৪ টি সন্ত্রাসী গ্রুপের কাছে জিম্মি পার্বত্য চট্রগ্রামের পাহাড়ী ও বাঙ্গালীরা

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২, ২০২০

সীমান্তবাংলাঃ পার্বত্য চট্রগ্রামে সন্ত্রাসী গ্রুপ গুলোর আধিপত্য বিস্তার ও চাদাবাজির ঘঠনায় থেমে নেই হত্যাকান্ড সহ নানান অওকর্ম। চলতি বছরে এ পর্যন্ত আধিপত্য বিস্তার নিয়ে খুন হয়েছে ৫২ জন। হতাহত হয়েছে অনেক।

সন্ত্রাসী গ্রুপ গুলো প্রতি বছর ৩০০ কোটি টাকার ও বেশি চাঁদা আদায় করে বলে জানা গেছে বিস্বস্থ সুত্রে। গত ১০ মাসে ২৮ বার গোলাগুলির ঘঠনা ঘঠেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে।
এসব ঘটনায় আটক হয়েছে ১৬০ জন সন্ত্রাসী।

চট্টগ্রামের তিন পার্বত্য জেলায় শান্তি চুক্তির মূল অংশীদার ছিলো জনসংহতি সমিতি এবং চুক্তি বিরোধী অবস্থানে ছিলো ইউপিডিএফ। তাদের আধিপত্য বিস্তারের লড়াই ২০ বছরের বেশি সময় ধরে চলে আসছিলো। এখন তার সাথে যুক্ত হয়েছে জেএসএস সংস্কার এবং ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক নামে আরও দু’টি সংগঠনের সংঘাত। চাঁদার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে সংগঠনগুলোর মধ্যে বিরোধ যেমন হচ্ছে, তেমনি হচ্ছে নতুন নতুন মেরুকরণ।

শান্তি চুক্তির ২৩ বছর পরও পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর আধিপত্যের লড়াই, হত্যা-অপহরণ এবং চাঁদাবাজির কারণে পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি ফিরছে না। বরং আঞ্চলিক দলভিত্তিক সন্ত্রাসী বাহিনীর নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে পাহাড়ি-বাঙালি স্থানীয় সব জাতি গোষ্ঠী। চলতি বছরের প্রথম দশ মাসেই এসব বাহিনীর হাতে খুন হয়েছে ৫২ জন।

তবে এসব অপকর্মের ক্ষেত্রে পাহাড়ের সন্ত্রাসীরা এক জোট হয়েই কাজ করে বলে জানান খাগড়াছড়ি পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল মজিদ। বলেন, এখন চারটি সংগঠন পাহাড়ে আধিপত্য বিস্তার করছে। তারাই মূলত পাহাড়ের মানুষদের নির্যাতন করছে।

তিন জেলায় গত তিন বছরে এক হাজার কোটি টাকার চাঁদা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে পাহাড়ি চারটি সন্ত্রাসী গ্রুপের বিরুদ্ধে। বড় বড় বিনিয়োগ পর্যন্ত আটকে যাচ্ছে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর বাধার কারণে। এমনকি পাহাড় থেকে বাজারে পণ্য আনতে গেলেও দিতে হয় নির্দিষ্ট অংকের চাঁদা।

এতে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানান খাগড়াছড়ি জেলা বার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আকতার উদ্দিন মামুন। বলেন, যে যেভাবে পারছে চাঁদা আদায় করছে। নামে বে-নামে, চিরকুট আকারে তারা চাঁদার পরিমাণ জানিয়ে দেয়। টাকা না দিলে বিনিয়োগ আটকে দিচ্ছে বলে জানান এই আইনজীবী নেতা।

তবে, পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর চাঁদাবাজি সহনশীল মাত্রায় রয়েছে বলে দাবি করেছেন জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, গত ১৫ মাসে আমার কাছে চাঁদাবাজিতে জর্জরিত আছেন- এমন কোন ব্যক্তির কোন অভিযোগ আসে নি। এতে বোঝা যায় চাঁদাবাজি সহনশীল মাত্রায় রয়েছে।

আর জেলার পুলিশ সুপার আবদুল আজিজ বলছেন, দুর্গম এলাকা হওয়ায় তাদের প্রতিরোধে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তবে তারা ঘটনা শোনার সাথে সাথেই সেখানে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন।

গত ১০ মাসে তিন পার্বত্য জেলায় পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর সাথে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অন্তত ২৮ বার গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ১৬০ জন সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়েছে।

( সীমান্তবাংলা/ শা ম / ২ ডিসেম্বর ২০২০)