সেন্টমার্টিন ভ্রমনে সরকারের নতুন করে বিধি নিষেধ আরোপ

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩, ২০২১

বাংলাদেশের দক্ষিণে টেকনাফ উপজেলায় অবস্থিত একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্ট মার্টিন । মাত্র সাড়ে আট বর্গকিলোমিটার আয়তনের দ্বীপটি জোয়ারের সময় আয়তন হ্রাস পেয়ে পাঁচ বর্গকিলোমিটারে দাঁড়ায়। স্বল্প আয়তনের আর কোনো স্থানে এমন নৈসর্গিক দৃশ্য ও বহুল প্রজাতির উদ্ভিদ বা জীব-প্রজাতির সন্ধান পাওয়া যায় না। সংগত কারণে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ইদানীং দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে বেশ আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। কিন্তু পর্যটকদের নানা ধরনের বেপরোয়া কর্মকাণ্ডের ফলে দ্বীপটি এখন পরিবেশগত সংকটে।

তাই দ্বীপটিকে রক্ষায় সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে নতুন করে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। ‘প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন’ এলাকা ঘোষণা করে এক গণবিজ্ঞপ্তিতে পরিবেশ অধিদফতর বলেছে, অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন এবং পর্যটকদের অসচেতনতা, দায়িত্বজ্ঞানহীনতা, পরিবেশ বিরোধী আচরণের কারণে সেন্ট মার্টিনের বিরল প্রতিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত।
পরিবেশ ও বিরল জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধারসহ দ্বীপটিকে টিকিয়ে রাখার লক্ষ্যে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) এর ০৪ ধারার ক্ষমতাবলে সেন্ট মার্টিনে ভ্রমণের ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে অধিদফতর।

সেগুলো হলো:
– দ্বীপের সৈকতে সাইকেল, মোটরসাইকেল, রিকশা, ভ্যানসহ কোনো ধরনের যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক বাহন চালানো যাবে না
– দ্বীপের সৈকত, সমুদ্র এবং নাফ নদীতে প্লাস্টিক বা কোনো ধরনের বর্জ্য ফেলা যাবে না
– পশ্চিম দিকের সৈকতে কোনাপাড়ার পর দক্ষিণ দিকে এবং পূর্ব দিকের সৈকতে গলাচিপার পর দক্ষিণ দিকে যাওয়া যাবে না
– দ্বীপের চারপাশে নৌ-ভ্রমণ করা যাবে না
– জোয়ার-ভাটা এলাকায় পাথরের ওপর দিয়ে হাঁটা যাবে না
– সামুদ্রিক কাছিমের ডিম পাড়ার স্থানে চলাফেরা, রাতে আলো জ্বালানো এবং ফ্ল্যাশলাইট ব্যবহার করে ছবি তোলা যাবে না
– সৈকতে রাতের বেলা কোনো ধরনের আলো বা আগুন জ্বালানো, আতশবাজি ও ফানুস ওড়ানো যাবে না
– সৈকতে মাইক বাজানো, হইচই এবং উচ্চস্বরে গান-বাজনা করা কিংবা বারবিকিউ পার্টি করা যাবে না
– ছেঁড়াদিয়া দ্বীপে স্পিডবোট, কান্ট্রি বোট, ট্রলার কিংবা অন্যান্য জলযানে যাতায়াত কিংবা নোঙর করা যাবে না
– সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে সরকারের অধিগ্রহণ করা ছেঁড়াদিয়া দ্বীপ ভ্রমণ করা যাবে না
– প্রবাল, শামুক, ঝিনুক, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, তারা মাছ, রাজকাঁকড়া, সামুদ্রিক ঘাস, সামুদ্রিক শৈবাল এবং কেয়া ফল সংগ্রহ ও ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে না
– জাহাজ থেকে পাখিকে চিপস বা অন্য কোনো খাবার খাওয়ানো যাবে না
– দ্বীপে সুপেয় পানির পরিমাণ সীমিত হওয়ায় পানির অপচয় রোধ করতে হবে
সর্বোপরি সেন্ট মার্টিন দ্বীপের প্রতিবেশের জন্য ক্ষতিকর এমন কোনো কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে ভ্রমণকারীসহ সবাইকে। উল্লিখিত এসব বিধিনিষেধের লঙ্ঘন আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ বলে ওই গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

( সীমান্তবাংলা/ শা ম/ ৩ জানুয়ারী ২০২১)