নিজস্ব প্রতিনিধি,উখিয়া :
কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের আশ্রয় ক্যাম্প থেকে ৭ম দফায় ভাসানচরের উদ্দেশ্যে কক্সবাজারের উখিয়া ত্যাগ করেছে ৩৭৮ রোহিঙ্গা। গত বুধবার, ২৪ নভেম্বর সকাল ও বিকালে পৃথক যাত্রায় ১১টি বাসে এবং ২টি কাভারভ্যানে মালামাল সহ চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। সাথে নিরাপত্তা কর্মী পুলিশসহ উখিয়া ডিগ্রি কলেজের মাঠ থেকে ছেড়ে যায়। এ দফায় সকালে ২৬০ জন এবং বিকেলে ১১৮ রোহিঙ্গা ভাসানচরে যেতে স্বেচ্ছায় গেছে। এর আগে ৬ষ্ট দফায় ১৮ হাজার ৫শ রোহিঙ্গা ভাসানচর গেছেন।
সূত্র জানায়, ভাসানচরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে মঙ্গলবার বিকাল থেকে কাপড় চোপড় নিয়ে স্বপরিবারে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে আসে রোহিঙ্গারা। বুধবারও একইভাবে সকালেও আসে। প্রত্যাবাসনের পক্ষে সকল প্রক্রিয়া শেষ করে ১১টার দিকে ৭টি বাসে ২৬০ জন ভাসানচরের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রামের পথে রওনা দেয়। বিকেলে ৪টি বাসে আরও ১১৮ জন রোহিঙ্গা রওয়ানা করে।
জানাগেছে, পুর্ব থেকেই নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় ভাসানচরে যাবার প্রস্তুতি রয়েছে। কক্সবাজার ত্রাণ ও শরণার্থী প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) শাহ রেজওয়ান হায়াত জানান, ৭ম দফায় ৩৭৮
রোহিঙ্গা উখিয়া থেকে ভাসানচরের উদ্দেশ্যে বুধবার রওনা দিয়েছে। রাতে তাদের চট্টগ্রাম ট্রানজিট ঘাটে অবস্থান করে বৃহস্পতিবার সকালে ভাসানচরের উদ্দেশ্যে জাহাজে তোলার প্রস্তুতি রয়েছে।
উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝিরা বলেন, আগের মতো ভাসানচর যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গারা স্ব-স্ব ক্যাম্প ইনচার্জ কার্যালয়ে নাম জমা দেয়। ভাসানচরের পরিবেশ, থাকা খাওয়ার সুবিধা সম্পর্কে জেনে যারা যেতে
রাজি হচ্ছে তাদের নিবন্ধনের মাধ্যমে ভাসানচর যাবার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।
তাদের মতে, আগের মতো তেমন সাড়া মিলছে না। ভাসানচর থেকে পালিয়ে আসা অনেকে বিরূপ প্রচারণা চালিয়েছে। সেখানে বন্দির মতো বসবাস করতে হয় উল্লেখ করে তারা বলেছে, চাইলেই উখিয়া-টেকনাফের
ক্যাম্পের মতো সেখানে যখন-তখন কোথাও যাওয়া যায় না। উখিয়া-টেকনাফে থাকা কোন স্বজন মারা গেলেও
সহজে দেখতে আসতে পারবে না বলায় যাবার জন্য মনস্থির করা অনেক পরিবার আবার চুপসে গেছে।
তবে, রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাসহ সাম্প্র্রতিক সহিংস ঘটনার কারণে আতঙ্কিত উখিয়ার
কুতুপালং ক্যাম্পের লম্বাশিয়া, বালুখালীসহ বিভিন্ন শিবিরের অনেকে ভাসানচরে যেতে রাজি হয়েছে। আগে
অনেক চেষ্টাতেও যারা ভাসানচর যেতে চায়নি তারাও এবার গেছেন, এমনটি দাবি রোহিঙ্গা নেতাদের।
কক্সবাজার-১৪ এপিবিএনের পুলিশ সুপার নাইমুল হক নাইম জানান, বুধবার সকাল-বিকালে রোহিঙ্গাদের
দু’দলে ভাগ করে ভাসানচরের উদ্দেশ্যে উখিয়া ত্যাগ করেছে।
সীমান্তবাংলা/রম/২৫ নভেম্বর ২০২১