ভূয়া সনদে হাশেম ভুমি অফিসে ২৫ বছর

Date:

নিজস্ব প্রতিনিধি ;;

কক্সবাজার কালেক্টরেটের অফিস সহায়কদের কয়েকজন দাপ্তরিক অনিয়ম দূর্নীতির মাধ্যমে কোটিপতি বনে গেছে।এরা সমিতির নেতা পরিচয়ে দোর্দন্ড প্রতাপে তাদের অপকাজ সমানতালে চালু রাখলেও উবর্ধতন কর্তৃপক্ষ ঠুটো জগন্নাথের ভুমিকায় রয়েছে।ভুমি অফিস কেন্দ্রীক অফিস সহায়কদের কয়েকজন এমন তালিকায় নাম উঠিয়েছে।তাদের একজন হাশেম।অফিসে অনিয়ম- দূর্নীতির কুখ্যাত পরিচয়ী এই হাশেম ভূয়া সনদপত্রে চাকরি ভাগিয়ে নেয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।এই পদে দীর্ঘ ২০ বছরের চাকরী জীবনে হাশেম এখন বিপুল অর্থ ও সম্পদের মালিক।তার এই অর্থ সম্পদ দৃশ্যমান হলেও এসব উপার্জন কোন পথে তার তদন্তও মাঝপথে থেমে গেছে। এ সু্যোগে সরকারের কাছে দেয়া সম্পদের বৃত্তান্তও তথ্য বিবরণীতে উল্লেখ না করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।তার সহকর্মীদের কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান,চাকরী জীবনের শুরু থেকেই ভুমি অফিসে কাটিয়েছে হাশেম।এই ভূমি অফিস তার জন্য মধুর হাডিঁ।গত ৭/৮ বছর পূর্বে মহেশখালীর কালামারছড়া ভূমি অফিসে থাকাকালীন তহসিলদার ও তাকে ঙ্গাতবর্হিভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদক কর্তৃক নোটিশ দেয়া হয়।পরে এ অভিযোগে সাময়িক বরখাস্তও হন।কিন্তু কিছুদিন যেতেই তদবিরের জোরে তালিকা থেকে নিজের নাম কৌশলে সরিয়ে ফেলেন তিনি।শুধু তাই নয়,আইনি সংস্থা থেকে রক্ষায় সদর ভুমি অফিসে বদলীও হয়।সেখানেও অনিয়মিত ৫/৬ মাস চাকরির পর পিএমখালী ভূমি অফিসে বদলী হন।পূর্বের কর্মস্থলের ন্যায় এখানে এসেও নিয়মিত অফিস ফাঁকি দেন এবং গর হাজির থাকেন।অফিসে অনুপস্থিত কালীন তাকে জেলা সদরে খতিয়ান বানিজ্যে এল এ শাখায় কর্মঘন্টাকালীন ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়।অনুসন্ধানে জানাগেছে আবুল হাশেম চাকরীকালীন দেয়া সনদপত্রের সাথে বাস্তবের বড়ই অমিল।তার পৈতৃক বাড়ি পার্বত্য রাঙ্গামাটি হলেও তিনি কক্সবাজার শহরের বাহারছড়ার আবদুল করিমকে পিতা দেখিয়ে ভূয়া প্রত্যায়ণপত্রে চাকরি ভাগিয়ে নেন।তার কথিত পিতা আবদুল করিম পেশায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের তৎকালীন নৈশপ্রহরী।স্হানীয় কাউন্সিলর জানান, নৈশপ্রহরীর আবদুল করিমের ৪ পুত্র।এরা হলেন, দিল মোহাম্মদ,কাছিম, নাসির উদ্দিন ও আবুল হাশেম।এর মধ্যে শেষোক্তজন মারা গেছেন অনেক দিন পূর্বে।তাদের পিতা আবদুল করিমও গত হয়েছেন বছর দূয়েক আগে।তাছাড়া হাশেম নামে তাদের এক মেয়ে জামাইও রয়েছে আমার জানামতে।ধারণা করা হচ্ছে আবদুল করিমের মৃত পুত্র আবুল হাশেম সেজে ভূয়া প্রত্যায়ণ পত্র বানিয়ে সুকৌশলে চাকরি ভাগিয়ে নিয়েছে।নতূবা আবদুল করিমের পুত্র হাশেমের যাবতীয় সনদ ও ওয়ারিশপত্র দেখিয়ে দূর্নীতিবাজ দুষ্ট চক্রের সহযোগিতায় অফিস সহায়ক পদায়ণ পেয়েছে।অনিয়মের মধ্যমনি হাশেম অফিস সহায়ক পদ ব্যবহার করেই জেলা প্রশাসনের ৫১ একরে ৬ কাটা জমিতে একতলা ভবণ বানিয়ে দখল করে রেখেছেন।সেইখানে তার বরাদ্দে ৩ কাটা থাকলেও বাকি ৩ কাটা সমিতির নেতার প্রভাব খাটিয়ে জোরপূর্বক দখলে নিয়েছেন।যা অন্যজনের জমি বলেও একাধিক সুত্রের অভিযোগ।সেই অবৈধ ভুমিতে প্লট তৈরি করে অন্যদের বিক্রয়ে হাশেম অপতৎপরতায় লিপ্ত বলেও সুত্র জানায়।এই ভবনে তার ১ম স্ত্রী অবস্থান করলেও ঝিলংজা বিজিবি ক্যাম্পের সন্নিকটের চৌধুরী পাড়ায় ২য় স্ত্রীর জন্য আরও একটি পাকা ভবন উঠাচ্ছেন হাশেম।এ জমির বর্তমান বাজার মুল্য অর্ধকোটি টাকা ছাড়াবে বলেও স্হানীয়দের অভিমত।সচেতন মহলের প্রশ্ন সামান্য এক অফিস সহায়ক কোন
পথে এত অর্থ পেল?এই হাশেম অফিসে সর্বদা অনিয়মিত।তার উবর্ধতনরা তাকে নিয়মিত অফিসে উপস্থিতির তাগাদা দিলেও উল্টো তিনি সমিতির নেতার প্রভাবে তাদের নির্দেশ অমান্য করেন বলে তার বর্তমান কর্মস্থল পিএমখালী ভূমি অফিসের তহসিলদার জানান।নিয়মিত অফিসে না গেলেও জেলা শহরে খতিয়ান বানিজ্য, অধিগ্রহণ অফিসে দালালির কাজে ব্যস্ত থাকেন ঠিকই।তার নেতৃত্বে এ কেন্দ্রীক ১০/১২ জনের সিন্ডিকেটও রয়েছে।তার বর্তমান কর্মস্থল পিএমখালী ভূমি অফিসের সেবাপ্রার্থীদের অভিযোগ অফিস সহায়ক হাশেমকে কালে ভদ্রে দেখা যায়।তাও ক্ষনিকের জন্য।টু পাইস কামাই হলেই হঠাৎ নিরুদ্দেশ।এতে গরীব সাধারণ মানুষ ভোগান্তি পোহান। সপ্তাহে একবার অফিসে গিয়ে অনুপস্থিত দিন গুলোর উপস্থিত স্বাক্ষর দেন।খোদ তহসিলদার তার এমন গহিত কান্ডের প্রতিবাদ করায় তার উপরও বিরাগভাজন হন হাশেম।এ কারণে সাপে -নেউলে সম্পর্ক তাদের।স্হানীয় সেবাপ্রর্থীরা তার দেখা না পেয়ে ভূমি সেবার ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন।সুত্র আরও জানায় মহেশখালী ও কক্সবাজার সদরের বিভিন্ন স্হানে অবৈধ পথে উপার্জিত অর্থ দিয়ে ভিটি জমি,কৃষি জমি ও নাল জমি ক্রয় করেছেন অফিস সহায়ক হাশেম।আরও কয়েকটি প্লট মোটা অংকে বিক্রি করে দিয়েছেন সিন্ডিকেট নেতা নামধারী এই ভূমি কর্মচারী।
,তার সব অর্থ সম্পদে নিজের নামকে আড়ালে রেখেছেন সুচতুর হাশেম।তার এক ভাই ও দুই স্ত্রীর নামে একাধিক ব্যাংক একাউন্ট থাকলেও নিজের নামে কোন টাকাকড়ি গচ্ছিত রাখেনি তিনি।একইভাবে ভূমি দখল ও ক্রয়েও তাদের নাম বিকিয়েছেন। উদ্দেশ্য একটাই আইনি ঝামেলা ও জবাবদিহিতাকে ফাঁকি।সচেতন মহলের জিজ্ঞাসা ভূয়া সনদে চাকরি নেয়া হাশেমের প্রভাব প্রতিপত্তি থাকবে আর কতকাল।চাকরীতে গরহাজির থেকে অনিয়ম দূর্নীতির মাধ্যমে টাকার কুমিরে রূপ নেয়া হাশেমের বিরুদ্ধে কি আইনি ব্যবস্হা সচল হবে না?তাছাড়া প্রকৃত পিতা মাতার ওয়ারিশ সনদ ছাড়া এই হাশেম সরকারি চাকরী পেল কেমনে তাও তদন্ত দরকার।শুধু তাই নয়, ভূয়া পরিচয়ে সরকারি চাকরী ভাগিয়ে নেয়ার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্হা দ্রুত নেয়া হবে কি না তা নিয়েও সন্দিহান।কেন না জনমনে এই হাশেমের হাত অনেক লম্বা বলেও সুখ্যাতি রয়েছে।তারা অবিলম্বে অনিয়ম দূর্নীতির নাটেরগুরু হাশেমের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্হা গ্রহন সহ উত্থাপিত অভিযোগ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশন সহ উবর্ধতন কর্তৃপক্ষে।
অফিস সহায়ক হাশেম বিরুদ্ধে উত্তাপিত অভিযোগ সম্পর্কে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) আমিন আল পারভেজ বলেন,অফিসে অনুপস্থিতির বিষয়টি আমি জানি।ভূয়া সনদের ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্হা নেব আমরা।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত অফিস সহায়ক হাশেম বলেন,আমার বিরুদ্ধে লিখে লাভ কি?অন্য যারা এমন কাজে লিপ্ত উল্টোতাদের বিরুদ্ধে লিখার পরামর্শ দেন তিনি।

সুত্র; দৈনিক ৭১

সীমান্তবাংলা / ২৯ আগষ্ট ২০২১

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Share post:

Subscribe

spot_imgspot_img

Popular

More like this
Related

দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের স্টাফ রিপোর্টার হলেন এম. দলিলুর রহমান

  (বিশেষ প্রতিনিধি) বহুল প্রচারিত দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের লোহাগাড়া উপজেলা প্রতিনিধি...

মাদক কারবারে পাচারকারী আটক হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে গডফাদার

মায়ানমার থেকে অবৈধভাবে প্রবেশ করা সিগারেট, স্বর্ণের বার, ইয়াবাসহ...

নরসিংদীতে বজ্রাঘাতে মা-ছেলেসহ ৪ জন নি’হ’ত

নরসিংদী প্রতিনিধি: নরসিংদীতে জমিতে ধান কাটার কাজ করার সময় বজ্রাঘাতে...

সংবাদ প্রকাশের জের:পাচার কালে জ্বালানী তেল জব্দ:টহলদলের গাড়ীতে হামলা:অধরা চোরাকারবারি

  এম.এ.রহমান সীমান্ত: গত কয়েকদিন ধরে দৈনিক গণসংযোগ পত্রিকায় ববস্তুনিষ্ঠ ও...