ভুঁইফোঁড় সংগঠনে নেতা-মন্ত্রীদের উপস্থিতি বন্ধে ঐকমত্য আ.লীগে 

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২১

সীমান্তবাংলা ডেস্ক: ঢাকা: ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সম্প্রতি ‘লীগ’ নাম ব্যবহার করে তথাকথিত ভুঁইফোঁড় সংগঠনের কর্মকাণ্ড নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ দলের ভেতরে-বাইরে সমালোচনার মুখে এসব ভুঁইফোঁড় সংগঠনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণসহ কঠোর অবস্থানে যায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এরই ধারাবাহিকতায় এবার ‘লীগ’ নামসর্বস্ব এসব ভুঁইফোঁড় সংগঠনে দলের কেন্দ্রীয় নেতা ও মন্ত্রীদের উপস্থিতি বন্ধ করার ঐকমত্যে পৌঁছেছে ক্ষমতাসীন দলটি। দলের সম্পাদকমণ্ডলীর এই নীতিগত সিদ্ধান্ত সরকারের মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের অবহিত করে এসব ভুঁইফোঁড় সংগঠনে অতিথি হিসেবে না যাওয়ার নির্দেশনা জানিয়ে দেবেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় এ ধরনের সিদ্ধান্তে উপনীত হয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

বৈঠকে ওবায়দুল কাদের দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনারা কেউ লীগ নামসর্বস্ব ভুঁইফোঁড় সংগঠনে অতিথি হয়ে যাবেন না। কেউ এসব সংগঠনকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেবেন না। এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান কঠোর। সামনে আরও কঠোর অবস্থান নিতে হবে।’

দলের কয়েকজন নেতা ও মন্ত্রিসভার কিছু সদস্য এসব সংগঠনের অতিথি হয়ে যান এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করেন বলে অভিযোগ তোলা হয় এ সময়। এ বিষয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আজকের সভার সিদ্ধান্তের আলোকে এ বিষয়টি আমি মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের জানিয়ে দেব। তাদের অবহিত করা হবে এসব সংগঠনের কর্মসূচি বা অনুষ্ঠানে অংশ না নিতে।’

বৈঠক শুরুর আগে, সকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মলীগ নামের একটি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি বন্ধের নির্দেশ দেন ওবায়দুল কাদের। এ বিষয়ে বৈঠক শুরুর আগে সাংবাদিকদের সামনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে খবর পেলাম, আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে এক ভুঁইফোঁড় দোকান প্রতিষ্ঠালগ্নের কী আয়োজন করেছে। তাদের নাম নাকি আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগ। মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মের ব্যপারে আমাদের কোনো দ্বি-মত নেই। কিন্তু লীগ আর আওয়ামী যখন যুক্ত হয় তখন এখানে আমাদের সংশ্লিষ্টতা এসে যায়। এখানে আমাদের ভাবমূর্তির বিষয়টা এসে যায়। কারণ এসব দোকান অনেকে খুলে থাকে চাঁদাবাজির জন্য, এগুলো আসলে চাঁদাবাজির প্রতিষ্ঠান।’

তিনি বলেন, ‘সবাই করে তা নয়। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান আছে, এরা চাঁদাবাজি নির্ভর। এরা দলের নাম ভাঙায়। আমি আহ্বান জানাব, এসব সংগঠনের কোনো প্রকার আয়োজনে বা বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতারা কোনো অবস্থাতেই উপস্থিত থাকবেন না।’

ওবায়দুল কাদের সভার শুরুতে ব্রিফিং করেন। এরপর বৈঠকে বসেন আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যরা। সভায় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যদের মধ্যে দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ ডা. দীপু মনি, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, শফিউল ইসলাম চৌধুরী নাদেল, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, অর্থ সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল মোস্তফা, বন ও পরিবেশবিষয়ক দেলোয়ার হোসেন, উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খানসহ অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সুত্র সারাবাংলা/১৮সেপ্ট২১/মউ