালে ৫০০ জনকে দেয়া হবে টিকা। পরে ধীরে ধীরে পাঠানো হবে সারাদেশে। ৭ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী শুরু হবে এই কার্যক্রম।
২৭জানুয়ারি/এসএস/এডমিন/ইবনে