বিশেষ প্রতিনিধি
হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নং ওয়ার্ডের মেম্বার হোছন আহম্মদের সন্ত্রাসী হামলায় হ্নীলার আল্লামা সদর সাহেব হুজুরের জামাতা মৌলানা আবদুল গফুর গুরুতর আহত।
রবিবার (০২ মে) বিকাল ৩ ঘটিকার সময় হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সে হ্নীলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে এই হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন মৌলানা আবদুল গফুরের পরিবারের সূত্র। হামলায় তাহার ডান হাতের স্কন্ধের গিড়া মচকে যায়।
হ্নীলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বিচারের কথা বলে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে নিয়ে যায় মৌলানা আবদুল গফুরকে। বাংলাদেশের সর্বনিন্ম আদালত ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম্য আদালতে কি করে একজন মেম্বার বিচার প্রার্থীর উপর হামলা করতে পারে? আদালতে যদি সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা না থাকে, তাহলে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়?
মৌলানা আবদুল গফুরের পিতা আজম উল্লাহর ক্রয় সূত্রে পাওয়া জায়গা (হ্নীলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে) যার বিএস ৭২ নং খতিয়ান। এই খতিয়ানে মৌলানা আবদুল গফুরের পিতা আজম উল্লাহর ক্রয় করা জায়গা থেকে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর কিছু জায়গা অধিগ্রহণ করেন। অধিগ্রহণের জায়গা বাদ দিয়ে আজম উল্লাহ ফকির পিতা ছমি উদ্দিনের নামে ৩০ শতক জমি প্রচার আছে। আজম উল্লাহ ফকিরের মৃত্যুর পর আজম উল্লাহ ফকিরের স্ত্রী, এক ছেলে এক কন্যা ওয়ারিশ হিসাবে রেখে যান। সেই তিন জন ওয়ারিশানের নামে বর্তমানে ডি.আর.আর. ৪৫৮ নং খতিয়ানে অংশ উল্লেখ করে ২৮ শতক জমি প্রচারিত রয়েছে এবং দীর্ঘ ৬০/৭০ বছর ধরে ভোগ দখলে আছেন।
এই বিষয়ে হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, “ঘটনার সময় আমি পরিষদের নিচে একটি এনজিও সংস্থার প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলছিলাম। ঘটনার স্বর চিৎকার শুনে আমি উপরে উঠে দেখি মৌলানা আবদুল গফুরের হাতের স্কন্ধের গিরা মচকে গেছে। আমি মৌলানা আবদুল গফুরকে হাসপাতালে নিতে বলি। ঘটনা সম্পর্কে আমি আমার সচিব এবং উপস্থিত বিভিন্ন জনের কাছ থেকে জেনেছি, মৌঃ আবদুল গফুরের ছেলেকে হোসন মেম্বারের ছেলে মেরেছে। সেই সূত্র ধরে হোছন মেম্বারকে তার ছেলে পরিষদে ডেকে নিয়ে আসে” এমনটাই শুনেছেন বলে তিনি জানিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, মৌলানা আবদুল গফুরের ছেলে হোছন মেম্বারকে মোবাইল ছুড়ে মেরেছে বলেও শুনেছেন।
এই ঘটনার বিষয়ে হোছন মেম্বারের কাছে তার মুঠোফোনের মাধ্যমে জানতে চাইলে হোছন মেম্বার আমাদের প্রতিনিধিকে জানান, গতকাল হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদে এরকম কোন ঘটনা ঘটেনি বলে দাবী করেছেন। চেয়ারম্যান বলেছেন ঘটনা ঘটেছে আর আপনি বলছেন ঘটনা ঘটেনি এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি একই উত্তর প্রদান করেন গতকাল হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদে তার সাথে কারো ঝগড়া হয়নি বা ঝগড়ার মতো ঘটনা ঘটেনি।
হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ঘটনার বিস্তারিত জানতে পরিষদ সচিব শেখ ফরিদের মুঠোফোন নাম্বার প্রদান করেন। আমাদের প্রতিনিধি একাধিক বার সচিবের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে রিসিভ না হওয়ায় সচিবের সাথে কথা বলা যায়নি।
এদিকে হোছন মেম্বার বর্তমান সরকার দলীয় নেতা হিসাবে নিজেকে জাহির করে এমন কোন আকাম কুকাম নেই তিনি করেন না। বার্মাইয়াদের ভোটার করা, মরন নেশা ইয়াবা কারবারে জড়িত থাকা, আওয়ামিলীগের নেতা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সাধারণ মানুষের দলিলি জায়গা জবর দখল করার নানা অভিযোগ রয়েছে।
এই ভূমিদস্যু অপরাধ রাজ্যের সম্রাট হোছন মেম্বারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সংবাদপত্রে সংবাদ প্রকাশ করার কারণে যাদের জমি জবর দখল করেছে হোছন মেম্বার উল্টো তাদেরকে সংবাদ প্রকাশ করার জের ধরে জমির প্রকৃত মালিকদের বাড়ি ঘরে করে ভাংচুর করে এবং ভবিষ্যতে হোছন মেম্বারের বিরুদ্ধে কোন প্রকার সংবাদ প্রকাশ করা হলে তাদের হত্যা করা হবে বলে হুমকি প্রদান করেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
এদিকে মৌলানা আবদুল গফুরকে হেফাজতের ভাংচুর মামলার আসামী করার এবং মৌলানা আবদুল গফুরের ছেলেদের বিরুদ্ধে ভূমিদস্যু হোছন মেম্বার বিভিন্ন মিথ্যা মামলা করে জেলের ভাত খাওয়াবার হুমকি প্রদান করেছে বলে জানিয়েছেন মৌলানা আবদুল গফুর।
হোছন মেম্বারের ভূমিদস্যুতা, ইয়াবা সংশ্লিষ্টতা এবং মিয়ানমার নাগরিক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে ভোটার করার মতো জঘন্য রাষ্ট্র দ্রোহিতার মতো অভিযোগ রয়েছে । হোছন মেম্বারের যাবতীয় আকাম কুকাম সম্পর্কে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে পর্যায়ক্রমে সিরিজ নিউজ প্রকাশ করা হবে।
সীমান্তবাংলা/ ৩ মে,২০২১