শেরপুরে অতিথি পাখির অভয়ারণ্য !!

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১, ২০২১

 

হিমন সরকার,
বগুড়া(শেরপুর)প্রতিনিধি:

প্রাকৃতিক বৈরী প্রভাবে পৃথিবী থেকে অনেক কিছুই বিলীন হতে বসেছে। হারিয়ে গেছে চেনাজানা অনেক প্রাণীও। প্রাকৃতিক বৈরী প্রভাবে মানুষ হাতড়িয়ে বেড়াচ্ছেন নিরাপদ আশ্রয়, তেমনি পশু-পাখিও তাদের নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে থাকে পৃথিবীর এ প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তরে।

তেমনই পাখির এক অভয়ারণ্যের দেখা মেলে বগুড়া শেরপুরের গাড়ীদহ ইউনিয়নের রামনগর গ্রামে।বিরল প্রজাতির শামুক খোল পাখি। গ্রামবাসীও অতি যত্ন দিয়ে আগলে রেখেছে পাখিদের।

নিরাপদ আশ্রয়, আর মানুষের ভালবাসায় গ্রামে পাখির সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ৫ বছর ধরে চলছে পাখি ও মানুষের এই মিতালি। ঘন বাঁশঝাড়, আমগাছ, শিমুলগাছসহ অর্ধমাইল জঙ্গলে শামুখ খোল পাখির নিরাপদ আশ্রয়। শীতের মৌসুমে এই শামুখ খোল পাখি চলে যায়। দেখা মিলেনা ৩ থেকে ৪ মাস। বর্তমানে নিরাপদ আশ্রয়ে প্রজননও করছে পাখিগুলো। ফলে, দিন দিন বাড়ছে পাখির সংখ্যা। গোটা গ্রামের মানুষ নিরাপত্তা দিয়ে আগলে রেখেছে পাখিদের। এই পাখির রাজ্যে সবাইকে স্বাগত। তবে কোনোভাবেই পাখিকে উপদ্রব করা চলবে না। শিকার নিষিদ্ধ। চলবে না বন্দুক, ইয়ারগান ও ফাঁদ বহন করা। পাখিশিকারিদের ঠেকাতে এখানে গ্রামবাসী অত্যান্ত সতেচন। শামুক খোল পাখি এলাকার মানুষের কাছে শামুক ভাঙ্গা, হাইতোলা মুখ- এসব নামেও পরিচিত। খাল-বিলের ছোট ছোট শামুক-ঝিনুক, ছোট মাছ, আর ফসলের মাঠের পোকা-মাকড় খেয়ে জীবন বাঁচায় শামুক খোল পাখি।

সরেজমিনে গিয়ে গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে রেজওয়ান জানান, খুব ভোরে পাখিরা জেগে ওঠে। কিচিরমিচির করে। সকাল-বিকাল এক সুন্দর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। পাখিগুলো ডানা মেলে ওড়ে। পোকামাকড়সহ খাদ্যের খোঁজে মাটিতে নামে। উড়ে যায় বিলে। সন্ধ্যার আগে আগে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি ফিরে আসে নীড়ে। ৫ বছর ধরে তাঁরা পরম মমতায় পাখির দেখভাল করে আসছেন।

কামরুল, জহুরুল বলেন, গ্রামের মধ্যেদিয়ে বয়ে যাওয়া রাস্তার দুই ঘেঁষে জলপাইগাছ, আকাশমনিগাছ, বাঁশঝাড়, শিমুলগাছ, আমগাছ, ও জঙ্গলে পাখি বাসা তৈরি করে। ৫ বছর ধরে এখানে পাখি বসবাস করছে। একসময় অনেক প্রজাতির পাখি ছিল। এখানে শীতকালীন সময়ে অনেক প্রজাতির পাখির দেখা মেলে এখানে।

হেলাল বলেন, শিতকালীন সময়ে বিভিন্ন প্রজাতীর পাখি থাকে এখানে। আর এই গরম সময়ে শামুখ খোল পাখি প্রজনন দেওয়ার জন্য বাসা বাধে। এই পাখি ছাড়া অন্য পাখি তেমন চোখে পড়ে না। শামুখখোল পাখির বিষ্ঠা ছড়ায় লোকালয়ে। গাছের পাতা নষ্ট হয়ে যায়। ঘরের টিন নষ্ট হয়। গাছের ফল আম, জলপাই, আমড়া এগুলো আমরা খেতে পারিনা এই পাখির জন্য তারা খেয়ে ফেলে। তবে কেউ তাতে বিরক্ত হয় না। পাখির দেখভাল করে। নিজেরা কেউ পাখিকে বিরক্ত করে না। গৃহবধূ মোমেনা বেগম বলেন, বাড়ির পাশে বাঁশঝাড়ে শামুখ খোল পাখির বাস করে। ক্ষুধা পেলে অনেক পাখি উঠানে আসছে। চাল, খুদ, ভাত খায়। অন্য রকম এক মায়া পড়েছে পাখির ওপর।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ময়নুল ইসলাম তিনি বলেন, গ্রামবাসীর পাশাপাশি রামনগর গ্রামে পাখির অভয়ারণ্য গড়তে আন্তরিকতার কোন কমতি থাকবে না। প্রশাসনের দিক থেকে যত সহযোগিতা তা করবেন। নিরাপত্তা ও পাখির দেখভালের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

সীমান্তবাংলা / ১ সেপ্টেম্বর ২০২১