সংসদ সদস্য জাফর আলম কর্তৃক সাংবাদিকদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিবাদে সভা, বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২২

 

প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ
পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে চকরিয়া-পেকুয়ার সাংসদ জাফর আলম কর্তৃক পেকুয়ার সাংবাদিকদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন কর্মরত সাংবাদিকেরা। একই সঙ্গে এই বক্তব্য প্রত্যাহারেরও দাবি জানান তাঁরা।

২৬ জুলাই পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সাংসদ জাফর আলম। তাঁর বক্তব্যের একপর্যায়ে জাফর আলম বলেন, পেকুয়ায় তিনটি ঐতিহ্যবাহী পরিবার রয়েছে। এরমধ্যে শিলখালীর আসাদুজ্জামান চৌধুরীর পরিবার একটি। আমি আওয়ামী লীগ বাড়ানোর জন্য বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামানকে আওয়ামী লীগে নিয়েছি। সেখানে কাজিউল ইনসান ভোট করলে ভোট পায় না। এই অভিশাপ থেকে মুক্তিপেতে আমি আসাদুজ্জামানকে সৃষ্টি করেছি। মগনামায় কোনো আওয়ামী লীগ নেই। সেখানে ডাকাত ইউনুছের পক্ষ নিয়ে কিছু সাংবাদিক শরাফত উল্লাহ ওয়াসিমের বিপক্ষে লেখালেখি করে। আমি যাকে সৃষ্টি করি তাঁর বিপক্ষেই সাংবাদিকেরা বিদ্রোহ করে। এরা সাংবাদিক নয়, ফেসবুক সাংঘাতিক। এখন কথা হচ্ছে দল আমরা চালাবো নাকি সাংঘাতিকেরা চালাবে?

জাফর আলমের এই ব্যক্তব্যের পর সাংবাদিকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেয়। এর প্রতিবাদে বুধবার বিকেল চারটায় পেকুয়া উপজেলা অনলাইন প্রেস ক্লাবে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবাদ সভায় সাংবাদিকেরা বলেন, সাংসদ জাফর আলম পেকুয়ার এক মাত্র স্টেডিয়াম দখল করে নির্মাণ সামগ্রী রেখেছেন। স্টেডিয়ামের অবকাটামো ধ্বংস করেছেন। সেটা নিয়ে রিপোর্ট করলে সাংবাদিকেরা তাঁর কাছে সাংঘাতিক হয়ে যায়। পেকুয়া বাজারে অসহায় মানুষের জমি দখল করে সুরম্য মার্কেট নির্মাণ করছেন এমপি জাফর। সেটা নিয়ে রিপোর্ট করলে সাংবাদিকেরা সাংঘাতিক হয়ে যান। বানৌজা শেখ হাসিনা সড়ক নিয়ে কোটি কোটি টাকা বাণ্যিজ্য করেছেন সাংসদ জাফর। সেসব নিয়ে রিপোর্ট করলে সাংবাদিকেরা তাঁর কাছে সাংঘাতিক। পেকুয়ায় বিএনপি জামাত থেকে অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে টাকার বিনিময়ে তাঁদের আওয়ামী লীগের পদ পদবী দিচ্ছেন। সেসব নিয়ে রিপোর্ট করলে সাংসদ মেজাজ হারিয়ে ফেলেন, কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেন।

প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন, সাংসদ জাফর শুধু আওয়ামী লীগের সম্মেলন নয়, এর আগে দলীয় বিভিন্ন মিটিংয়ে ও উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বিভিন্ন সভাতেও সাংবাদিকদের নিয়ে কটুক্তি করেছেন। মূলত পেকুয়ার সাংবাদিকদের লেখনির কারণে বিভিন্ন অনিয়ম দূর্নীতি প্রকাশ পাওয়ায় সাংসদ দিন দিন বেসামাল হয়ে যাচ্ছেন। একারণে তিনি সাংবাদিকদের নিয়ে একের পর এক অশালীন, কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে যাচ্ছেন। আমরা সাংসদের এরকম অসংলগ্ন মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

বক্তারা বলেন, মাননীয় সাংসদ আপনার অতীত ইতিহাস আমাদের জানা আছে। অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি কোনো সময়েই ভালো ফল বয়ে আনে না। আমাদের আশা থাকবে, আপনি আপনার কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিবেন।

প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন সাংবাদিক এস এম হানিফ (প্রথম আলো), নাজিম উদ্দিন (দৈনিক আমার সংবাদ, সকালের কক্সবাজার, অবজারভার), মুহাম্মদ হাশেম (দৈনিক কক্সবাজার, দৈনিক সাঙ্গু), এম দিদারুল করিম (বিজয় টিভি, পূর্বদেশ), জালাল উদ্দিন (দৈনিক রূপসী গ্রাম), রিয়াজ উদ্দিন (দৈনক ইনানী), সাইফুল ইসলাম বাবুল (হিমছড়ি), মো. জুবাইদ (দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশ, আজকের দেশ বিদেশ), এফ এম সুমন (সিপ্লাস টিভি), বেলাল উদ্দিন (সমকাল, দৈনিক কক্সবাজার), রেজাঊল করিম রেজা (খোলা কাগজ), রেজাউল করিম রাজু (আপন কণ্ঠ), জয়নাল আবেদীন (মানবজমিন), আমিনুল ইসলাম বাহার (দৈনিক চকোরী, সিবিএন), আজিজুল হক (দৈনিক গণসংযোগ), শাহাদাত হোসেন (দৈনিক নাগরিক ভাবনা), দেলোয়ার হোসেন (চ্যানেল এসটিভি), আমিরুল ইসলাম রাশেদ (আনন্দ টিভি), মফিজ সিকদার (আমাদের কক্সবাজার), আসাদুজ্জামান অপু (দৈনিক আজকের বসুন্ধরা), রেজাউল করিম (সাপ্তাহিক সময়ের নিউজ, এসএনটিভি), মো. আরমান (দৈনিক মেহেদী), মোহাম্মদ ইউনুছ (কক্সবাজার বার্তা), ফারুকী (দৈনিক স্বাধীন সংবাদ), মিজানুর রহমান (দৈনিক রূপালী সৈকত), মো. ছাদেক (দৈনিক কক্সবাজার ৭১), তৌহিদুল ইসলাম (পলাশী বাংলা টিভি) প্রমুখ।