পটুয়াখালীতে গড়ে উঠেছে বিষধর সাপের খামার। ঔষধ শিল্পের জন্য বিশেষ অবদান রাখতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০

নিবিড় পরিচর্যায় পটুয়াখালীর পল্লীতে গড়ে উঠেছে বিশেষ এক সাপের খামার। সেখানে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির বিষধর সাপ। প্রতিদিন দর্শনার্থীরা এক নজর দেখতে ছুটে আসছেন এখানে। কিন্তু দীর্ঘ দেড় যুগেও মেলেনি বিষ উৎপাদনের অনুমোদন। বিশেজ্ঞরা বলছেন,প্রতি বছর দেশের ওষুধ শিল্পে আমদানী হয় প্রায় সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকার সাপের বিষ। অথচ দেশে রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা। ণীতিমালার অভাবে বিকাশ হচ্ছেনা সাপের খামার।

পটুয়াখালী শহরের জিরো পয়েন্ট থেকে ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে মাদারবুনিয়া ইউনিয়ন। সেখানের মেঠো পথের এক অজোপাড়া গাঁ নন্দীপাড়া গ্রাম। এখানের সৌদি প্রবাশি আবদুর রাজ্জাক বিশ্বাস গড়ে তুলেছেন ব্যাতিক্রমধর্মী এক সাপের খামার। তিনি সাংবাদিকদের জানান, ইন্টারনেটে কয়েকটি দেশের সাপের খামার পরিদর্শন করেন তিনি। পরে ক্লাফোরনিয়ার এক খামারীর সাথে গড়ে ওঠে তার সখ্যতা। এর ভ্যানাম বা বিষ জীবনরক্ষাকারি ওষুধে ব্যাবহার হয়। যার মূল্য কোটি কোটি টাকা।

এসব নিয়ে ওই বিদেশী খামারীর সাথে আলাপ হয় রাজ্জাকের। সিদ্ধান্ত নেন একটি সাপের খামার করার। সৌদি থেকে বাড়ি এসে পাশের পরিত্যাক্ত একটি বাড়ি থেকে ১াট বিষধর সাপ আর ২৪টি ডিম দিয়ে শুরু খামার। ্ওখন প্রায় আড়াইশ নানা জাতের বিষধর সাপ আছে এখানে। নিবন্ধনের জন্য বিধিমত বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেও কাজ হয়নি বলে জানান খামারি রাজ্জাক বিশ্বাস। বিষ আমদানী করতে না পারায় পুঁজি খাটিয়ে বেশ বিপাকে পরেছেন তিনি। বললেন ঠিকমত বেতন দিতে না পারায় কর্মচারীর কমে গেছে সংখ্যা। বিষ উৎপাদনে খুব দ্রুত অনুমোতি চান রাজ্জাক।

দর্শনার্থীরা জানান, রাজ্জাক বিশ্বাস যে এ রকম একটি ব্যাতিক্রম উদ্যোগ নিয়েছেন তা সর্বমহলে প্রসংশনীয়। সরকারের উচিত দ্রুত অনুমোদন দেয়া। তাহলে দেশের অর্থণীতি আরো শক্তিশালী হবে।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ব বিদ্যালয়ের পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা বিভাগের ডীন একে আহাদ চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান,আমাদের দেশে যদি এসব সাপের খামার তৈরী করে দেশের চাহদা পুরুন করে বিদেশে আমদানি করা যাবে। ভারত-থাইল্যান্ডসহ অন্য দেশ থেকে বড় ধরনের রেমিটেন্স দরকার হবেনা। সরকারের সাথে সম্মিলিতভাবে যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন দেয়ার অনুরোধ জানান আহাদ চৌধুরী।

সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, দেশে সাপ আছে ৯০ প্রজাতির। এর মধ্যে বিষধর সাপের সংখ্যা কুড়ি প্রজাতির। দেশের ঝোপ-ঝাড়-জঙ্গল আর পাহাড়ে বিষধর সাপের অবাধ বিচরন।এর মধ্যে কোবরা-কিং কোবরা,গোখরা,দারাজ,লাউডাগা,ফনিমনসা,দুধরাজ,কালনাগিনী,কেউটা ও রাসেল ভাইপার অন্যতম। ২০১৪ সালে দেশে ৪৫টি সাপের খামার ছিলো। কিন্তু সরকারী অনুমোদন না পাওয়ায় এখন চালু মাত্র ৪/৫টি। বিশ্ব-বাজারে প্রতি গ্রাম হোয়াইট ব্লান্ড ভাইপারের বিষ ৩ হাজার ৯শ’৪৫ ডলার। রাসেল ভাইপারের ১৮শ’ এবং গোখড়ারর ৩শ’৫০ ডলারে বিক্রি হচ্ছে।
সরকারের সিদ্ধান্ত আর পৃষ্ঠ-পোষকতা পেলে দেশের ওষুধ শিল্পের চাহিদা মিটিয়ে সাপের বিষ রপ্তানী করা যাবে বিদেশেও আর প্রতিটি খামার থেকে আয় হবে কয়েক কোটি টাকা। এমনটাই মনে করছেন প্রানী বিষেজ্ঞরা।

সীমান্তবাংলা/ শা ম/ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০