শাজাহানপুরে অসহায় পিতা একমাত্র সন্তানকে জমি লিখে দিয়ে রাস্তায় নামতে বসেছেন !!

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: জুলাই ৩০, ২০২১

 

বগুড়া প্রতিনিধি ;

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের বামুনিয়া খিয়ার পাড়া গ্রামে বাবার একমাত্র প্রিয় সন্তান সোহান বাবু(১৭)’কে বসত বাড়ি সহ আবাদি জমি লিখে দিয়ে রাস্তায় নামতে বসেছেন অসহায় পিতা মোঃজহুরুল ইসলাম(৩৯)।

স্থানীয় প্রতিবেশিরা জানান, সোহান বখে গেছে। সন্মানের ভয়ে তাকে কেউ কিছু বলেনা। মাদক এবং অসৎ সঙ্গ থেকে এই অবস্থার সৃস্টি হয়েছে ৷

সোহানের পিতা জহুরুল ইসলাম জানান,জীবন জীবিকার প্রয়োজনে স্ত্রী এবং সন্তান রেখে ২০০৭সালে দেশের বাহিরে (ম্যালয়েশিয়া)যান। এরমধ্যে তার স্ত্রী’র মৃত্যু হয়।বাবা এবং ছেলে মিলে সংসারে তখন মানুষ মাত্র ২জন ৷২০২০সালের শেষের দিকে তিনি দেশে ফিরে আসেন। একমাত্র সন্তান সোহানকে বাড়ির জায়গা সহ আবাদি মোট ৪৪শতক জমি লিখে দেন। দলিলে শর্ত দেন তার মৃত্যুর পর এই দলিল কার্যকর হবে এবং তার ভরন পোষনের দায়িত্ব ছেলে নিবে।জমি লিখে দেয়ার পর পাল্টে যায় তার একমাত্র প্রিয় ছেলে। এলাকার কূচক্রী মহলের দৃষ্টি পড়েছে জমির উপরে। ছেলের কাছে থেকে জমি লিখে নিতে বাবা এবং ছেলের মধ্যে ভাঙন ধরিয়ে দেয়। ছেলে জমি বিক্রি করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। টাকার জন্য তার গায়ে হাত তুলতে শুরু করে।
সংসারের প্রয়োজনে তিনি ২য় বিয়ে করেন । জমি বিক্রি করে টাকা না দেয়ায় গত ২জুলাই বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তার একমাত্র ছেলে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে এসে তাকে মারপিট করে। এসময় তার ২য় স্ত্রী বাধা দিতে আসলে তাকেও মারপিট করে আহত করে। সেই ঘটনায় তিনি ছেলে এবং তার সহযোগী সহ ৭জনকে আসামী করে শাজাহানপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।

জহুরুল আক্ষেপ করে বলেন,যে সন্তানকে মানুষ করার জন্য জীবনে এত কষ্ট করলেন সেই সন্তান পড়া লেখা বাদ দিয়ে এখন ট্রাকের হেলপারি করে।
পরিবার-পরিজন সব কিছু ছেড়ে দীর্ঘ বছর প্রবাসে কষ্ট করে দেশে ফিরে তিনি একটি বাড়ি নির্মান শুরু করেছেন। ছেলে তাকে বের করে দিলে তার দাঁড়ানোর জায়গা থাকবে না । সব লিখে দেয়ার পরে তার নতুন করে জীবন শুরু করার শেষ সম্বলও নাই।স্থানীয়
গয়েন্দার এবং বহিরাগতদের নিয়ে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিতে আসে বলে আক্ষেপ করেন।

সোহান মোবাইল ফোনে জানায়, তার বাবা তাকে জমি লিখে দিয়েছে। ১৮বছর হলেই সে জমি বিক্রি করতে পারবে। দলিলে ওসব শর্ত দেয়াই থাকে। জমি বিক্রি করে টাকা না দিলে সে কিছু করতে পারছেনা। বাড়ির ভেতরে সে একটি থাকার ঘর চেয়েছে। তার বাবা সেটাও দিচ্ছে না।

সীমান্তবাংলা / ৩০ জুলাই ২০২১