শাজাহানপুরে স্বামীর সর্বস্ব নিয়ে স্ত্রীর তালাক , প্রতারণার মামলায় কারাগারে স্ত্রী !!

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: মে ২৭, ২০২৩

 

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলায় প্রবাসী স্বামীর পাঠানো টাকায় কেনা জমি ও বানানো বাড়ি নিজের নামে লিখে নিয়ে তালাক দেওয়ার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় ওই নারীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন বিচারক।

দেশে ফিরে কিছু না পাওয়ার হতাশায় সেই প্রবাসী তাঁর স্ত্রী এবং শাজাহানপুর উপজেলা বিএনপি এর সাবেক আহ্বায়ক আবুল বাশার সহ আটজনের নামে মামলা করেছেন।

২০২২সালের ৫ এপ্রিল বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও শাজাহানপুর আমলি আদালতে প্রতারণা এবং দেড় কোটি টাকার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলাটি করেন মালয়েশিয়া ফেরত উপজেলার শৈলধুকড়ী গ্রামের মৃত হবিবর রহমান এর ছেলে মাহফুজার রহমান। বাদী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এ্যাড উৎপল কুমার বাগচী।

সে বছরের ১৮ মে এর
মধ্যে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দীর্ঘ তদন্ত শেষে
চলতি বছরের ১৪জানুয়ারি আদালতে ৮আসামি এর মধ্যে আবুল বাশারকে বাদ দিয়ে মোট ৭ জনের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)৷

এ মামলায় আসামিরা হলেন—মাহফুজার রহমানের সাবেক স্ত্রী রজনী খাতুন (৩৩), তাঁর বর্তমান স্বামী মো. রেজাউল করিম (৩২) এবং তাঁর বাবা আব্দুল খালেক (৫৫)। এ ছাড়া আব্দুর রাজ্জাক (৩৮), মোছা চাঁন মুনী (৪৫), বিউটি বেগম (৩৮) এবং মোছা. শান্তি বেগম (৩৫) নামে চারজনকে আসামি করা হয়েছে।

সেই মামলায় বৃহস্পতিবার (২৫মে) আদালতে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত তা না মঞ্জুর করে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ওই নারীকে জেল হাজতে প্রেরণ করেছেন ম্যাজিস্ট্রেট সুমাইয়া সিদ্দিকা।

এই ঘটনা এলাকায় আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়।

মামলা সূত্রে এবং সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাহফুজার রহমান চার বছর প্রেম করে বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করেন রজনী খাতুনকে। চার বছর সংসার করার পর ২০০৮ সালের আগস্টে মালয়েশিয়া যান মাহফুজার। এর ছয় মাস পর রজনী খাতুন গ্রামে স্বামীর বাড়ি থেকে উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের জামালপুর এলাকায় বড় ভাইয়ের বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। পর রহিমাবাদ সি-ব্লক এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন।

স্বামী মাহফুজারের পাঠানো টাকায় রজনী নিজের নামে জমি কিনতে থাকেন। জামালপুর এলাকায় নিজ নামে জমি কিনে ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে ছয়তলা বাড়ির ভিত দেন। একতলা বাড়ির কাজ সম্পন্ন করেন।

বাড়ি নির্মাণে আরও টাকা দরকার জানিয়ে পৈতৃক সূত্রে পাওয়া মাহফুজারের সাত বিঘা জমি প্রায় ৭ লাখ টাকায় ইজারা দেন। এভাবে সাড়ে ১৩ বছরের প্রবাস জীবনে রজনীকে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ প্রায় দেড় কোটি টাকা দেন মাহফুজার। এর মধ্যে উপজেলা বিএনপির নেতা আবুল বাশারের (৪৫) সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে যান রজনী।

গত বছরে দেশে ফিরে নিজের টাকায় নির্মিত বাড়িতে উঠতে গিয়ে জানতে পারেন স্ত্রী রজনী তাঁকে তালাক দিয়েছেন। এই বাড়িতে থাকার কোনো অধিকার তাঁর নেই। গত ২৫ মার্চ রজনী মামাতো ভাই রেজাউল করিমকে বিয়ে করে সেই বাড়িতে বসবাস করছেন।

মাহফুজার রহমান বলেন, ‘সাড়ে ১৩ বছর মালয়েশিয়া থাকা অবস্থায় কোনো টাকাই নিজের জন্য রাখি নাই। নিজের শরীরের ওপর সর্বোচ্চ কষ্ট দিয়ে যা ইনকাম করেছি তার সবই স্ত্রী রজনীর হাতে পাঠিয়েছি। এখন আমার আর কিছুই নাই। লজ্জায় রাস্তায় চলতে পারি না। এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার।’

জানতে চাইলে এ্যাড উৎপল কুমার বাগচী জানান, ২৫মে আদালতে প্রথম হাজিরা তারিখ ছিল। রজনী সহ মোট ৩নারী আসামি জামিনের প্রার্থনা করেন। ২নারীর জামিন মঞ্জুর হয়েছে আর রজনীকে জেল হাজতে প্ররণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।