ইসলামপুরে টেলিফোনের সাথে আনারসের তুমুল ভোট যুদ্ধের ইঙ্গিত

Date:

এন আলম আজাদ কক্সবাজার ;

কক্সবাজার জেলার ঈদগাঁও উপজেলার ১নং ইসলামপুর ইউনিয়নের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্হানীয় ভোটারদের মধ্যে উংসাহ উদ্দীপনায় দারুণ প্রভাব ফেলছে।ইউনিয়নের প্রতিটি জনপদই এখন আলোচনা সমালোচনায় মুখর।কে হবেন এই ইউনিয়নটির আগামী কর্ণধার সেটিই এখন ভোটারদের জল্পনা কল্পনায় মুখর।নির্বাচনের প্রতিদ্বন্ধী ৫ চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিগত দিনের কর্মকাণ্ডের চুল-ছেঁড়া বিশ্লেষণ চলছে এখন।ভোটারদের এসব কল্পনার সাথে সংগতি রেখে প্রার্থীরাও যাচ্ছে তাদের দ্বারে দ্বারে।সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে তাদের পদচারণা।

গ্রামগঞ্জের হাট বাজার কিংবা জন সমাগম স্হানে পথসভা কিংবা গণসংযোগে দিন পার করছেন প্রার্থীরা।আগামী ২৮ এপ্রিল বহুল প্রতিক্ষিত এ নির্বাচনে ৫ প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করলেও ৪ প্রার্থীকে নিয়েই ভোটারদের হিসাব নিকাশ।৯ টি ওয়ার্ডের পুরুষ ও মহিলা ভোটার মিলিয়ে এই ইউনিয়নটির মোট ভোটার ১৫ হাজার ১ শ জন।
৯ কেন্দ্রের ৪০ টি বুথে ভোট দিয়ে ভবিষ্যত চেয়ারম্যান নির্বাচিত করবেন এসব ভোটাররা।তারা সৎ যোগ্য ও পরোপকারী প্রার্থীকেই নির্বাচিত করবেন এমনটি আশা করছেন স্হানীয় প্রবীণরাও।
এ ইউনিয়নের ৭ টি ওয়ার্ডের প্রায় ৩ শ জন নারী পুরুষ ভোটারদের মধ্যে জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে। অধিকাংশ ভোটাররা মনে করেন,ইতিপূর্বে জনপ্রতিনিধি ছিলেন এমন কাউকে তারা আবারও মূল্যায়নের দিন গুনছেন।সাধারণ ভোটাররা মনে করেন জনগণ ও রাজনীতি বিচ্ছিন্ন কাউকে এ পদে বসানো গলার কাঁটা ছাড়া আর কিছুই নয়।এ কারণে তারা “পুরনো চাল ভাতে বাড়ে”এ তন্ত্র মন্ত্রকেই সঙ্গী করে যোগ্য প্রার্থীকেই তাদের অভিভাবক হিসাবে বেঁচে নেবেন।
নতূন ছাত্র যুব সমাজ ভুক্ত ভোটারদের একটি অংশ মনে করেন,ইসলামপুর ইউনিয়নকে শান্তির মডেলে রূপ দিতে হলে সমাজ বিছিন্ন ও সামাজিকভাবে নিন্দিত কাউকে তারা ভোট দেবেন না।এবারের নির্বাচনে ৪ প্রার্থী নতূন হলেও অন্যজন দীর্ঘ এক মেয়াদে চেয়ারম্যান আবদুল কাদের মাষ্টার। তার প্রতীক টেলিফোন।এছাড়াও আনারস প্রতীকে নির্বাচন করছেন দেলোয়ার হোসেন। তিনি জামাত সমর্থিত হলেও ঘোড়া প্রতীকের মোঃ শরীফ ও অটোরিকশা মার্কা প্রার্থী হাসান আলীর আওয়ামীগের সুবিধা বাদী নেতা হিসাবে এলাকায় চিহ্নিত। অন্যজন শাহেদের তেমন কোন ভোট ব্যাংক নেই।এসব প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীর মধ্যে শেষ মূহুর্তের বাজিমাত করবে কে?তা নিয়ে এখন পাড়া গাঁয়ের চায়ের দোকান ও অলিগলিতে সরব বির্তক জম্পেশ জমছে।চার প্রার্থী মাঠে থাকলেও আগামী নির্বাচনে টেলিফোনের সাথে আনারস প্রতীকে জোর লড়াই হবে বলে এলাকার ভোটারদের জরিপে উঠে এসেছে।
জামাত সমর্থিত দেলোয়ার হোসেন হালে তেমন পানি পাবে না বলে মনে করছেন সাধারণ ভোটাররা। তার রাজনৈতিক দলের দেশ বিরোধী ভূমিকা যুব ও নতূন ভোটারদের অপছন্দ। তাছাড়া তিনি গত নির্বাচনে আহামরি ভোট পেলেও নির্বাচিত হতে পারেননি।তীরে এসে তরী ডুবানোর সেই অপয়া তার ভাগ্যকে তেমন কোন সুবিধা দিতে পারবে না এটিও ধারণা ভোটারদের। তার প্রতিপক্ষ প্রার্থী আবদুল কাদের মাষ্টার এলাকায় দারুণ জনপ্রিয়।দলীয় বিভাজনে তিনি গতবার নির্বাচিত হতে না পারলেও সেই অসময়ের দিন এখন কেটে গেছে।গত ৫ বছরের এলাকার জনগণের সাথে তার সম্পর্ক বেড়েছে। তাছাড়া তিনি বিগত মেয়াদকালীন অনেক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করেছেন যা স্হানীয়রা মনে রেখেছেন।
ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী মোঃ শরীফ বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কালামের সহোদর। তিনি সৌদি আরবের রাষ্ট্রদ্রোহের একটি মামলায় প্রায় ৩ বছর সেখানকার জেল হাজতে।সাধারণ ভোটারদের সাথে এ পরিবারের কয়েকজনের বিরুদ্ধে দূব্যবহার সহ হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া চেয়ারম্যানের ভাই পরিচয়ে প্রার্থী শরীফের বিগত দিনের কর্মকাণ্ডও ভোটাররা সামনে আনছেন।সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সহ নানা অভিযোগে সরকারি দল থেকে বহিস্কৃত এই প্রার্থী মিলাদ মাহফিলের সভা সমাবেশে আলেম ওলামা পেঠানোয় বিতর্কিত। তার এসব অসংখ্য মন্দের কাজ বিবেচনায় আনবেন ভোটাররা।সেই ক্ষেত্রে শরীফের ভালো অবস্থানে থাকা বড়ই কঠিন।

অপর প্রার্থী হাসান আলী সাবেক চেয়ারম্যান মনজুর আলমের আপন ভাই। হাসান আলী নির্বাচনে প্রার্থী হলেও তার নিজস্ব কোন ভোট ব্যাংক নেই।তার এলাকার সাধারণ ভোটারদের সিংহ ভাগেরই তার উপর আস্হা নেই।এলাকার মানুষের দুর্দশা দূর্দিনে সঙ্গী না হলে অবস্থা এমনই হয় বল্লেন নুর মোহাম্মদ নামের এক ভোটার।শরীফ ও হাসানের নির্বাচনী মাঠে এমন অবস্থায় কিছু সুযোগ নিতে পারেন আনারস প্রতীকের দেলোয়ার হোসেন। তবে এ সুযোগ তার জয়ের পাল্লা ভারি করতে পারবে না বলে বিশ্বাস মহিলা ভোটার আনজুম আরার।
ইউনিয়নবাসী বলছেন,সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হলে এলাকায় সত্যিকার জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হবেন।
দুই প্রতিদ্বন্ধীর শক্ত লড়াই হবে এবার।গ্রহণযোগ্য ভোটে ৪০থেকে৪৫% ভোট পাবেন বিজয়ী প্রার্থী।প্রতিদ্বন্ধীতায় ৩০থেকে৩৫% ভোট জমা করতে পারে বিজীত প্রার্থীর ভোট বাক্সে।অন্য দুই প্রার্থীর ঘরে ২৫% ভোট যাবে বলে বিশ্বাস জনমতের। এদিকে এবারের নির্বাচনের জরিপে উন্নয়নকে প্রাধান্য দিতে চান ভোটাররা।সেই হিসাবে সাবেক চেয়ারম্যানের ভাগ্যে শিক্কে ছিঁড়বে এবার ধারণা ভোটারদের। তাছাড়া বিগত দিনে অভূতপূর্ব এলাকার উন্নয়নও নির্বাচনে বিজয়ের বড় সঙ্গী তার।৪ টি ব্রীজ সহ অসংখ্য ছোটখাট রাস্তা-ঘাট নির্মাণ করে জনগণের যাতায়াতের সুগম করেছেন তিনি। ইউনিয়নের সরকারি ও এনজিও পরিচালিত নানা কর্মকাণ্ডে পৃষ্ঠপোষকতায় তার ভূমিকা অসীম। এলাকায় শিক্ষা প্রসারে নিজ জায়গায় মডেল স্কুল, হাজীপাড়ায় বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি। সমাজের এতিম ও কন্যাদ্বায়গ্রস্হ অভিভাবকে সহযোগিতা করে তিনি এলাকায় বিশেষ একটি স্হান দখল করে আছেন। মসজিদ মাদ্রাসা,কবরস্থান ও এতিমদের পুর্নবাসনে তার কৃতিত্ব সমুজ্জ্বল। এছাড়া এবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে তার দেয়া প্রতিশ্রুতিও নির্বাচনে বিশেষ আর্কষণে পরিণত।তিনি নির্বাচিত হলে ইউনিয়ন পরিষদের স্হায়ী ভবন নির্মাণ করবেন সেটিতেও গুরুত্ব দিচ্ছেন সাধারণ ভোটাররা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Share post:

Subscribe

spot_imgspot_img

Popular

More like this
Related

মাদক কারবারে পাচারকারী আটক হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে গডফাদার

মায়ানমার থেকে অবৈধভাবে প্রবেশ করা সিগারেট, স্বর্ণের বার, ইয়াবাসহ...

নরসিংদীতে বজ্রাঘাতে মা-ছেলেসহ ৪ জন নি’হ’ত

নরসিংদী প্রতিনিধি: নরসিংদীতে জমিতে ধান কাটার কাজ করার সময় বজ্রাঘাতে...

সংবাদ প্রকাশের জের:পাচার কালে জ্বালানী তেল জব্দ:টহলদলের গাড়ীতে হামলা:অধরা চোরাকারবারি

  এম.এ.রহমান সীমান্ত: গত কয়েকদিন ধরে দৈনিক গণসংযোগ পত্রিকায় ববস্তুনিষ্ঠ ও...

সিরাজগঞ্জ ২১৬ কেজি গাঁজাসহ ০২ জন মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার, কাভার্ড ভ্যান জব্দ।

  মোঃ লুৎফর রহমান লিটন সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জে র‌্যাব-১২’র অভিযানে...